ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

কার্ল মার্ক্স: কতটা সত্যি হয়েছে তার ভবিষ্যদ্বাণী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৪৭, ৫ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

কার্ল মার্ক্স বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো দুশো বছর। উনিশ শতকের এই দার্শনিক সমাজ এবং পুঁজিবাদ সম্পর্কে যে বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিলেন, সেগুলো কতটা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে? তিনি এবং ফ্রিডরিক এঙ্গেলস মিলে যে কমিউনিস্ট ইশতেহার লিখেছিলেন, সেটিরও বয়স প্রায় ১৭০ বছর। সমাজ এবং পুঁজিবাদ সম্পর্কে নিজের বিখ্যাত তত্ত্বের জন্য মার্ক্সের খ্যাতি বিশ্ব জুড়া।

কিন্তু তার ভবিষ্যদ্বাণীগুলো কি সব সঠিক প্রমাণিত হয়েছে? কি ছিলো জেনে নিন তার বিখ্যাত বাণীগুলো-

১. `কাল্পনিক চাহিদা` তত্ত্ব

মার্ক্স বলেছিলেন পুঁজিবাদ এমন সব জিনিস তৈরি করবে, যা মানুষের দরকার নেই, কিন্তু তারপরেও সে বস্তুর চাহিদা তৈরি হবে। একেই তিনি `কাল্পনিক চাহিদা` বলে নাম দিয়েছিলেন।

যেমন ধরা যাক, ফ্যাশন। চলতি হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে কাপড়-চোপড় পরতে গিয়ে আমরা এমন সব কাপড়-চোপড় ফেলে দিচ্ছি যেগুলো আসলে এখনও ব্যবহার করা যায়।

অথবা স্মার্টফোনের কথাই ধরা যাক । যে স্মার্টফোনটি আপনার হাতে আছে, তার তুলনায় বাজারে আসা নতুনটির তফাৎ খুব সামান্যই। তারপরও ফোন কোম্পানিগুলো বিরামহীন নতুন মডেল উদ্ভাবন করে বাজারে ছাড়ছে এবং সর্বশেষ মডেলের ফোনটির জন্য রীতিমত প্রতিযোগিতা চলছে ভোক্তাদের মধ্যে।

২. `উত্থান এবং পতন` তত্ত্ব

পুঁজিবাদের প্রকৃতিই হচ্ছে এটি `অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি` আর `মন্দা`র মধ্যে ঘুরপাক খায়। সেই অর্থে ২০০৮ সালে বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী মতই হয়েছে।

পুঁজিবাদের পতন সম্পর্কে মার্ক্স আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, লাভের জন্য পুঁজিবাদের যে তীব্র ক্ষুধা, সেজন্য বিশ্বে মানুষের যা প্রয়োজন তার চেয়ে উৎপাদন অনেক বেশি হবে।

শ্রমিকের মজুরি এতই কমবে যে তারা নিজেদের উৎপাদন করা পণ্য কিনতে পারবে না। আর মানুষ পণ্য না কিনলে পুঁজিবাদীরা মুনাফা করবে কিভাবে? যেকারণে পুরো ব্যবস্থা ব্যর্থ ক্রমে হতে শুরু করবে।

৩. `একাধিপত্য`

সাধারণ অর্থে পুঁজিবাদের বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করার কথা। যেমন পাড়ার মাংস ও মাছ বিক্রেতার মত ছোট ব্যবসা পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে।

কিন্তু মার্ক্স বলেছেন, কোম্পানিগুলো এত বড় হতে থাকবে যে তারা নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্রমে গ্রাস করে নেবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

মনে করে দেখুন তো, বড় সুপার মার্কেট চেইন রেখে কে কবে পাড়ার ছোট দোকানটিতে ঢুকেছেন?

৪. `মধ্যবিত্তের সংকোচন`

কার্ল মার্ক্স বলেছেন, পুঁজিবাদের ধরণ অনুযায়ী মুনাফার জন্য বড় ব্যবসায়ীরা কর্মীদের বেতন ও সুবিধাদি কমিয়ে দেয়। এতে মধ্যবিত্ত ক্রমে গরীব হতে থাকে। এর ফলে একটি বড় অংকের নগদ অর্থ অল্প কিছু মানুষের হাতে জমতে থাকে।

আজকের পৃথিবীতে ৩৭০ কোটি মানুষের যা সম্পদ, তার চেয়ে বেশি সম্পদ আছে মাত্র ৪২ জন ধনী মানুষের হাতে। চীন, ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত জনসংখ্যা ৩৭০ কোটি।

৫. বিপ্লব?

কার্ল মার্ক্সের সবচেয়ে বড় তত্ত্ব ছিল পুঁজিবাদ নিজেই নিজের ধ্বংস ডেকে আনবে।

কিন্তু কিভাবে?

তিনি বলছেন, যখন সবাই বুঝতে পারবে যে এই পদ্ধতিতে গলদ আছে, তখন তারা নিজেরাই বিদ্রোহ করে বিপ্লব ঘটাবে।

কিন্তু সেটি এখনো বাস্তবে ঘটেনি। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কমিউনিস্ট আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিপ্লবের অনেক নজির আছে।

এসব বিপ্লব যে ব্যর্থ হয়েছে সেজন্যে কেউ কেউ দুর্নীতিকে দায়ী করে থাকেন। তবে অন্যরা বলেন মার্ক্সের তত্ত্বই আসলে ভুল। সূত্র: বিবিসি

 

আর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি