এখনই গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়
প্রকাশিত : ১১:৫৪, ৪ জুলাই ২০২৩
অনেক দিন ধরে ভাবছেন, বাড়ির সামনে গাছ লাগালে কেমন হয়! আবার একটা ছাদবাগানও করার ইচ্ছা। তেমন ইচ্ছা থাকলে এখনই চারা সংগ্রহ করে রোপণ করুন।
কারণ জুন-জুলাই মাস হচ্ছে চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। এ সময় আলো-বাতাস, বৃষ্টি পর্যাপ্ত থাকে বলে চারাও সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে। বাগান তৈরির আগে তাই প্রথমেই মানসম্মত চারা সংগ্রহ করুন।
ভালো চারা ও সংগ্রহের স্থান
চারা রোপণের আগে আদর্শ ও মানসম্মত চারা নির্বাচন করা জরুরি।
যারা নার্সারি করেন তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে চারা সংগ্রহ করুন। আদর্শ চারার বৈশিষ্ট্য হলো কাণ্ড মোটা, খাটো এবং মূলের বৃদ্ধি সুষম হতে হবে। তা ছাড়া সঠিক বয়সের এবং রোগমুক্ত, সতেজ ও সুস্থ-সবল চারা সংগ্রহ করতে হবে। বিশ্বস্ত সরকারি বা বেসরকারি নার্সারি থেকে চারা কিনতে হবে।
ঢাকায় দুই শর মতো নার্সারি রয়েছে। তবে রাজধানীর আগারগাঁও নার্সারি মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী, আগারগাঁওয়ের পাসপোর্ট অফিস থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৪০টি নার্সারি আছে। ফুল, ফল, সৌন্দর্যবর্ধনকারী লতা-গুল্ম, ওষধি বৃক্ষ, বনসাইসহ এখানে পাওয়া যায় টব, কীটনাশক, জৈব সার, মাটি, উপকরণসহ গাছের পরিচর্যাবিষয়ক বই।
চারা রোপণের স্থান
আলো-বাতাস যেখানে কম পড়ে সেখানে ভালো মানের চারা লাগালেও অনেক সময় ভালো ফলন পাওয়া যায় না। তাই রোপণের সঠিক স্থান বাছাই চারার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
বাড়ির দক্ষিণ পাশে কম ঝোপালো গাছ লাগাতে হবে। যাতে করে দক্ষিণের বাতাস ঘরে আসতে পারে। সুপারি, নারকেল, নিম, দেবদারু, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, জাম্বুরা, ডালিম, মেহেদিগাছের চারা লাগানো যেতে পারে। আবার মাঝারি ও উঁচু ঝোপালো গাছ বাড়ির পূর্ব-পশ্চিমে লাগাতে হবে। এতে সকাল-সন্ধ্যায় বাড়ির আঙিনায় আলো থাকবে। আম্রপালি, লিচু, খেজুর, ডালিম, কলা, আতা, বেল, পেয়ারাসহ বিভিন্ন গাছ লাগানো যায়। তবে বসতবাড়ির উত্তর পাশে বড় ও উঁচু গাছপালা থাকলে ঝড়-তুফান প্রতিরোধ হয়। এখানে আম, কাঁঠাল, জাম, কামরাঙা, মেহগনি, শিশু, সেগুন, হরীতকী, আকাশমণি, বাঁশ ইত্যাদি গাছ রোপণ করা যায়।
চারা লাগানোর পদ্ধতি
সকাল কিংবা বিকেল চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। কিন্তু চারা লাগানোর আগে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। চারা লাগানোর আগে রোগাক্রান্ত ও অতিরিক্ত শিকড় ছেঁটে দিতে হবে। এরপর সবল ও সোজা অর্থাৎ আদর্শ চারা নির্বাচন করতে হবে। চারায় সংযুক্ত পলিব্যাগ সাবধানে ফেলতে হবে, যাতে চারার গোড়ার মাটির চাকা ভেঙে গুঁড়ি গুঁড়ি হয়ে না যায়। চারার গোড়ার চারপাশে কোঁকড়ানো ও আঁকাবাঁকা শিকড় কেটে ফেলতে হবে। তারপর চারার গোড়ার মাটির চাকাসহ চারাটি গর্তে আস্তে আস্তে আলতো করে সযত্নে বসিয়ে দিতে হবে।
বীজতলায় চারাটির যতটুকু অংশ মাটির নিচে ছিল, রোপণের সময় ঠিক ততটুকু মাটির নিচে রাখতে হবে। তারপর চারার চারপাশে ফাঁকা জায়গায় প্রথমে ওপরের উর্বর মাটি এবং পরে নিচের মাটি দিয়ে ভালোভাবে পূরণ করে দিতে হবে। চারপাশের মাটি ভালোভাবে শক্ত করে চেপে ঠেসে দিতে হবে, যাতে কোনো ফাঁকা জায়গা না থাকে। চারায় খুঁটি দিতে হবে, যেন ঝড় কিংবা বাতাসে হেলে না যায়। তবে বর্ষার একদম শুরুতে চারা রোপণ না করাই ভালো। কারণ বৃষ্টির পানিতে প্রথম দিকে এক রকমের গরম গ্যাস মাটি থেকে নির্গত হয়, যা চারার জন্য ক্ষতিকর। তাই বর্ষা শুরু হওয়ার কয়েক দিন পর চারা লাগাতে হবে। যেকোনো দরকারে সবচেয়ে ভালো হয় বিশেষজ্ঞের মতামত নিলে।
ছাদবাগান
অনেকে বাসার ছাদ এমনভাবে তৈরি করে নেন, যেন বাগান করতে সুবিধা হয়। নিজের বাসা হলে তো নিজের ইচ্ছামতো সাজিয়ে নেওয়া সম্ভব। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পানি দেওয়া ও ভালো নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এমএম//