ওমিক্রন ডেল্টার মতই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে
প্রকাশিত : ১৭:৫০, ২৩ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৭:৫৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২২
করোনাভাইরাসের আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ক্রমেই ডেল্টার মতই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাই সবাইকে আরও বেশি সতর্ক হয়ে চলাফেরার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “কমিউনিটি পর্যায়ে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ ঘটছে। তাছাড়া প্রথম দিকে না হলেও ক্রমে ওমিক্রন একটু একটু করে ডেল্টার জায়গা দখল করে ফেলছে।”
অধ্যাপক নাজমুল বলেন, “বর্তমানে শীতকালীন যে সর্দি, জ্বর হচ্ছে তার সঙ্গে ওমিক্রনের অনেক মিল রয়েছে। ওমিক্রনের উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, নাক দিয়ে পানি ঝরা। বর্তমানে শতকরা ৭৩ শতাংশ মানুষের নাক দিয়ে পানি ঝরছে। ৬৮ শতাংশের মাথা ব্যথা করছে। ৬৪ শতাংশ অবসন্ন এবং ক্লান্ত ভাব অনুভব করছেন। ৭ শতাংশ রোগী নিয়মিত হাঁচি দিচ্ছেন। কাশের পাশাপাশি গলাব্যথা হচ্ছে ৭ শতাংশ রোগীর। ৪০ শতাংশ রোগীর কাশি হচ্ছে। এই উপসর্গগুলোর সঙ্গে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের অনেক মিল রয়েছে বলে এগুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরার পরও কারো শরীরে উল্লেখিত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বর্তমানে যে হারে রোগী বাড়ছে, এভাবে রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে থাকলে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। তাই এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার জন্য আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেন, “প্রথম দিকে ওমিক্রনকে খুব স্বাভাবিক দেখা হয়েছে। মনে করা হয়েছে, দ্রুততম সময়ে এটি কেবল সংক্রমণ বাড়ালেও তেমন ক্ষতিকারক হবে না। কিন্তু ক্রমান্বয়ে দেখা যাচ্ছে, এই ভ্যারিয়েন্ট (ওমিক্রন) ডেল্টার মতো মানুষের শরীরে নানান জটিলতার সৃষ্টি করছে।”
তিনি আরও বলেন, “গলা ব্যথা, শুকনো কাশ, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা শুরু হলে, ঘাবড়ে না গিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর সর্বক্ষণ মাস্ক পরার পাশাপাশি জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, সাধারণত শীতের কারণে ডিসেম্বরের শেষ থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। গত ২২ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ২৮ শতাংশের বেশি হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি যেটা ছিল ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
হাসপাতালে ক্রমে রোগীর ভর্তি বাড়ছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “গত ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারিতে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও। এটি আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য অ্যালার্মিং। তাই ওমিক্রন বা করোনা কোনটিকেই হেলাফেলা করা যাবে না। সবাইকে সতর্ক ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।”
আরকে//