কাতারের সঙ্গে সৌদির সংলাপ বাতিল
প্রকাশিত : ১০:১৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:৫৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
কাতারের সঙ্গে সৌদি সরকারের সংলাপ বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৩মাস ধরে কাতার ও সৌদি জোটের ৪টি দেশের সাথে চলমান সংকট নিরসনের সম্ভাবনাও তাই কমে গেল অনেকখানি। শুক্রবার কাতারের আমির ও সৌদি যুবরাজের মধ্যকার টেলিফোন আলাপের পরেই সৌদি সরকার দেশটির সঙ্গে ‘সংলাপের সিদ্ধান্ত’ থেকে সরে আসে। কূটনৈতিক প্রটৌকল জটিলতায় এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
শুক্রবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর জোটের সঙ্গে গত জুন থেকে চলমান কাতারের সংকটের পর এটিই ছিল দোহা ও রিয়াদের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক সংলাপ।
কাতার ও সৌদি আরবের সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, দুই নেতাই সংকটা নিরসনে আলোচনার টেবিলে বসতে সম্মত হয়। কিন্তু ফোনালাপের পরেই কাতারের বার্তা সংস্থা কাতার নিউজ এজেন্সী (কিউএনএ) এ প্রকাশিত একটি বার্তার সূত্র ধরে কাতারের সাথে আলোচনা স্থগিত করে সৌদি সরকার। কাতারের সেই সংবাদ সংস্থায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে ফোন কলটি করা হয় এবং তিনি এটি সমন্বয় করেন। এতেই চটে যায় রিয়াদ। রিয়াদের দাবি, ফোন কলটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট করেননি বরং করেছেন কাতারের আমির।
কাতার ও উপসাগরীয় জোটের মধ্যেকার সংকট নিরসনে যখন দুই দেশের মধ্যেকার এই “ফোন সংলাপ”কে একটি কার্যকর উদ্যোগ বলে মনে হচ্ছিল তখন ঘটনার এমন মোড় পরিস্থিতিকে আরও ঘোলা করছে। ফোনালাপের পর সৌদি বার্তা সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, কাতারের সঙ্গে আলাপকালে সৌদি সরকারের তরফ থেকে সংকট নিরসনে সৌদির ‘সদিচ্ছা’র কথা জানানো হয়। জোটের অন্য শরিক দেশ মিশর, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে আলাপ শেষে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানায় বার্তা সংস্থাটি। কিন্তু দ্বিতীয় আরেক বিবৃতিতে সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি জানায়, ফোনালাপে কূটনৈতিক প্রোটকল জনিত সমস্যা ছিল। এতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। যতক্ষণ না কাতার সরকার জনসমক্ষে এ বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলবে তাঁর আগে কাতারের সাথে সব ধরনের সংলাপ স্থগিত করেছে সৌদি সরকার।
ওয়াশিংটনে আল জাজিজার প্রতিনিধি কিম্বারলি হালকেট বলেন, “উপসাগরীয় সমস্যার সমাধানে হোয়াইট হাউজ বেশ আশাবাদি ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ফোনালাপকে বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখেছিল হোয়াইট হাউস। তবে সৌদি সরকারের মতে, ফোন কলটি করা হয়েছিল কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে, ট্রাম্পের উদ্যোগে নয়। কাতারের সরকারি বার্তা সংস্থা যথাযত ‘কুটনৈতিক প্রটৌকল’ উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি রিয়াদের। এমন পরিস্থিতে কাতারকে জনসমক্ষে তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে বলে দাবি সৌদি সরকারের।
উল্লেখ্য, গত ৫জুন ইরানের প্রতি সমর্থন এবং সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে কাতারের সাথে সবধরনের কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন মিশর, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের জোট। সেসাথে দেশগুলোর আকাশ ও সমুদ্র সীমা ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত ২২জুন জোটের পক্ষ থেকে কাতারকে ১৩ দফা শর্ত দেয়া হয়ে যার মধ্যে বার্তা সংস্থা আল জাজিরা বন্ধের শর্তও ছিল। তবে এগুলোকে কাতারের স্বাধীনতা ও সার্বভৌত্বের ওপর ‘হস্তক্ষেপ’ বলে নাকচ করে দেয় দোহা।
সূত্রঃ আল জাজিরা
//এস এইচ//এআর
আরও পড়ুন