কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্সকে ধর্ষণ করে হত্যা: আটক ২
প্রকাশিত : ১৬:৫৪, ৭ মে ২০১৯ | আপডেট: ২০:২৫, ৭ মে ২০১৯
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে শাহিনুর আক্তার উরুফে তানিয়া (২৪) নামে এক নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণকারীরা তাকে হত্যার পর কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
কটিয়াদীতে থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহিনুর কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। তিনি ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে নার্স পদে চাকরি করেন।
জানা যায়, শাহিনুর আক্তার উরুফে তানিয়া সোমবার বিকালে তিনি এয়ারপোর্ট কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়ে স্বর্ণলতা পরিবহনে উঠেন। বাসটি মহাখালী-থেকে কটিয়াদী হয়ে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চলাচল করে। শাহিনুর বিকালে বাসে উঠার পর থেকে তার পিতা এবং ভাইদের সাথে মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কথা হয়। রাত ৮টার দিকে তিনি মঠখোলা বাজার অতিক্রম করার সময় আবারও তার বাবার সাথে কথা হয়। তখন তিনি জানান, আধা ঘন্টার মধ্যে বাড়ি পৌঁছতে পারবেন।
সাড়ে আটটার দিকে বাসটি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে তখনো তার ভাইয়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়, বলেন আর মাত্র পাঁচ-সাত মিনিট লাগবে পিরিজপুর পৌছতে। কিন্তু কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে বাসের সমস্ত যাত্রী নেমে যায়। এ সময় গাড়ির ড্রাইভার এবং হেলপার কৌশলে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড থেকে তার সাথের চার-পাঁচজনকে যাত্রীবেশে গাড়িতে তোলেন।
কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড পার হয়ে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী ভৈবর-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলীর নিরব একটি জায়গায় পৌঁছলে এসময় শাহিনুরকে জোরপূর্বক চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ করে এবং গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে বলে স্বজনরা ধারণা করছেন। তার মৃত্যুর পর ধর্ষণকারীরা রাত পৌনে এগারটার দিকে কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে দুর্ঘটনা কথা বলে লাশ ফেলে রেখে যায়।
হাসপাতাল রেজিস্ট্রার সূত্রে লাশ আনয়নকারীর নাম পাওয়া যায় আল আমিন, পিতা ওয়াহিদুজ্জামান, গ্রাম ভেঙ্গারদি, কাপাসিয়া, গাজীপুর। এদিকে পাঁচ মিনিটের কথা বলে দীর্ঘ সময় সে পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ডে স্বর্ণলতা বাসটি না পৌঁছলে তার ভাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে গভীর রাতে সংবাদ পায় শাহিনুরের লাশ কটিয়াদী হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে রাখা হয়েছে।
কটিয়াদীতে থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ড্রাইভার নূরুজ্জামান (৩৯), হেলপার লালন মিয়াকে (৩৩) আটক করা হয়েছে। শাহিনুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ব্যাগ, কাপড় চোপড় পাওয়া গেছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে বিস্তারিত প্রতিবেদন চাওয়া হবে। তবে তার হাত, মুখ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন