একজনের রক্তে রক্ষা ২৪ লাখ জীবন
প্রকাশিত : ১৪:২৮, ১৩ মে ২০১৮ | আপডেট: ১০:৪৩, ১৪ মে ২০১৮
জেমস ক্রিস্টোফার হ্যারিসন, যিনি ডাক্তার না হয়েও বাঁচিয়েছেন হাজার মানুষের জীবন। জন্ম তার সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে।
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই দূর্ঘটনার কারণে অস্ত্রোপাচারের টেবিলে যেতে হয়েছিলো হ্যারিসনকে। অপর একজনের রক্তে জীবন বেঁচেছিলো তার। তাকে প্রায় ১৩ লিটার রক্ত দিতে হয়। সার্জারির পরে তাকে প্রায় ৩ মাস হাসপাতালে থাকতে হয়। সেই সময়ে তিনি শপথ করেন যে তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন অন্যকে রক্ত দিয়ে যাবেন।
অস্ট্রেলয়ায় তিনি ‘সোনালি বাহুর মানব’বলে পরিচিত। বয়স বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় গত শুক্রবার শেষবারের মতো রক্ত দিয়েছেন ৮১ বছর বয়সী হ্যারিসন।
জানা যায়, ১৮ বছর বয়স থেকে তার রক্তদান শুরু। কয়েক বার রক্তদানের পর ডাক্তাররা আশ্চর্যজনক ভাবে আবিষ্কার করেন যে তার রক্তে বিরল এক প্রকার এন্টিবডি আছে যা `রিসাস ডিজিস` নামে একপ্রকার প্রাণঘাতী রক্তরোগের বিরুদ্ধে মারাত্মক রকম কার্যকর। এই আবিষ্কার বিজ্ঞান মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আর এই আবিষ্কারের মাধ্যমে নবজাতকদের এই রক্তরোগের হাত রক্ষার জন্য প্রতিষেধক তৈরি করা হয় যা হাজারো নবজাতকের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
এরপর থেকে তিনি নিয়মিত প্রতি ২ সপ্তাহ অন্তর রক্তদান করা শুরু করেন। তার রক্ত থেকে যে এন্টিবডি তৈরি করা হয়েছে তা থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪ লাখ নবজাতকের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তিনি ১০০০ (এক হাজার) এর বেশি বার রক্তদান করেছেন। `গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস` অনু্যায়ী সবচেয়ে বেশিবার রক্তদানকারী ব্যক্তি।
মানবসেবায় অবদানের জন্য তাকে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরষ্কার `মেডেল অব দ্যা অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ায়` ভূষিত করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ান রেডক্রস ব্লাড সার্ভিসের জেমা ফাকেনমায়ারের মতে, হ্যারিসনের রক্ত বেশি মূল্যবান। কারণ তার রক্ত থেকে জীবন বাঁচানো ওষুধ উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। ১৯৬৭ সাল থেকে ৩০ লাখের বেশি গর্ভবতী নারীকে অ্যান্টি-ডি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ৮১ বছরের বেশি বয়সে রক্ত দেওয়া নিষেধ বলে থেকে যেতে হয়েছে হ্যারিসনকে।
সূত্র: সিএনএন
একে// এআর