ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

কিংবদন্তি অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদারের জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৬, ১৮ জুন ২০২১

মঞ্চ ও টেলিভিশন জগতের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদারের ৭৮তম জন্মদিন আজ। স্বাধীনতা-উত্তরকালে দুই ভুবনে সফলতার সঙ্গে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’-এ হুরমতি চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা লাভ করেন এই কিংবদন্তি।

বরিশালে জন্ম হলেও ফেরদৌসী মজুমদার বেড়ে উঠেছেন ঢাকাতেই। বাবা খান বাহাদুর আবদুল হালিম চৌধুরী ছিলেন ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট। তার ভাইবোন ছিল মোট ১৪ জন। যাদের মধ্যে আটজন ভাই ও ছয়জন বোন। সবার বড় ভাই কবীর চৌধুরী এবং মেজ ভাই শহীদ মুনীর চৌধুরী। দারুল আফিয়া নামের বাড়িতে তার শৈশব কেটেছে। তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল নোয়াখালীতে। ফেরদৌসী মজুমদারের পরিবার ছিল খুব রক্ষণশীল। বাড়িতে সাংস্কৃতিক চর্চা ছিল নিষিদ্ধ। তার লেখাপড়া শুরু হয় নারী শিক্ষা মন্দির স্কুল থেকে। এ স্কুলে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ার পর তিনি ভর্তি হন মুসলিম গার্লস স্কুলে, যেখান থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে ভর্তি হন ইডেন কলেজে। ছোটবেলায় খেলাধুলা করতে পছন্দ করতেন ফেরদৌসী মজুমদার। 

ইডেন কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় ভাই মুনীর চৌধুরী থেকে প্রস্তাব পান একটি নাটকে রোবটের চরিত্রে অভিনয় করার, যার নাম ছিল ‘ডাক্তার আবদুল্লাহর কারখানা’। এটি লিখেছিলেন শওকত ওসমান এবং মঞ্চস্থ হয়েছিল ইকবাল হলে, বর্তমানে যেটি জহুরুল হক হল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ফেরদৌসী মজুমদার পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘দন্ড ও দন্ডধর’ নাটকে অভিনয় করেন শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিপরীতে। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নাটকের ফোরামে জড়িয়ে পড়েন এবং সম্মানী হিসেবে ৭৫ টাকা পান। এ টাকা দিয়ে দামি নেটের মশারি কেনেন তিনি।

মা-বাবার অমতে ১৯৭০ সালের ১৪ মার্চ রামেন্দু মজুমদারকে বিয়ে করেন তিনি। গত বছর দাম্পত্য জীবনের ৫০ বছর পূর্ণ হয় তাদের। বিয়ের অর্ধশততম বছরের প্রথম দিন ফেরদৌসী মজুমদার পরেছিলেন ৫০ বছর আগের একটি শাড়ি। বিয়ের দিন রামেন্দু মজুমদার সেটি কিনে দিয়েছিলেন ২৫০ টাকায়। তাদের একমাত্র মেয়ে ত্রপা মজুমদারও সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত।

১৯৭২ সালে ‘থিয়েটার’ গঠন করা হয়- যেখানে ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন, রামেন্দু মজুমদারসহ অনেকে। ফেরদৌসী মজুমদার সেই দলে যোগ দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রায় ৩০০-এর মতো নাটক করেন তিনি। তার অভিনয় জীবন প্রায় তিন দশকের মতো দীর্ঘ। আবদুল্লাহ আল মামুন ৮৬ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন ফেরদৌসী মজুমদারকে নিয়ে, যার নাম ‘জীবন ও অভিনয়’।

তার অভিনিত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে- কোকিলারা, এখনো ক্রীতদাস, বরফ গলা নদী, জীবিত ও মৃত, বাঁচা, অকুল দরিয়া, সংশপ্তক, চোখের বালি, নিভৃত যতনে, শঙ্খনীল কারাগার, এখনও দুঃসময়, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় অন্যতম।

তিনি মায়ের অধিকার (১৯৯৬), মেঘলা আকাশ (২০০১), দরিয়া পাড়ের দৌলতি (২০০৯) ও ফ্রম বাংলাদেশ (নির্মানাধীন) সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন।

ফেরদৌসী মজুমদার তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক ১৯৯৮, শহিদ আলতাফ মাহমুদ স্মৃতি পদক ২০১৮, স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০ এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২১।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি