ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

কলারোয়ায় ৫শ বছরের প্রাচীনতম বটগাছ

প্রকাশিত : ১১:৪১, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১১:৪৮, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ও যুগীখালী ইউনিয়নের গা ঘেসা দলুইপুর বৃহত্তম বাওড়ের উপরে অবস্থিত প্রাচীন আমল থেকে বহুল প্রচলিত স্থান ক্ষুনকারতলার বটগাছ। 

যার পেছনে রয়েছে সুন্দর ও বিরাট ইতিহাস। ঠিক তখন থেকে ক্ষুনকারতলার বটগাছটি একটা কুসংস্কার স্থানে পরিনত হয়।

সেটা আসলে কেউ সুনির্দিষ্ট ভাবে বলতে পারে না। তবে এই বটগাছ টির নিচে পুজারীরা প্রাচীন আমল থেকে উপাসনা, দান সদকার স্থান। যা সেখানকার সহজ সরল মানুষেরা এ কাগগুলি করে এসেছেন। সে সময় সকল ধর্মাবলম্বী মানুষেরাও বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য নিয়ে মানতের নামে হাজির হত ওই স্থানে।

বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের আগমন বেশি ঘটত ওই বট বৃক্ষের নিচে। কুসংস্কার ব্যপক প্রভাব পড়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের উপরও সে সময়। যদিও এখন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ কোনো ধর্মের মানুষের আগমন এখানে দেখা যায় না।

ওই এলাকার এক কৃষক জানান- অর্ধমৃত বটগাছটিতে বসবাস করত জ্বীন ভুতসহ বিভৎস ভীতকর অন্যান্য প্রাণী। ভিড়তে পারত না কোনো মানুষ ওই স্থানে। বর্তমান সময়ে ঐ স্থানটিতে মানুষেরই বসবাস। একেবারেই মৃত নয় গাছটি, তবে ইতিপূর্বের ব্যবহৃতের তুলনায় অকেজো।

আকারেও ছিল তার ব্যপকতা। কিন্তু পুনরায় আংশিক দন্ডায়মান গাছটিতে দেখা দিয়েছে কচি কচি পাতা এবং পড়ে আছে গাছের উপর কিছু পুরাতন মরা ডাল। এই স্থানটিতে সে সময় কোন মানুষ দিনের বেলায়ও যেতে ভয় পেত। আর এখন সেখানে তৈরী হয়েছে বসতবাড়িসহ চাষাবাদ করছে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষেরা। বর্তমানে সেই বটগাছটির এলাকা জুড়ে বসবাস করছে ১৫/২০টির বেশি পরিবার। অবশ্যই সেখানে তৈরি হয়েছে একটা পাড়া-মহাল্লা ও পাশে ছোট একটি বাজার।

যেটি বর্তমানে কলারোয়া উপজেলার তালুদিয়া ও গড়গড়িয়া বাজার নামে পরিচিত আছে। সেখানে স্থানীয়দের ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে ছোট একটা ঈদগাহ। যেটি বট বৃক্ষের গোড়ায় তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় মুরুব্বি ও বয়জোষ্ঠরা সাংবাদিকদের জানান-মানুষেরা ভয় পেত সেখানে যেতে, ঠিক সেই মানুষেরা ভয়কে জয় করে বসবাস শুরু করেছে ঐ ভয়ানক স্থানে। সেখানে এখন তারা বসবাসসহ চাষাবাদ শুরু করেছে। পরিস্থান করেছে জ্বীন-ভুত ও পরীসহ ভিতকর জীব জন্তু।

তারা আরো জানান-শুনেছেন প্রাচীন আমলে ঘনকোয়াশাযুক্ত বাগান ছিল ওখানে। সে সময় মানুষের অজান্তেই বাগানের ভিতর বড় হল প্রাকৃতিক নিয়মে একটি বটগাছ। ধিরে ধিরে বটগাছটি এমন আকৃতি ধারন করল যে কেউ গাছটি দেখে আশ্চর্য হত। হঠাৎ কোন এক সময় সন্ন্যাসী-গুনিঠাকুর-ঋষি কিংবা এলাকার মানুষের ভাষায় ক্ষুনকার নামের মাথা ভরা জটওয়ালা বয়োজোষ্ঠের আবির্ভাব ঘটে সেখানে। ওই বটগাছটির গোড়ায় জটওয়ালা বয়োজোষ্ঠ সেখানে আরাধনা করেন।

যাকে গাছ পুজারী বলে ধারণা করছে অনেকেই। লোকটি ছিল অন্য কোন ধর্মাবলম্বীর। হিন্দু কিংবা খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী হতে পারে। সঠিক ভাবে কেই কিছু বলতে পারে না। অবশ্য তখন হিন্দু খ্রিষ্টান সকল ধর্মাবলম্বী গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ দান সদকা, মানত করতে মেতে উঠত। যেটা ধারনকৃত ছবিতে কিছু ফুটে উঠেছে ক্ষুনকারতলার কথায়। তবে ক্ষুনকারতলার স্থানটি আংশিক সরকারি জমির উপরে এখনও রয়ে গেছে। যেটা আজ নতুন প্রজন্মের কাছে শুধুই ইতিহাস আর ইতিহাস।

টিআর/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি