কর্মকর্তাদের দুর্ভোগ কমাতে ব্র্যাক ব্যাংক এর উদ্যোগ
প্রকাশিত : ২৩:২৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
নগর জীবনের শত অনুযোগ-দুর্যোগের সাথে, প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়াটা আরও একটা বাড়তি দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তার বিষয় নয় কি? দিনের ব্যস্ত সময়গুলোতে যানবাহনের চাপে ঢাকার প্রধান সড়কগুলোয় প্রায় নিথর হয়ে থাকে। তাপমাত্রা যদি ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে দাঁড়ায়, তখন রীতিমতো ভয়াবহ হয়ে ওঠে যাতায়াতের পথে থাকা শহরবাসীর অবস্থা। অনেক ধাক্কাধাক্কির ঝুঁকির পরে গণপরিবহনের ভেতর এক চিলতে জায়গা যদি পেয়েও থাকেন, সেখানেও থাকে পাশের জনের সুস্থতা-সহ নানান নাগরিক সচেতনতার অভাব, আর সব রকম উদ্বেগেই আরো চড়ে পরিস্থিতির উত্তাপ। সব মিলিয়ে মহানগরে এই চলাচল আমাদের বিরাট এক বিপন্নতার বিষয় বটে!
দিনে ১০ মাইলের বেশি রাস্তা পারাপারের কঠিন কাজটি স্বাস্থ্যের ওপর ভীষণ বাজে প্রভাব ফেলে, এমনকি পারফরম্যান্সের উৎসাহ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। যাই হোক, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো স্মার্ট আর দরদি হলে তারা নিজেদের স্টাফদের যাতায়াতের দুর্ভোগ কমানোর উদ্যোগ নেয়।
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড ভর্তুকি দিয়ে শাটল সার্ভিস দিচ্ছে প্রধান কার্যালয়ের স্টাফদের অফিসে আসা-যাওয়ার জন্য, যাদের অধিকাংশই নারী। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আটটি আধুনিক কোস্টারের বহর রবি থেকে বৃহস্পতিবার স্টাফ পরিবহন করছে শহরের বিভিন্ন রুটে। মিরপুর থেকে উত্তরা, মোহম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, বনশ্রী, আজিমপুর অথবা ধানমন্ডি যেখানেই হোক, বাস তাদেরকে পিক-আপ আর ড্রপ-অফ দুই ক্ষেত্রেই সুবিধা দিয়ে সকাল-সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে উন্মত্ত ছোটাছুটির সংকট বেশ খানিকটা কমিয়ে দিচ্ছে। তার ওপর দু’দিকের যাতায়াতই এভাবে একসাথে হওয়ার সুবাদে সবার অফিস শুরু-শেষ দু’টোই সময়মতো হয় এবং কর্মকর্তাদের অফিস আর ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যও নিশ্চিত হয়, যা কিনা তাদের কর্মক্ষমতা ও সন্তুষ্টির অন্যতম মূল সূত্র।
এই সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান বিলকিস জাহান বলেন “ব্র্যাক ব্যাংকে আমরা বিশ্বাস করি, কর্মকর্তারাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। কর্মকর্তাদের চাপ কমাতে এবং অনুকুল কর্মপরিবেশের সৃষ্টির জন্য যা কিছু করা যায় তার সবই করার চেষ্টা করে থাকি। আমাদের সাম্প্রতিক সাফল্যেরও কেন্দ্রে কাজ করেছে ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির প্রেক্ষাপটে অন্যদের থেকেও বরং কিছু বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়া-সহ মানবসম্পদ খাতে বিনিয়োগ। আমাদের দৃঢ় প্রত্যাশা, কর্মকর্তাদের যাতায়াতের এই কার্যক্রম তাদের প্রতিদিনের চলার অভিজ্ঞতাকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করার মাধ্যমে আরো ভালোভাবে কাজে মনোযোগ দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের দেশের শ্রেষ্ঠ ব্যাংক হয়ে ওঠার যাত্রায় তাদের অর্থবহ অবদান আনার ক্ষেত্রেও আরো কার্যকর ভ‚মিকা রাখবে। ইতিমধ্যেই এই সুবিধাটিকে আরো বিস্তৃত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, এবং কিছুদিনের মধ্যেই সেটি বাস্তবায়িত হবে বলেও আশা করা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যেহেতু নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠান হিসেবেও পছন্দের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসতে চাই, সে লক্ষ্যেও আমরা কাজের চমৎকার সংস্কৃতি আর পরিবেশ দেয়ার ক্ষেত্রে কাজ করছি, যেন ব্যাংকিং খাতের মেধাবীরা আমাদের সাথে কাজ করতে আসেন এবং সেরা কর্মকর্তারা দীর্ঘ ধরে কোম্পানিতে চাকুরি করেন এবং প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখেন।”
কর্মকর্তাদের কল্যাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এমপ্লয়িদের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি এবং ডাক্তারের পরামর্শের সুবিধা-সহ নিয়মিত মেডিক্যাল সেন্টার, ডে কেয়ার, ক্যান্টিন এবং নামাজের ঘরের ব্যবস্থাও রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকে।
এছাড়া, নারী স্টাফদের দক্ষতা ও পেশাগত উন্নয়নের লক্ষ্যে রয়েছে ‘তারা’ নামের একটি নারী ফোরাম। জেন্ডার এবং যৌন হয়রানি বিষয়ক সচেতনতার উদ্দেশ্যে সকল কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণও পরিচালিত হয়। সকল সুযোগসুবিধা-সহ ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতে পারেন ব্র্যাক ব্যাংকের নারী কর্মকর্তারা। এমনকি, সবল কর্মকর্তার জন্য রয়েছে পলিসি অনুযায়ী ভাতা-সহ আবশ্যিক বাৎসরিক ছুটির ব্যবস্থা।
কেআই/
আরও পড়ুন