ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

কুলাউড়া সীমান্তে ঢুকে বাংলাদেশীকে হত্যা, ফের উত্তেজনা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:১৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তের জিরো লাইনে জমির বিরোধ নিয়ে দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষে এক বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

রোববার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে রোববার ইউনিয়নের মুরইছড়া সীমান্তের দশটেকি (নতুন বস্তি) এওলাছড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই বাংলাদেশী নাগরিকের নাম আহাদ আলী (৪৫)। তিনি ওই ইউনিয়নের মুরইছড়া নতুন বস্তির এওলাছড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে।

কর্মদা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম জানান, তাদের ইউনিয়নের বৃহৎ একটি অংশ সীমান্ত ঘেষা। সীমান্তে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে অনেকের জমি রয়েছে। যেগুলোতে তারা কৃষি কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অনুরূপভাবে সীমান্ত এলাকায় নো-ম্যান্স ল্যান্ডে ভারতীয় নাগরিকরাও কৃষি কাজ করেন। 

তিনি আরও জানান, এওলাছড়ার আহাদ নো-ম্যান্স ল্যান্ডে কৃষিকাজ করছিল। তার ওই কৃষি জমি নিয়ে দ্বন্দে ভারতের এক নাগরিক ধারালো অস্ত্রদিয়ে তাকে কুপিয়ে আহত করে। আহতবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউয়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে বিজিবির সাথে যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে না জেনে মন্তব্য করা যাবেনা বলে জানান।

তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং জানান, তিনি জানতে পেরেছেন সীমান্ত পিলার ১০৮৩-এর ৩৪ এস-এর পাঁচ গজ ভেতরে বাংলাদেশে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে শীঘ্রই পতাকা বৈঠকে কৈফত চাওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কর্মদা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মাহমুদা আক্তার জানান, ঘটনাটি তার এলাকায়ই হয়েছে। তিনি এলাকাবাসীর কাছ থেকে শুনেছেন ভারতের হয়দার আলী নামে এক নাগরিকের সাথে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয় পরে হায়দর আলী তাকে কুপিয়ে জখম করে। সিলেটে হাসপাতালে নেয়ার পর আহাদ মারা যায়। 

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল মর্গে রয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উল্লেখ্য, এর আগে চলমান মাসের প্রথম সপ্তাহে একই সীমান্তের দশটেকির আলী নগরে বাংলাদেশর সাধারণ নাগরিক ও ভারতের বিএসএফের মধ্যে বিতণ্ডার ঘটনা ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। আর সে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন এক বিজিবি জোয়ান।

ওই স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করলে বাংলাদেশী নাগরিকরা তাদের ধাওয়া করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে বিজিবির এক সদস্য (নায়েক নুরুল ইসলাম) উত্তেজিত বাংলাদেশী নাগরিকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা বিএসএফের বন্ধুক ধরে টানাটানি করেন। 

ওই বিজিবি জোয়ান জনতাকে বুঝিয়ে সরিয়ে নেন এবং বিএসএফ সদস্যকে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে ফিরিয়ে দেন।

কর্মদা ইউনিয়নের আব্দুর রহমান বলেন, বিজিবির ওই সদস্য যদি ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করতেন তাহলে এখানে রক্তক্ষয়ী ঘটনার অবতারণা হতে পারতো। এতে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তো এবং দুই দেশের সর্ম্পকের অবনতি ঘটতো।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি