কুমিল্লার মাধাইয়া বাজারের আগুনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলে প্রচার
প্রকাশিত : ১২:২৬, ১ জানুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১২:২৮, ১ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৯ ডিসেম্বর (২০২৪) দিবাগত রাতে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা নয় বরং চুলার আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত যাওয়া ৭২টি দোকানের মধ্যে ছয়টি দোকানের মালিক সনাতন ধর্মালম্বী।
অনুসন্ধানের মূল ধারার গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে গত ৩০ ডিসেম্বর “যানজটই কাল হয়েছে মাধাইয়া বাজারের, আগুনে পুড়েছে শতাধিক দোকান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুই ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, দুই ঘণ্টার আগুনে প্রায় ৪৩টি কক্ষ পুড়েছে। এসব কক্ষের ভেতরে একের অধিক দোকান রয়েছে। সেই হিসেবে শতাধিক দোকান হতে পারে। এতে প্রাথমিক ক্ষতি ৪৩ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লার চান্দিনা স্টেশন অফিসার অনয় ঘোষ বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, মিষ্টির দোকানের চুলার আগুন থেকে আগুন ছড়িয়েছে। তবে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ দাহ্য পদার্থ। বিশেষ করে ওই এলাকাটায় বেশি কাঠের পাটাতন ছিল। এ ছাড়াও পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে এনটিভি, যমুনা টিভি এবং বাংলানিউজ২৪। বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির তৈরি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের তালিকা সংগ্রহ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি কে এম জামাল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান সাক্ষরিত তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৭২টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি দোকান সনাতন ধর্মালম্বীদের মালিকানার। ৬টি দোকান হলো- ডা. শ্রিনাথের মর্ডান ফার্মেসী, ডা. শান্তি রঞ্জন রায়ের উপন্দে হোমিও হল, ডা. পলাশের আদিত্য ফার্মেসী, চিত্ব রঞ্জন সরকারের লন্ড্রি দোকান, নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথের লন্ড্রি দোকান এবং চন্দন সরকারের জুতার দোকান।
পরবর্তীতে মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি কে এম জামালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, আগুনের সূত্রপাত মোঃ ছালামের মিষ্টির দোকান ছালাম মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে। এখানে কয়েকটি দোকান সনাতন ধর্মালম্বীদের ছিল।
সুতরাং, চুলা থেকে কুমিল্লায় বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হামলা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এএইচ