ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

এএমআর হতে পারে বিশ্বব্যাপী বড় সমস্যা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৭, ২৩ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৬:৪৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

Ekushey Television Ltd.

সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা যায়, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ১২ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এইডস কিংবা ম্যালেরিয়াতে প্রতিবছরে যা মৃত্যু ঘটে তার চেয়ে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে মৃত্যু সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন বলে জানাচ্ছে গবেষণার ফলাফল।

গবেষণা বলছে, দরিদ্র দেশগুলোতে সংক্রমণ পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। তবে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সবার স্বাস্থ্যের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।

এর থেকে রক্ষা পেতে হলে ওষুধ নিয়ে গবেষণায় আরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে এবং বর্তমান যেসব অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে তা প্রয়োগে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে বলে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ছোটখাটো অসুখে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার প্রয়োগের ফলে মারাত্মক অসুখবিসুখের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা অনেকখানি কমে যায়। আগে সাধারণ অসুখে পড়ে সুস্থ হতো এমন সব রোগে এখন মানুষ মারা যাচ্ছে।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্ট (এএমআর) এখন এক গোপন মহামারিতে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছে, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে এখনই সতর্ক না হলে কোভিড মহামারির অবসানের পর এটাই বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে।

এএমআর-এর কারণে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর ওপর গবেষণার এই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেটে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ২০৪টি দেশে এই গবেষণা চালান।

ওই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে সরাসরি এএমআর-এর কারণে বিভিন্ন রোগে মৃত্যু হয়েছে ১২ লাখ লোকের। এর বাইরে, আরও ৫০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এএমআর-এর সাথে সম্পর্কিত নানা অসুখে। একই বছর এইডস-এ মারা গেছে আট লাখ ৬০ হাজার মানুষ। আর ম্যালেরিয়ায় মারা গেছে ছয় লাখ ৪০ হাজার জন।

এএমআর-এ মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে নিউমোনিয়ার মতো লোয়ার রেসপিরেটরি সংক্রমণ এবং রক্তের সংক্রমণকে, যেখান থেকে পরে সেপসিস হয়।

এমআরএসএ (মেথিসিলিন রেজিস্টান্ট স্টেফাইলোকক্কাস অরিউস) ব্যাকটেরিয়াকে এই গবেষণায় বিশেষভাবে প্রাণঘাতী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি সহ ইকোলাই এবং আরও কয়েকটি ব্যাকটেরিয়াও ওষুধ-প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করেছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিভিন্ন দেশের হাসপাতাল এবং রোগীদের থেকে নেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশুরা। এএমআর-এ মৃত্যু হয়েছে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একটি হচ্ছে শিশু , যাদের বয়স পাঁচের নীচে।

গবেষণা হতে পাওয়া তথ্যের অন্যতম দুটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হলো –
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া এবং সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোতে। এই অঞ্চলে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে মারা গেছে ২৪ জন। সবচেয়ে কম মৃত্যু ঘটেছে বেশি আয়ের দেশগুলোতে। সেখানে প্রতি এক লাখের মধ্যে মারা গেছে ১৩ জন।

ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের অধ্যাপক ক্রিস মারে বলছেন, এই গবেষণায় সারা বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব কমে যাওয়ার প্রকৃত চিত্রটি ফুটে উঠেছে।

তিনি আরো বলেন,  "আমরা যদি এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে চাই তাহলে যে এখনই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, গবেষণা থেকে তার পরিষ্কার ইংগিতই পাওয়া যাচ্ছে।" 

সূত্র: বিবিসি 

আরএমএ/আরকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি