কাল বিজয় সরকারের ১২০তম জন্মদিন
প্রকাশিত : ১২:৩৩, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
একুশে পদকপ্রাপ্ত চারণকবি বিজয় সরকারের ১২০তম জন্মদিন আগামীকাল।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরশ্রষ্টা কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদরের নিভৃতপল্লী ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি বিজয় সরকার প্রায় দুই হাজার গান লিখে তাতে সুর দিয়েছেন। বিজয় সরকারের প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সংগীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য তিনি ‘সরকার’ উপাধি পান।
বার্ধ্যকজনিত কারণে ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতের হাওড়ার বেলুডে পরলোকগমন করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়। গানের কথা ও সুরের মাঝে বিজয় সরকার আজো বেঁচে আছেন হাজারো মানুষের হৃদয়ে।
বিজয় সরকার লিখেছেন-‘যেমন আছে এই পৃথিবী / তেমনিই ঠিক রবে/ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে...।’ মায়ার বাঁধন ছেড়ে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়ায় এই চিরন্তন উপলদ্ধি আজো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন-‘তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’সহ অসংখ্য গান।
আধ্যত্মিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নবী নামের নৌকা গড়/ আল্লাহ নামের পাল খাটাও/ বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/ কূলের তরী খুলে দাও...।’ কিংবা ‘আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/ সোজা পথে চল...।’ স্ত্রী বীনাপাণির মৃত্যুর খবরে গানের আসরেই গেয়েছেন-‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/ সে আমারে ভুলবে কেমনে...।’
পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ‘নকশি কাথার মাঠ’ কাব্যগ্রন্থের নায়ক-নায়িকা ‘রূপাই’ ও ‘সাজু’র প্রেমকাহিনী নিয়ে বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নকশি কাঁথার মাঠেরে/ সাজুর ব্যাথায় আজো রে বাজে রূপাই মিয়ার বাঁশের বাঁশি...।’ ‘কী সাপে কামড়াইলো আমারে/ ওরে ও সাপুড়িয়ারে/ আ...জ্বলিয়া পুড়িয়া মলেম বিষে...।’
বিজয় সরকারের মৃত্যুর পর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে তার বসতভিটা। এক যুগ আগে ছোট্ট পরিসরে বিজয় সরকারের বসতভিটায় ‘বিজয় মঞ্চ’ নির্মাণ করা হলেও তার স্মৃতিধন্য তেমন কিছুই নেই এখানে। বিজয় সরকারের বসতভিটা, বিজয় মঞ্চ, পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং দর্শনার্থী ও পর্যটকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বিজয়ভক্তরা।
এমএম/