ঢাকা, বুধবার   ০২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ক্ষমতার শীর্ষ থেকে বন্দিজীবন, কারাগারে আ.লীগ নেতাদের ঈদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০০, ৩১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

গত বছরও তারা ছিলেন আলোচনার শীর্ষে। ঈদ মানেই ছিল শুভেচ্ছা বিনিময়, প্রভাব-প্রতিপত্তির মহড়া। কেউ আসতেন ঈদ সেলামি নিতে, কেউ দিতে। অথচ সময়ের নির্মম পরিহাস, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তারা বন্দি জীবনে ঈদ উদযাপন করছেন।ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা মন্ত্রী, এমপি, এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা এবার ঈদ করছেন কারাগারের চার দেয়ালের মাঝে। একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী এই নেতারা এখন পরিণত হয়েছেন অসহায় আসামিতে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যিনি একসময় ছিলেন দেশের অন্যতম ধনকুবের, তাকেও এবার ঈদ পালন করতে হচ্ছে কারাগারে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর কথাই ধরুন। একসময়ের ‘মিস্টার সিদ্ধান্ত’ খ্যাত এই নেতা, যিনি বরিশালের রাজনীতিতে ছিলেন দণ্ডমুণ্ডের কর্তা, তাকেও এখন ঈদ কাটাতে হচ্ছে বন্দিজীবনে।

আদালতে দাঁড়িয়ে আমু বলেছিলেন, ‘আমরা একে অপরের ভাই ভাই। মিলে-মিশে থাকা উচিত। আশা করছি, এ পরিবেশ থাকবে না।’ তবে তার এ বক্তব্য বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে।

একমাত্র আমু নন, আরও অনেক প্রভাবশালী নেতাই এবার কারাগারে ঈদ করছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, শাজাহান খান, কাজী জাফরউল্লাহ, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এবং দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি—এদের সবাইকে এবার ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে কারাগারের মসজিদে।

ঢাকার রাজনীতির আরেক প্রভাবশালী নেতা, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার শেষ বয়সে এসে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আদালতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘৭৬ বছর বয়সে এসে একের পর এক মামলা সহ্য করতে পারছি না। আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ অবসর নিলাম।’

সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের কথাই ধরা যাক। একসময় প্রযুক্তি খাতে অন্যতম প্রভাবশালী এই মন্ত্রী এখন সবচেয়ে অসহায়। আদালতে এসে তিনি বলেন, ‘কথা বললেই রিমান্ড ও মামলার সংখ্যা বাড়ে। হাত পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আটকে রাখে। কথা বলে কী লাভ?’

এবারের ঈদে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমসহ অসংখ্য নেতা কারাগারে ঈদ উদযাপন করছেন।

একসময়ের ক্ষমতাধর এসব ব্যক্তিরা এখন বিচারাধীন আসামি। রাজনীতির এই নাটকীয় পরিবর্তন প্রমাণ করে, সময়ের স্রোতে সবকিছুই বদলে যেতে পারে। আর সেই পরিবর্তনের শিকার হতে পারেন যে কেউ, যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন।


এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি