কৃষিপণ্য রপ্তানি আরও গতিশীল করার উদ্যোগ
প্রকাশিত : ১০:১৯, ৩০ জুলাই ২০২৪
কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের বড় সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, দেশের কৃষি-প্রধান অঞ্চলেগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হলে উৎপাদিত পণ্যের যথাযথ দাম পাবেন কৃষকরা। বাড়বে কৃষিপণ্যের রপ্তানিও। এ খাতে সহায়তার কথা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, কৃষিপণ্য রপ্তানি আরও গতিশীল করতে কার্গো বিমান কিনবে সরকার।
দেশের বেশিরভাগ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবন-জীবিকা ও কর্মসংস্থানের অন্যতম প্রধান উৎস কৃষি। শুধু খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাই নয়, মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতেও কৃষির অবদান ব্যাপক।
কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম। যেখানে দেশের শ্রমশক্তির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়োজিত। বর্তমানে দেশে অন্তত ৪৮৬টির কৃষি প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মধ্যে ২৪১টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করে এবং ২৩৫টি অভ্যন্তরীণ বাজারে কৃষিপণের চাহিদা মেটায়। এই শিল্পে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদীসহ যে সব এলাকায় কৃষি উৎপাদন বেশি হয়, সেসব অঞ্চলে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, “সারাদেশে যদি এগ্রো প্রসেস ইন্ডাস্ট্রিগুলো ছড়ানো হতো তাহলে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ইন্ডাস্ট্রির কাছে চলে যেতে পারতো। তাতে করে কৃষক তার পণ্যের প্রকৃত মূল্যটা পেতো।”
তবে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার ধরতে ভারত ও পাকিস্তানের সাথে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অর্জনে জরুরি বলছেন তারা। এক্ষেত্রে রপ্তানিকারকরা বন্ড সুবিধার দাবি জানান।
ইলিয়াছ মৃধা বলেন, “এটা নতুন ইন্ডাস্ট্রি, যেরকমভাবে অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতে ট্যাক্স হলি-ডে দেওয়া হয়েছে সেটা যদি এখানে দেওয়া হয় তাহলে একজন নতুন উদ্যোগতা এই সেক্টরে বিনিয়োগ করবেন।”
প্রান্তিক এলাকায় কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তুলতে সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, “এগ্রো প্রসেস ইন্ডাস্ট্রিগুলোর জন্য আমাদের এসএমই ও ইএফের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রকল্প আছে।”
কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের অগ্রগতিতে নীতিসহায়তা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, কৃষিপণ্য যাতে দ্রুত সময়ে রপ্তানি করা যায়, সেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, “যারা এক্সপোর্টার তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি, তাদের যেসব সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ করে সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন এয়ার শীপমেমেন্টে। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, কার্গো বিমান কিনবেন। যখন আমাদের নিজস্ব কার্গো বিমান থাকবে তখন পচনশীল পণ্যগুলো বিভিন্ন জায়গায় দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে পারবো।”
কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্য, থাইল্যান্ড এবং আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সাথে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বিষয়ে আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে বলে জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের আমাদের বড় মার্কেট। ইতিমধ্যে কাতারের সঙ্গে কথা হয়েছে, কিভাবে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে শিপিং লাইন চালু করতে পারি।”
এএইচ
আরও পড়ুন