কিশোর-কিশোরীর ইন্টারনেট আসক্তি থেকে বাঁচার উপায়
প্রকাশিত : ১৪:০৬, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৭:১৯, ২৫ এপ্রিল ২০১৮
নেশা নানা রকমের হতে পারে ৷ বিশ্বে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের পক্ষে আজ সবচেয়ে বড় ‘অ্যাডিকশন` হলো কম্পিউটার-স্মার্টফোন-অনলাইন-ইন্টারনেটের নেশা৷ কিন্তু এই নেশা থেকে বাঁচার উপায়ও আছে৷
এই নেশায় আসক্তদের একজন হলেন জার্মানের এরিক। তার নেশা ছিল ‘সকেন` অর্থাৎ জার্মানে যাকে বলে কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত ভিডিও গেম, চ্যাটিং, সারাক্ষণ অনলাইন থাকা ইত্যাদি৷ এক কথায়, বার্লিনের ২০ বছরের এই তরুণটি ছিল ইন্টারনেট আসক্ত। তার সারা জীবনটা জুড়ে ছিল কম্পিউটার আর স্মার্টফোন৷
এরিক জানান, আমার রেকর্ড হলো একবারও না থেমে বিশ ঘণ্টা ইন্টারনেটে থাকা৷ বাথরুমে যাওয়ার জন্য যেটুকু সময় যেত, সেই সময়টা কম্পিউটারের বাইরে থাকত। তবে খাওয়াদাওয়া সব কম্পিউটারের সামনে৷ সকালে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকে। আসলে প্রায় পরদিন সকাল অবধি৷
এক বছর স্কুল, বন্ধুবান্ধব, সামরিক সেবা সব ছেড়ে দেয় সে। কেননা তার আর ওসবের জন্য সময় ছিল না৷ তার দিন কাটত সাইবার জগতে৷
তখনই আমি ভাবলাম যে, আমার সাহায্য দরকার, নিজেকে বদলানো দরকার; নয়তো আমি গোল্লায় যাব৷
প্রথমে এরিক নিজেই চেষ্টা করেছে কম্পিউটার বাক্সবন্দি করে। পরে এরিক খেয়াল করে শুধু এসব করে হবে না৷ তখন সে একটা কাউন্সেলিং সেন্টারে যায়৷
মুক্তির পথ: বাড়িতে মায়ের সঙ্গে খালি চেঁচামেচি। এজন্য আমি খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ছেড়ে গেছি। ১৫ বছর বয়স থেকে একা বাসা নিয়ে থেকেছি৷ স্কুলেও আগে সবাই আমাকে ঠাট্টা করত, জ্বালাত আমার পক্ষে যা প্রায় অসহ্য ছিল৷ তারপর যখন বাড়িতে আসতাম, তখন কম্পিউটারটা যেন আমার জন্য অপেক্ষা করত: গেমস খেলতে শুরু করলেই সমস্ত খারাপ চিন্তা, ভালো লাগা না-লাগা, সব যেন ঢাকা পড়ে যেত৷ সেটাই তখন অভ্যেস হয়ে দাঁড়ায়৷
এরিক ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্ত হতে চায়, তাই সে একটি ক্লিনিকে দু`মাস ধরে থেকে থেরাপি করছে। অন্যান্য রোগীদের সঙ্গে তো বটেই, আবার একক থেরাপিও চলে৷ এখন সে অনেক ভালো বোধ করছে৷
এখন বেশ অদ্ভুত লাগে৷ আগের তুলনায় মনে হয় যেন আমার কিছু একটা নেই৷ তার ধারনা তার ভেতরের ঐ তাড়নাটা আর অত নেই। মন ভালো করার জন্য কম্পিউটার, স্মার্টফোন, অনলাইন আর অত জরুরি নয়৷
ইতিমধ্যে এরিক অ্যানালগ ও রিয়্যাল টাইমে সময় কাটাতে শিখেছে। এখন সে কম্পিউটারের সামনে বসে থাকার চেয়ে খেলাধুলা করে৷ তার একটা নতুন শখ তৈরি হয়েছে। এখন সে নিজেই কমিক আঁকে, এই পন্থায় তার চাপা পড়া আবেগ-অনুভূতিগুলো একটা নতুন অভিব্যক্তি পায়৷
কম্পিউটার, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ছাড়া বেঁচে থাকা সহজ নয়, বিশেষ করে যখন সে প্রলোভন সর্বত্র৷ সেই হিসেবে এরিককে এখনও ‘ক্লিন` বলা চলে না! সূত্র: ডিডব্লিউ
আর / এআর