ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

কিডনি রোগীরা কি রোজা রাখতে পারবেন

প্রকাশিত : ১৫:০৭, ১০ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৫:১৪, ১০ মে ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

রমজান এমন একটি মাস, যার প্রথম দশক রহমতের দ্বারা পরিপূর্ণ, দ্বিতীয় দশক বরকতে পরিপূর্ণ এবং তৃতীয় দশক জাহান্নামের আজাব থেকে নাজাত ও মুক্তির জন্যে নির্ধারিত।সুতরাং যারা এমন একটি রহমত ও বরকতের মাস পেয়েও রোজা পালন করে সুফল লাভ করতে পারল না, তাদের জন্য দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিইবা থাকে। এমাসে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনকে মানুষের হেদায়াতের জন্য নাযিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন, রোজা আমার জন্য, আমি তার প্রতিদান দিবো। যে কারণে রমজান মাসে প্রতিটা মুসলিম নরনারীর জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন রোগের কারণে অনেকেই রোজা রাখতে পারে না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কিডনি। এবিষয় অনেক ডাক্তারও রোগীদের ভুল পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অনেক রোগী দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন।

কিডনি রোগীর একপর্যায়ে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়। ডায়ালাইসিসের রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন কি না, এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। কারণ হলো ডায়ালাইসিস যখন করা হয়, তখন রোজা ঠিক থাকে না। আরেকটি কথা হলো, ডায়ালাইসিসের রোগীও রোজা রাখতে পারবেন, তবে যেদিন ডায়ালাইসিস করা হবে, সেদিন নয়। তার আগের দিন বা পরের দিন রাখতে পারবেন।

কিডনি ফেইলিউর বা কিডনি বিকল দুই ধরনের হয়।একটিকে বলা হয় হঠাৎ কিডনি ফেইলিউর এবং অপরটি দীর্ঘমেয়াদি কিডনি ফেইলিউর।এই দীর্ঘমেয়াদি কিডনি ফেইলিউরকে ক্রনিক কিডনি রোগ বলা হয়।আর তিন মাসের কম সময় যদি ফেইলিউর থাকে, তাকে হঠাৎ কিডনি ফেইলিউর বা একিউট কিডনি ফেইলিউর বলে।আর দীর্ঘমেয়াদি হলো যেটা তিন মাসের বেশি সময় ধরে থাকে।

কিডনি রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন কি না

রোজার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি ফেইলিউর রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন, তবে তাদের বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।ক্রনিক কিডনি রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত যারা স্টেজ ১, ২ ও ৩ পর্যন্ত তারা মোটামুটি স্বাচ্ছন্দ্যেই রোজা রাখতে পারবেন।তবে ইফতারে প্রচুর পরিমাণে পানি বা লবণজাতীয় খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।সাধারণত ইফতারে আমরা ডালজাতীয় খাবার, যেমন ছোলা, পেঁয়াজু বা বেসন ইত্যাদি খাবার বেশি খেয়ে থাকি, তাই এক্ষেত্রে ডাল বা বিচিজাতীয় খাবারগুলো রোগীকে সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে এবং কিডনির অবস্থা অনুযায়ী খাবারের ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে রোগীর জন্য উপযোগী খাবারগুলো নির্ধারণ করে নিতে হবে। সাধারণত এ ধরনের কিডনি রোগীরা ইফতারিতে দই-চিড়া খেতে পারেন।মুড়ি খাওয়া যেতে পারে। নুডলস খাওয়া যেতে পারে। সেমাই খাওয়া যেতে পারে, এমনকি ভাত বা রুটিও খেতে পারেন।

কিডনি রোগীর একপর্যায়ে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়। ডায়ালাইসিসের রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন কি না, এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে।কারণ হলো ডায়ালাইসিস যখন করা হয়, তখন রোজা ঠিক থাকে না। আরেকটি কথা হলো, ডায়ালাইসিসের রোগীও রোজা রাখতে পারবেন, তবে যেদিন ডায়ালাইসিস করা হবে, সেদিন নয়।তার আগের দিন বা পরের দিন রাখতে পারবেন।তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই খাবারদাবারে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।পানি কতটুকু পান করবেন সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। লবণ বা পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ার বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে এবং রোগীর দেহের যে আমিষের চাহিদা রয়েছে সেটা যেন পূরণ হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।ডায়ালাইসিসের রোগীরা ইফতারিতে ফল আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি খেতে পারবেন। তাছাড়া আমিষের চাহিদা পূরণে প্রতিদিনের খাবারে মাছ, মুরগির মাংস ও ডিম খেতে পারবেন এবং সবজি হিসেবে কাঁকরোল, পেঁপে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, পটোল ইত্যাদি খেতে পারেন। তবে রোগীভেদে কিডনির পথ্য নির্ধারণে কিছুটা ভিন্নতা থাকে। কেননা রক্তে ইলেকট্রোলাইটসের পরিমাণ, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, ইউরিয়া ও ইউরিক এসিডের পরিমাণ, রক্ত ও ইউরিনে এলবুমিনের পরিমাণ এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রাভেদে একজন ডায়ালাইসিস রোগীর জন্য পথ্য নির্ধারণ করতে হয়। সেক্ষেত্রে রোজা রাখতে হলে অবশ্যই একজন ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি।

পুষ্টিবিদ সাজেদা কাশেম
গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টার


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি