ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেনে সহনশীলতা
প্রকাশিত : ২২:৪৯, ৩১ মার্চ ২০১৯
ইসলাম্ একটি পরিপূর্ণ শাশ্বত জীবন বিধান। মানুষের সার্বিক জীবনের সব সমস্যার সমাধান রয়েছে মহান রাব্বুল আলামীনের ঐশি পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কোর আনুল কারীমের মধ্যে। এ শাশ্বত জীবন বিধান মানব সমাজে বাস্তবে অনুসরণ ও অনুকরণের জন্য সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ,মানবতার মহান মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ ( সা:) কে আল্লাহ ছোবাহানাহু তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত সরুপ এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন- তেমাদের জন্য রাসুলের জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ । তাঁর প্রতিটি কথা, কাজ, অনুমোদন, নির্দেশনা, আদেশ, নিষেধ ও উপদেশ দুনিয়া –আখেরাতের কল্যাণের বার্তাবাহী। তাঁকে সমগ্র মানব জাতির শিক্ষক রূপে এ ধরাধমে প্রেরণ করা হয়েছে। তাঁর সে কালজ্বয়ী আদর্শ ও অমিয়বাণী দ্যুাতি ছড়িয়ে পথপদর্শন করেছে যুগ যুগান্তরে। তাঁর পরশে আলোকিত হয়েছে বর্বর জাহিলি সমাজ। ঘন ঘোর অনধকারে নিমজ্জিত জাতি পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্বের অনুকরণীয় আদর্শে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় যিনিষ পত্র ও দ্রব্য সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেনের ক্ষেত্রে আচার-অচরণ কি হবে তিনি তাঁর কর্মময় জীবনে মহা নবী (সা:) দেখিয়ে দিয়েছেন।
১) সাহাবি হযরত জাবের (রা:) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, আল্লাহর রহম করুন ওই ব্যক্তির প্রতি, যে সহনশীল হয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে, ক্রয়ের ক্ষেত্রে এবং প্রাপ্য আদায়ের জন্য তাগাদা করার ক্ষেত্রে
-(বুখারী)
ব্যাখ্যা: যারা ক্রয়-বিক্রয়, প্রাপ্য ওয়াশিলের ক্ষেত্রে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল হয়। রাসুল (সা: ) বলেছেন, তাদের প্রতি আল্লাহ রহম করুন । সেক্ষেত্রে আল্লাহর অনুগ্রহ ও রাসুল আক্রম (সা: ) এর- দোওয়া পাওয়ার জন্য আমাদেরকে এ ব্যাপারে সচেষ্ট ও সচেতন হাওয়া আবশ্যক।
২) সাহাবি হযরত হোযায়ফা (রা:) বলেন, রাসুলুললাহ (সা:) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের (মানুষদের) এক ব্যক্তির নিকট মালাকুল মউত (মৃত্যুর ফেরেশতা হযরত আজরাইল (আ:)) জীবন নেওয়ার জন্য উপস্থিত হলেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন বিশেষ নেক আমল করেছ কি? সে বলল, আমার স্মরণে নেই । বলা হলো চিন্তা কর । অতঃপর সে বলল ঐরূপ কোন কাজই স্মরণে আসে না একটি কাজ ব্যতীত। আর সেটি হচ্ছে দুনিয়যার জীবনে আমি লোকদের সঙ্গে ব্যবসা করতাম। ব্যবসার ক্ষেত্রে লোকদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতাম। আমার খাতক (খরিদদার) ধনী হলেও আমি তাকে সময় দান করতাম । আর খাতক (খরিদদার) যদি গরিব হতো ,তবে আমি তাকে আমার প্রাপ্য মাফ করে দিতাম। এই আমলের বদৌলতে আল্লাহ তা’য়ালা ওই ব্যক্তিকে বেহেশত দান করেছেন।
-( বুখারী-্ও মুসলিম)
মুসলিমের এক বর্ণনায় সাহাবি ্ওকবাতওবা বিন আমের (রা:) এবং আবূ মাসউদ আনসারী (রা:) হতে উক্ত বিবরণ বর্ণিত আছে । এতে উল্লেখ আছে- ওই ব্যক্তির উক্তির উপর আল্লাহ তায়ালা বলেন,সহানুভূতি প্রদর্শনে আমি তোমার অপেক্ষা অগ্রনী। (এই বলে আল্লাহ তা’য়ালা ফেরেশতাগণকে আদেশ করলেন) আমার এই বান্দার প্রতি তোমার ক্ষমা ও সহানুভূতি প্রকাশ কর !
(আবু মুহাম্মদ আল-হুসাইন ইবনে মাস’উদ ইবনে মুহাম্মদ আল-ফাররা’ আল-বাগাভী ও শায়খে ওয়ালীউদ্দনি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল খাতীব আল আমরী আত তবিরযিী কতৃক রচিত মিশকাতু মাসাবিহ গ্রন্থ থেকে সংকলিত)
গ্রন্থনা: আনোয়ারুল কাইয়ূম কাজল