কীভাবে পৃথিবীর দখল নিলো এই মুরগি
প্রকাশিত : ২৩:৪৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮
লন্ডনে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক খননের সময় খুঁজে পাওয়া মুরগির হাড় নিয়ে গবেষণার পর বলা হচ্ছে, এখনকার মুরগি তাদের আদি প্রজাতির চেয়ে একবারে ভিন্ন।
পৃথিবীতে যে কোনো একটি সময়ে জীবন্ত মুরগির সংখ্যা ২৩০০ কোটি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কীভাবে আমাদের পরিবেশ বদলে যাচ্ছে, মুরগি তার একটি প্রতীক। প্রাণীজগতে বিবর্তন ঘটে কম-বেশি ১০ লাখ বছর ধরে। কিন্তু মুরগির ক্ষেত্রে এই বিবর্তন হয়েছে অনেক কম সময়ে।
জঙ্গলে মুরগি দিনে দিনে কমেছে, কিন্তু সেই সাথে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে দোকানে মুরগির সরবরাহ।
ব্রিটেনের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. ক্যারিজ বেনেট বলছেন, মুরগির যে সংখ্যা বৃদ্ধি, সেটা বিশ্বের অন্য যে কোনো প্রজাতির পাখির ক্ষেত্রে কল্পনাও করা যাবেনা।
"বলতে পারেন, আমরা মুরগির দুনিয়ায় বসবাস করছি।"
বিশ্বের মুরগির তুলনামূলক সংখ্যা যে কত বেশি, কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে তা বোঝা যেতে পারে :
-২০১৪ সালে বিশ্বে প্রায় ৬,৬০০ কোটি মুরগি জবাই করা হয়েছে। সে তুলনায় মাংসের জন্য শুকর জবাই হয়েছে ১৫০ কোটি, গরু-মহিষ-ভেড়া জবাই হয়েছে ৩০ কোটি।
-বিশ্বে ফ্রাইড চিকেন অর্থাৎ ভাজা মুরগির দোকান রয়েছে ২৫,৫০০।
-পাঁচ থেকে সাত সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা থেকে মাংসের জন্য উপযোগী ব্রয়লার মুরগি তৈরি হচেছ খামারে।
-দু’শ বছর আগেও বিশ্বে যেখানে ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি কবুতর ছিল, এখন তা কমতে কমতে নিঃশেষ হওয়ার পথে।
ড. বেনেট বলছেন, অনেক পরে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যখন প্রত্নতাত্ত্বিক খোঁড়াখুঁড়ি করবে, তখন মাটির নীচে তারা হয়তবা "টিনের ক্যান, কাঁচের বোতল, প্লাস্টিকের টুকরো খুঁজে পাবে। সেই সাথে পাবে মুরগির হাড্ডি।"
আট হাজার বছরে জঙ্গল থেকে ঘরে
বর্তমানের গৃহপালিত মুরগি লাল বন মুরগির বংশধর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ট্রপিক্যাল বা উষ্ণমন্ডলীয় জঙ্গলে বিচরণ ছিল এই লাল মুরগির।
আট হাজার বছর আগে ঐ বন মুরগির প্রজাতিকে বশ মানিয়ে গৃহপালিত পাখিতে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তারপর দ্রুতগতিতে তা ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবী জুড়ে। ব্যবহৃত হতে থাকে মাংস এবং ডিমের জন্য।
পঞ্চাশের দশকে কৃত্রিমভাবে মুরগির আকৃতি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই থেকে ওজনে ও আকৃতিতে মুরগির অবিশ্বাস্য পরিবর্তন হয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসি