খাদ্য সংকটে বিশ্বের ৩৪ কোটি মানুষ, ঝুঁকিতে ৭০ কোটি
প্রকাশিত : ১১:১৯, ১৬ অক্টোবর ২০২২
বিশ্বের ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ভুগছে তীব্র খাদ্য সংকটে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে নতুন করে খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে পড়বে আরও ৭০ কোটি মানুষ। জাতিসংঘের এমন আশঙ্কায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জোর দেয়া হয়েছে খাদ্য আমদানি ও সংরক্ষণে। পাশাপাশি চলছে উচ্চফলনশীল নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন।
২০২০ সালে করোনা মহামারি স্তব্ধ করে দেয় গোটা বিশ্বকে। যার প্রভাব পড়ে কৃষি উৎপাদনেও। সে সময় বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করেছিল জাতিসংঘ।
চলমান রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সে আশংকা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। বাধাগ্রস্ত হয় বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা। নিষেধাজ্ঞার কারণে সংকট দেখা দেয় জ্বালানির। বাড়ে সারসহ কৃষি পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয়।
এরই মধ্যে সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। দুর্ভিক্ষের মুখে ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন, আফগানিস্তানসহ আফ্রিকা ও এশিয়ার অনেক দেশ। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ঝুঁকিতে পড়বে আরও অন্তত ৭০ কোটি মানুষ।
ইয়েমেনে গুরুতর খাদ্যাভাবে ভুগছে অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। দক্ষিণ সুদানে ৬০ শতাংশ মানুষের পুষ্টিকর খাদ্য কেনার সামর্থ নেই। ইথিওপিয়ায় এই সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ। নাইজেরিয়ায় দুই বেলা খাবারের নিশ্চয়তা নেই এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ।
এমন বাস্তবতায় উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন, আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময়ে ডাল বা তেল বীজ জাতীয় শষ্য চাষের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে জোর দেয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম বলেন, “সংকটের যে আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে সে প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার। কৃষি মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে কৃষিতে। সার ও সেচসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃষকদের ভর্তুকি প্রদান করছি।”
কৃষি সচিব বলেন, খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য আধুনিক সাইলো ও গুদাম নির্মাণ করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ফলে দেশে খাদ্য সংকটের কোনো আশংকা নেই।
সচিব আরও বলেন, “স্বাভাবিকভাবে ১০ থেকে ১২ লাখ মেট্রিক টন মজুত থাকলে আমরা যথেষ্ট মনে করি। এই মুহূর্তে সেটা ১৭ থেকে ১৮ লাখ মেট্রিক টন মজুত আছে। সুতরাং যে চাহিদা তার চেয়ে আমাদের বেশি আছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও বেশি সাইলো ও গুদাম তৈরি করছে। যাতে ভবিষ্যতে আরও বেশি খাদ্য মজুত রাখতে পারি।”
খাদ্যদ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মোঃ সায়েদুল ইসলাম বলেন, “যদি দেখি যে আমাদের দেশে মূল্য বেড়ে যাচ্ছে তখন আমদানির অনুমতিটা দিচ্ছি। বেশি আমদানি হলে তখন পরিস্থিতিটা ভালো থাকে।”
বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অতিপ্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে দুর্ভিক্ষের প্রভাব বাংলাদেশে সেভাবে পড়বে না।
এএইচ