ক্রমশ বাড়ছে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:২৯, ১ অক্টোবর ২০২৩
গড় আয়ু বাড়ার কারণে বাড়ছে প্রবীণ জনগোষ্ঠির সংখ্যাও। দেশে বর্তমানে ১ কোটি ৫৩ লাখের বেশি প্রবীণ ব্যক্তি রয়েছেন। ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা পৌঁছাতে পারে সাড়ে ৪ কোটিতে। বিপুল এই জনগোষ্ঠির বড় অংশই সাধারণত কর্মহীন জীবন যাপন করেন। যে কারণে দ্রুত অসুস্থও হয়ে পড়েন তারা। অথচ প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো গেলে তা হতে পারে দেশ ও সমাজ গঠনের এক সহায়ক শক্তি।
সাল ১৯২১, মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ২০ বছর। ১০০ বছর পর ২০২৩ সালে এসে গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৩ বছরে। এর পেছনে কাজ করেছে যুদ্ধবিগ্রহ-মহামারি কমে যাওয়া, চিকিৎসা বিজ্ঞান, খাদ্য নিরাপত্তা, রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
মানুষের গড় আয়ু বাড়ার কারণে ষাটোর্ধ্ব বা প্রবীণ মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। জরিপ বলছে, ২০০১ সালে দেশে মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ ছিলেন প্রবীণ জনগোষ্ঠী। ২০২২ সালে এ হার বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ২৮ শতাংশে। বর্তমানে দেশে প্রবীণ ব্যক্তির সংখ্যা ১ কোটি ৫৩ লাখের বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে প্রবীণ ব্যক্তির সংখ্যা হতে পারে সাড়ে ৪ কোটি। ওই সময়ের মোট জনসংখ্যার হিসেবে তা হবে প্রায় ২২ শতাংশ।
বিপুল এ জনসংখ্যার সিংহভাগই সাধারণত কর্মহীন সময় কাটান। অথচ তাদের ঝুলিতে রয়েছে নানা মূল্যবান অভিজ্ঞতা। নবীনদের জন্য যা হতে পারে দিক নির্দেশনার অনুষঙ্গ।
সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সামির মোহাম্মদ আজাদ বলেন, “রিটায়ারমেন্ট পিপলদেরকে কর্মক্ষম করার কোনো স্কোপ তৈরি করা হয়নি আমাদের দেশে। এটা যদি হতো তাহলে তারা অবসর ভাবতোনা।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, “বিনিময়টা হওয়া দরকার, অভিজ্ঞতা তারা নিলে বা নতুনরা যেটা জানেনা প্রবীণদের কাছ থেকে জানলে অবশ্যই দেশের জন্য উপকার হবে।”
চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর কর্মহীন জীবনযাপন, আর্থিক দুঃশ্চিন্তা মানুষেকে দ্রুত বুড়িয়ে তোলে। শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ-ব্যাধি। সম্মানীর বিনিময়ে বয়োজোষ্ঠ্য নাগরিকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া হলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারের টপলেবেলে যারা আছেন, অবসরে গেলেও তারা এক জায়গায় না এক জায়গায় রিপ্লেস হয়ে যাচ্ছেন। তার পরের লেবেলটাকে সরকার আর টেককেয়ার করছেনা।”
প্রবীণদের কর্মক্ষম রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা ও চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজন নানা কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক এ বি এম আব্দুস সালাম বলেন, “৬৫ বছরের পরে সে যদি একটা পরিকল্পিত জীবনধারায় চলে তাহলে অনেক দিন দুঃস্থভাবে জাতি-দেশ ও মানুষের জন্য কল্যাণ করে যেতে পারবে।”
শরীরচর্চা প্রশিক্ষক খন্দকার আব্দুল মোমিন বলেন, “অবসরে গেলে আরও বেশি মুভমেন্ট বাড়াতে হবে। হাঁটাহাটি করা, বাজারে হেঁটে যাওয়া, শরীরচর্চা করা, যোগব্যায়াম- এগুলো করলে তার সবকিছু পরিপূর্ণ থাকবে।”
অবসরের পর অলস জীবন নয়, বরং প্রাণবন্ত ও কর্মচঞ্চল থেকে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে সমাজ ও দেশকে ঋদ্ধ করবেন আমাদের অগ্রজরা, তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে সমাজ।
এএইচ