ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের প্রতিরোধ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৫১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ২২:৫৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফিজের প্রেসিডেন্ট শাহসুফি মাওলানা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেছেন, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের প্রতিরোধ। এ দেশের আউলিয়ায়ে কেরাম ও সূফি দর্বেশগণ জালিম পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মজলুম মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মাইজভাণ্ডার শরীফে লাল সবুজের পতাকা উড্ডীন ছিল। 

তৎকালীন মাইজভাণ্ডার শরীফের সাজ্জাদানশীন, শায়খুল ইসলাম, হযরত সাইয়্যিদ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী (ক.) মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আশ্রয়, খাবার ও আর্থিক সহায়তাসহ নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। তিনি যে মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অবদান রেখেছিলেন; এই কথা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, এম.এ.হান্নান, এম.এ.মান্নান ও এম.আর.ছিদ্দিকীর জীবদ্দশায় অনেকবার বিভিন্ন সেমিনার ও সমাবেশে বলেছিলেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় এক শ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ী নামধারী আলেম মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জালিমের পক্ষ অবলম্বন করেছিল। 

স্বাধীনতার ৫০ বছরের পরে এসেও এই অপশক্তি থেমে নেই। তারা ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে হবে। ১৬ ডিসেম্বর বুধবার মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার আয়োজনে শামসুল উলামা শাহসুফি আল্লামা সাইয়্যিদ আবুল বশর মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর বার্ষিক ওরশ শরীফ উপলক্ষে খলিফা সম্মেলন, বিজয় দিবসের আলোচনা ও আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার কেন্দ্রীয় পরিষদের বর্ধিত সভায় সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। 

সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী আরো বলেন, সূফি আউলিয়ায়ে কেরামগণ সব সময় সত্যের পথে আপসহীন থাকেন। তারাই এদেশে মানুষে মানুষে ভালবাসা ও শান্তি-সম্প্রীতির বীজ বপন করেছেন। তাঁদেরই একজন হুযুর গাউছুল আ’যম সাইয়্যিদ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী (ক.) এর সুযোগ্য উত্তরসূরী, গাউসে জামান হযরত সাইয়্যিদ আবুল বশর মাইজভাণ্ডারী (ক.)। যিনি তরিকায়ে মাইজভাণ্ডারীয়ার তাত্ত্বিক দর্শন তুলে ধরে এবং এর স্বরূপ উন্মোচনে বক্তব্য ও লেখনীর মাধ্যমে অসাধারণ কীর্তির স্বাক্ষর রেখেগেছেন। তিনি বলেন, মাইজভাণ্ডার দরবার সর্বস্তরের মানুষের মিলনকেন্দ্র ও জননন্দিত আধ্যাত্মিক পীঠস্থান। এ দরবারের যারা খলিফা ও খাদেম তাঁরা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যবান। তাঁরাই মাইজভাণ্ডারী দর্শনকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো প্রসারিত ও ত্বরান্বিত করতে পারেন। 

খলিফাবৃন্দকে তাই জ্ঞান, চরিত্র ও আদর্শিকভাবে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ ও শ্রেয়তর হতে হবে। তাঁরা এমনভাবে সাদামাটা নির্মোহ, নির্লোভ জীবন যাপনে অভ্যস্ত হবেন, তাঁদের দেখে যাতে অন্যরা অনুপ্রেরণা লাভ করতে পারেন। তৃণমূলে এবং সর্বপর্যায়ে মাইজভাণ্ডারী দর্শন প্রচারে ও জনকল্যাণে দরবারের দায়িত্বশীল খলিফাবৃন্দকে ত্যাগের স্বাক্ষর রাখতে হবে। নিতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক, সাংগঠনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক নানা পদক্ষেপ। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হযরত সাইয়্যিদ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ্জাদা সাইয়্যিদ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, শাহ্জাদা সাইয়্যিদ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী মাইজভাণ্ডারী, ট্রাস্টের মহাসচিব খলিফা কাজী মহসিন চৌধুরী। 

আন্জুমান প্রচার সম্পাদক খলিফা মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরীর সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন আন্জুমান-এ-রাহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া’র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব কবির চৌধুরী, সহ-প্রচার সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া মাইজভাণ্ডারী, মুফতি বাকি বিল্লাহ আল আযহারী, পীরাজাদ মাওলানা শেখসাদি আবদুল্লাহ সাধকপুরী, মুফতি মাকসুদুর রহমান, মাওলানা বাকের আনসারী, মাওলানা হাছান মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা নঈম উদ্দিন, খলিফা আবদুল মান্নান, মইনীয়া যুব ফোরাম সাধারণ সম্পাদক খলিফা মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন, ইউএই আজমান আন্জুমান সভাপতি খলিফা আবদুল কুদ্দুস, খলিফা মাওলানা মনির হোসেন প্রমুখ। 

পরিশেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদের আত্মার মাগফেরাত ও দেশবাসীর শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন, হযরত শাহ্সূফি সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি