ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

কাস্টমস বন্ড ও নীতি সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:১২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক কাস্টমস, বন্ড ও নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে বন্ড কমিশনারেট ঢাকা ও চট্টগ্রাম, কাস্টম হাউস চট্টগ্রাম ও বেনাপোল, শুল্ক গোয়েন্দা ও বিজিএমইএ প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম সভাটি সম্প্রতি ঢাকা বন্ড কমিশনারেট এর সেগুনবাগিচাস্থ কার্যালয়ে অনিুষ্ঠিত হয়।

যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির আহবায়ক বন্ড কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীর এর সভাপতিত্বে এখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আজিজুর রহমান, কমিশনার, চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট এবং ফখরুল আলম, কমিশনার, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, মোঃ বেলাল হোসেন চৌধুরী, কমিশনার, বেনাপোল কাস্টম হাউস। 
এছাড়াও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নেয়াজুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব (শুল্ক রপ্তানি ও বন্ড) ফাইজুর রহমান সহ শুল্ক বিভাগের আরও অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিজিএমইএ এর প্রেসিডেন্টকে ফুল ও ক্রেষ্ট দিয়ে সম্মাননা প্রদান করেন যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির আহবায়ক বন্ড কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীর। এ সময় তিনি বলেন, একসাথে কাজ করলে এই শিল্পে আরও গতিশীলতা আসবে। আর তাই উভয় পক্ষ যেন একসাথে উদ্যোগ নিতে পারেন, সে লক্ষ্যেই যৌথ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
 
অত্যন্ত সৌহার্দ্যময় পরিবেশে অনুষ্ঠিত সভায় বিজিএমইএ এর সভাপতি ড. রুবানা হক পোশাক শিল্পের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাস্টমস সংক্রান্ত ইস্যু উপস্থাপন করে এগুলোর বিষয়ে বিজিএমইএ এর প্রস্তাবনা বা মতামত পেশ করেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, এসব প্রস্তাবনার মধ্যে অনেকগুলো নিয়েই বোর্ডে কাজ চলছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার এম ফখরুল আলম বলেন, যে পোশাক শিল্পের মধ্যে মাত্র ১-২ শতাংশ  ক্ষেত্রে বন্ডের অপব্যবহার হচ্ছে। সভায় উপস্থিত সকলে এই বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করে বলেন ঐ ১-২ শতাংশকে যেন অন্যদের থেকে আলাদা চোখে দেখা হয় এবং ঐ ১-২ শতাংশ ছাড়া অন্যদেরকে রপ্তানিতে উৎসাহিত করার আহবান জানান। এতে করে রপ্তানি বাণিজ্যে আরো গতি আসবে। একইসাথে বেনাপোল কাস্টম হাউস এর কমিশনার জনাব মোঃ বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, “এই শিল্প যেন সম্মান আর সততার সাথে উৎপাদন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে, সে জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন উভয় পক্ষের সংযোগ”।

সভায় বন্ডের ব্যবহার নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। বিজিএমইএর সভাপতি সভাকে অবহিত করে বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চিহ্নিত বন্ড সুবিধার অপব্যবহারকারী পোশাক কারখানাগুলোকে বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে মতামত প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়। 

এ প্রেক্ষিতে কারখানাগুলো বিজিএমইএ এর স্বপক্ষে মতামত প্রদান করেছেন। মতামত সমূহ পর্যালোচনায় দেখা যায়, সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তি একই ধরনের নয়। এ বিষয় সমূহ বিচার বিশ্লেষন পূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা সমূহ গৃহীত হবে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, প্রয়োজনে চুয়েট এর সহযোগিতা গ্রহন, খ্যাতনামা পিএসআই কোম্পানি সমূহের ল্যাব এর সহযোগিতা গ্রহণের ক্ষেত্র সমূহ কিভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে আরও দ্রুত পণ্য চালান খালাস এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা উভয় পক্ষ আরও বিবেচনা করতে করবেন।

অন্যদিকে যে সকল প্রতিষ্ঠান খোলাবাজারে কাপড় বিক্রি সহ গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত (যা ১-২ শতাংশের বেশী নয়) তাদের বিষয়েও উভয় পক্ষ পারস্পারিক তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে এই প্রবনতা বন্ধের পদক্ষেপ নিতে পারেন। যৌথ ওয়ার্র্কিং গ্রুপ প্রতি ২ মাসে অন্ততঃ একবার এবং বিশেষ ইস্যুতে আরও কম সময়ের ব্যবধানে মিটিং করে চ্যালেঞ্জ সমূহ সমাধানে সচেষ্ট থাকবেন।

সভার সভাপতি এস এম হুমায়ুন কবীর, চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের বরাতে জানান যে, গার্মেন্টসের ইউডি তে সঠিক পরিমান নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে পণ্যের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন যে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তা বিজিএমইএ এর নিজস্ব টিম দিয়ে গোপনে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানান।

এছাড়া ইউডি সংশোধনীর বিষয়টি যেন দ্রুতই সংশ্লিষ্ট সকলে ঙহষরহব এ দেখতে পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ করেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী , যারা কিনা সততার আর সুনামের সাথে ব্যবসা করছে, যারা কিনা কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নন, তাদেরকে রপ্তানি কার্যক্রম সম্পাদনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। উল্লেখ্য সভার সভাপতি জানান গত ২৯/৮/২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রেরিত পত্রের নোটাংশ ৩ এর অনুচ্ছেদ চ এ  ( বেনাপোল কাস্টম হাউস থেকে প্রাপ্ত তথ্য) উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান বিধায় তালিকা থেকে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নামের তালিকা বাতিল করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৃহত্তম আমদানি-রপ্তানি স্টেশনের তথা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এর কমিশনার জনাব এম ফখরুল আলম বিজিএমইএ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে গার্মেন্টস এর কিছু কিছু অপঘোষনার বিষয়ে সরেজমিনে চট্টগ্রাম পরিদর্শনের অনুরোধ করেন।

সভায় বিজিএমইএ এর নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ, সহ-সভাপতি জনাব আরশাদ জামাল (দীপু), পরিচালক বদিউল আলম, পরিচালক নজরুল ইসলাম, পরিচালক অঞ্জন শেখর দাস এবং সদস্য রাফেজ আলম চৌধুরী। সভায় শুল্ক গোয়েন্দা ও বিভিন্ন শুল্ক স্টেশন এর কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

 আরকে/ 

   


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি