বিসিএসে বাংলার প্রস্তুতি
‘কঠিন বিষয়গুলো মনে রাখুন ছন্দের তালে’
প্রকাশিত : ১৯:৪৩, ২০ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৮:১১, ২১ নভেম্বর ২০১৭
কদিন পরেই ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। দেশের প্রায় তিন লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত চাকরির আশায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন এ পরীক্ষায়। এ সময়ে নিশ্চয়ই ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছেন বিসিএস প্রত্যাশী বন্ধুরা। বিসিএসে বাংলা বিষয় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এ বিষয়ে রয়েছে ৩৫ নম্বর। একটু সতর্ক হয়ে প্রস্তুতি নিলে এ বিষয়ে ভালো নম্বর তোলা যায়। কিভাবে এ স্বল্প সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে পারেন- এ বিষয়ে ইটিভি অনলাইনের মাধ্যমে পাঠকদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ৩৬তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার মাসুদুর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেছেন। মাসুদুর রহমান মনে করেন, বাংলায় কিছু কিছু টপিক জটিল। সেগুলো মনে রাখাও কঠিন। তাই সেগুলো মনে রাখতে ছন্দ বানিয়ে নিতে পারেন। মাসুদুর রহমানের টিপসগুলো পাঠকদের উদ্দেশে তোলে ধরা হলো-
বাংলা হতে পারে প্রিলিমিনারিতে টিকে থাকার অন্যতম মাধ্যম। বাংলা বিষয় দুটি ভাগে বিভক্ত। ভাষা (১৫) এবং সাহিত্য (২০)। ভাষা অংশের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে প্রথম কাজ হলো- বিগত সালে বিসিএস পরীক্ষার আসা প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। হাতের কাছে খাতা রাখতে হবে। যে টপিকগুলো কঠিন মনে হয় এবং বারবার পরীক্ষায় এসেছে সেগুলো খাতায় লিখে রাখতে হবে। পরে ব্যাকরণ বই থেকে ওই বিষয়গুলো ভালো করে বুঝে পড়তে হবে।
ভাষা অংশের জন্য সবচেয়ে সহায়ক বই হলো নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইটি। এই বইটি থেকে নিয়মের পাশাপাশি উদাহরণগুলো ভালো করে পড়তে হবে। গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণগুলো খাতায় লিখে রাখতে হবে। যাতে করে পরে নোট হিসেবে কাজে লাগানো যায়। কারণ বিভিন্ন নিয়মের চেয়ে উদাহরণ থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি।
এছাড়া ড. সৌমিত্র শেখরের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বইটি ভালো করে পড়তে পারেন।
ব্যাকরণের কিছু অংশ থেকে প্রায় প্রতিটি পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে। যেমন- শব্দের শ্রেণি বিভাগ, বানান, বাক্য, সন্ধি, সমাস, বিপরীত শব্দ, উপসর্গ, প্রবাদ-প্রবচন, বাগধারা। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে। এর মধ্যে যেগুলো ব্যতিক্রম এবং বিশেষ নিয়মে সিদ্ধ সেগুলো বেশি মনে রাখতে হবে। বিভিন্ন গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিজের মত করে বিভিন্ন ছন্দ বানিয়ে মনে রাখতে হবে।
সাহিত্য অংশের প্রস্তুতি নেওয়া তুলনামূলক কঠিন। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে কোনো সহজ প্রশ্ন ভুল করা যাবে না। এখানে অনেক কবি-লেখক রয়েছে। তাদের লেখাও প্রচুর। তবে বারবার পড়লে অনেক তথ্য মনে থেকে যাবে। ফলে পরীক্ষার হলে যদি সরাসরি উত্তর মনে না থাকে তবে অন্য অপশন দেখে উত্তর মনে আসতে পারে।
আবার সব লেখকের সব লেখা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই একটু বেছে বেছে পড়া যেতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিকরা হলেন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমান, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধূসুদন দত্ত, জসীমউদদীন, সুফিয়া কামাল, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ।
এই সাহিত্যিকদের লেখার সংখ্যা প্রচুর। তাই এগুলো মনে রাখার জন্য নিজের মত করে ছন্দ বা গল্প তৈরি করে নিতে হবে। যাতে করে মনে রাখা যায়। তবে কিছু কিছু সাহিত্যিকের অনেকগুলো লেখার মধ্যে একটি বা দুটি লেখা বেশি পরিচিত।
সেক্ষেত্রে ওই লেখাটি ভালো করে মনে রাখতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে সব সাহিত্য রচিত হয়েছে সেগুলো মনে রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বইগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশের জন্য ড. সোমিত্র শেখরের বইটির পাশাপাশি ডাইজেস্ট ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিশেষ সংখ্যাটি পড়া যেতে পারে। তবে পরীক্ষার আগে অবশ্যই জব সল্যুশন বইটি একবার পড়ে রাখা ভালো।
এসব দিক মাথায় রেখে শেষ সময়ে গুছিয়ে প্রস্তুতি নিলে আশা করি প্রিলিমিনারিতে ভালো করতে পারবেন বন্ধুরা।
লেখক : ৩৬ তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার
ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক।
এসএইচ/ এআর
আরও পড়ুন