উপাচার্য ছাড়াই চলছে ৩৪ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:২৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
দেশের ৩৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চলছে উপাচার্য বিহীন। ৭৪টিতে নেই উপ-উপাচার্য। আর ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয় চলছে কোষাধ্যক্ষ ছাড়াই। শিক্ষাবিদরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ শূণ্য রেখে কোন বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। এতে ব্যাহত হতে পারে শিক্ষা কার্যক্রম, অনিয়ম দেখা দিতে পারে আর্থিক খাতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ। কিন্তু দেশের ১০৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৪টিতে নেই উপাচার্য, ৭৪টিতে উপ-উপাচার্য এবং ৩৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য রয়েছে কোষাধ্যক্ষের পদ।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ইউজিসির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য নেই- আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটি, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন এবং ইউনাইটেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ ৩৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
উপ-উপাচার্য নেই ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, অতীশ দীপংকর, উত্তরা, আশা, বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটি, সেন্ট্রাল উইমেনস, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট, সিটি, দি মিলেনিয়াম, ইস্টার্ন, ভিক্টোরিয়া, রয়েল, প্রেসিডেন্সিসহ ৭৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণ করেন কোষাধ্যক্ষরা। কিন্তু নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইস্ট, সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সেন্ট্রাল উইমেন্স, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন, ইউনাইটেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ ৩৯টিতে নেই কোষাধ্যক্ষ।
আবার উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ কোনোটাই নেই সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, সিটি, ভিক্টোরিয়া, পিপলস এবং প্রেসিডেন্সীসহ ২০টি বিশবিদ্যালয়ে।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে একুশের টিম যায় সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ শূণ্য রেখে শিক্ষাক্রম পরিচালনার বিষয়টি অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “শিক্ষার স্বাভাবিক গুণগত মান নিশ্চিত করা, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনায়ন- সকল ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো খুবই জরুরি। এধরনের শীর্ষ পদে লোকবল না থাকাটা অস্বাভাবিক বিষয়।”
ইউজিসি বলছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার পদে অযোগ্যদের নামের সমন্বয়ে প্যানেল প্রস্তাব করে থাকে। ফলে যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়ে কারো কারো নাম। দেখা দেয় জটিলতা, শুরু হয় দীর্ঘসূত্রিতা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, “যোগ্য একজনের নাম দিচ্ছেন, যাকে তারা চান। আর দু’জনের আইনানুযায়ী যোগ্যতা নেই তাদেরও নাম দিচ্ছেন। তখন প্যানেল ফেরত যায়, তাতে সময় ক্ষেপন হয়। এমনও আছে যিনি পাঠাচ্ছেন তিনিই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বা কিছু। তিনি নিজেকে উপাচার্য হিসেবে নাম দিয়ে পাঠাচ্ছেন।”
কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত ভিসি, প্রো-ভিসি এবং ট্রেজারার দিয়ে পরিচালিত করছে। যা আইনের পরিপন্থি, বলছে ইউজিসি।
ইউজিসি সদস্য বলেন, “ভারপ্রাপ্ত বলে কোনো পদ নাই। ভারপ্রাপ্ত যেটা সেটা আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করতে পারেন। বা আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর ট্রেজারের দায়িত্ব পালন করতে পারেন। কিন্তু যিনি আচার্য কর্তৃক নিযুক্তই নন তিনি কিভাবে ভারপ্রাপ্ত হন।”
খেয়াল-খুশিমত নামের প্যানেল পাঠানো এবং গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে নিয়োগ নিয়ে যারা খামখেয়ালি করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ইউজিসি।
এএইচ