করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮৩
প্রকাশিত : ০৮:৫৫, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে দীর্ঘ হয়েই চলেছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে একদিনে মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর মিছিলে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আর ১১৬ জন।
মরণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৮৩ জনে। অপরদিকে, নতুন করে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪ হাজার ৮২৩ জনের দেহে সংক্রমণটির সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়ালো।
আজ শুক্রবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগের বরাত দিয়ে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
তবে প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে বলা হচ্ছে, চীনের এ নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সরকার কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যের কয়েকগুণ। যা সরকারের পক্ষ থেকে গোপন করা হচ্ছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশটির করোনায় আক্রান্তদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া, গুলি করে হত্যার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে এর সত্যতা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
চলমান পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে গত মঙ্গল ও বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের অন্তত ৪০০ বিজ্ঞানী নিয়ে সভা করেছে। সেখান থেকে কাঙ্খিত দিক নির্দেশনা আসবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে প্রতিষেধক তৈরি হতে অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুরু হওয়া এ মরণঘাতী ভাইরাসে এখন পর্যন্ত চীনের বাহিরে ফিলিপাইন ও হংকংয়ে একজন করে মারা গেছেন। এছাড়াও দেশটিতে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানি এক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশে চলতি মাসের প্রথমদিকে চীন ফেরত ৩১২ জনকে আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তারা আগামিকাল শনিবার নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আক্রান্ত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের মুখের লালা ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাদের কারো শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়নি।
এদিকে গত বুধবার চীন ফেরত আরও একজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগেও চীন ফেরত দুইজনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে কারো শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে সিঙ্গাপুরে আরও দুই বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
এর আগেও সিঙ্গাপুরে থাকা দুই বাংলাদেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। যার ফলে এখন দেশটিতে করোনাক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪ জনে।
এদিকে, সাগর পথে চীন থেকে বাংলাদেশে আসা ১৭ চীনা নাগরিককে গত বুধবার উড়োজাহাজে বেইজিংয়ে পাঠানো হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের লালবেগ উপকূল থেকে তাদের মাইক্রোবাসে করে এনে চট্টগ্রাম হযরত শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিয়ে বিশেষ একটি জাহাজে তাদের পাঠানো হয়। থাইল্যান্ড হয়ে তারা নিজ দেশে পৌঁছাবেন বলে জানা গেছে। গত ২০ জানুয়ারি একটি জাহাজে সীতাকুণ্ড উপকূলে ওই চীনারা আসলে তাদের বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করা ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামক প্রমোদতরীতে। বিলাসবহুল ওই নৌযান তিন হাজার ৭০০ যাত্রী নিয়ে এখন কোয়ারেন্টাইনে। বুধবার পর্যন্ত সেখানে থাকা ১৭৫ জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২১৭ জনে পৌঁছেছে।
এআই/