ডিসিসিআই সংবাদ সম্মেলন
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তায় এসএমই বন্ড প্রবর্তনের প্রস্তাব
প্রকাশিত : ১৬:৫৭, ২৩ জানুয়ারি ২০২১
দেশের কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে একটি বিশেষ ব্যাংক অথবা ‘এসএমই বন্ড’ প্রবর্তনের প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আজ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান এ প্রস্তাবনা দেন। সম্মেলনে সমসাময়িক অর্থনীতি বিষয়ক ১১টি এজেন্ডা’র উপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরার, পাশাপাশি ২০২১ সালে ডিসিসিআই’র কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন তিনি।
ডিসিসিআই সভাপতি কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্পকে মাঝারী ও বৃহৎ শিল্পের সংজ্ঞায়নে আলাদা করার প্রস্তাব করেন, যার মাধ্যমে কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্পের সার্বিক সহায়তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এছাড়াও দেশের এসএমই খাতের সার্বিক উন্নয়নে এসএমই নীতিমালার পরিবর্তে ‘এসএমই ডেভেলপমেন্ট এ্যাক্ট’ প্রবতর্নের প্রস্তাব করেন, যার মাধ্যমে এখাতের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরা সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ৫৪.১৩% ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন সামনের দিনগুলোতে এটি আরো দ্রুতগতিতে উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা সম্ভব হবে। এ ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া সহজীকরণের উপর জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, শিল্পখাতের চাহিদা মাফিক দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে শিল্প ও শিক্ষাখাতের মধ্যকার সমন্বয় বাড়াতে ডিসিসিআই ইতোমধ্যে ১২টি সরকারী ও বেসরকারী বিশ^বিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে এবং ডিসিসিআই আশা প্রকাশ করেন, বিশ^বিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে বিদ্যামান বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগীকরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে বিশ^ব্যাপী বৈদেশিক বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ৫০%, এবং বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ পরিস্থিতিও রাতারাতি পরিবর্তন হবে না, এমতাবস্থায় দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রদত্ত সুবিধা আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কে প্রদানের প্রস্তাব করেন। তিনি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনের জন্য ‘ইকোনোমিক ডিপ্লোমেসি’-এর আরো বেশি হারে গুরুত্ব প্রদানের উপর জোরারোপ করেন। তিনি জানান এ লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বারের পক্ষ হতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করার বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের উৎপাদিত পণ্যে বেশির ভাগই রপ্তানি হয় আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহে, যারা করোনা মোকাবেলায় বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং এ পরিস্থিতি আরো দীর্ঘস্থায়ী হলে এ অঞ্চলের দেশসমূহ হতে আমাদের রপ্তানি পণ্যের অর্ডার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমাদের কে এশিয়া অঞ্চলের দেশসমূহের প্রতি আরো বেশি মাত্রায় নজর দিতে হবে।
ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে, কর্পোরেট করের বিদ্যমান হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনের জন্য ডিসিসিআই’র পক্ষ হতে এবছর এশিয়া অঞ্চলে ‘ডিসিসিআই ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এলডিসি হতে উত্তরণের পর বাংলাদেশ বিদ্যমান বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা হারাবে এবং এ পরিস্থতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুুতি গ্রহণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানান পাশাপাশি বাংলাদেশের পক্ষ হতে প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদানের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি উপস্থাপন করা যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন। এছাড়া তিনি একই সময়ে বৈশি^ক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক সূচক সমূহে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়নে সরকার ও বেসরকারীখাতকে একযোগে কাজ করতে হবে, মত প্রকাশ করেন।
ডিসিসিআই উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালক মোঃ শাহিদ হোসেন, গোলাম জিলানী, হোসেন এ সিকদার এবং নাসিরউদ্দিন এ ফেরদৌস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরকে//
আরও পড়ুন