গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রাপ্তির ফারাক কতটা?
প্রকাশিত : ১০:৩১, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানের ছয় মাস আজ। এই ছয় মাসের মূল্যায়নে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বা প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির ফারাক নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। কারণ দ্রব্যমূল্য, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হতাশ করেছে সাধারণ মানুষকে। খবর বিবিসি বাংলার
তবে শেখ হাসিনার টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের পতনের পর আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল। দলমত নির্বিশেষে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে; সেই আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছিল ‘একনায়কতান্ত্রিক’ শাসনের।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের তিন দিনের মাথায় গঠিত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অর্ন্তবর্তী সরকারও দিয়েছিল পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি।
কিন্তু মানুষের জীবন চলার ক্ষেত্রে বড় দুটি সমস্যা দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে খোদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে। সরকারেরও কেউ কেউ ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন।
ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা সদস্যদের নামিয়েও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বন্ধ হয়নি অনিয়ম-দুর্নীতি-চাঁদাবাজি। সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও অস্থির রয়েছে নিত্যপণ্যের বাজার।
এমন পরিস্থিতিতে হতাশা থেকে মানুষের মধ্যে ক্ষোভও তৈরি হচ্ছে। এমনকি গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদেরও অনেকে এখন মুখ খুলছেন।
“সরকারের কাজ-কর্মে আমরা খুবই হতাশ। মনে হচ্ছে, আমাদের সব শ্রম-ত্যাগ বৃথা হতে যাচ্ছে,” বলছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুফি।
এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও সরকারকে পুরো নম্বর দিচ্ছেন না।
অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, গত ছয় মাসে সরকারকে মার্কিং করতে বললে আমি দশে সাড়ে সাত দিবো।
গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন এক ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেটি হচ্ছে ‘মব’। এনিয়ে চলছে সমালোচনা। কিন্তু কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না ‘মব’, ঘটছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডও।
সব মিলিয়ে সরকার আবারও স্বৈরাচারী আমলের দিকে যাচ্ছে কি-না, সেই প্রশ্ন তুলছেন মানবাধিকারকর্মীরা। সরকার অবশ্য বলছে যে, তারা ‘গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটেই’ কাজ করে যাচ্ছে।
ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে অংশ নেওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গণহত্যার বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়ন হলেও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বাস্তবায়িত হবে।
তবে সংস্কারের পুরো কাজ শেষ করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হবে বলেও উল্লেখ করেন এই উপদেষ্টা।
তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি শুধু অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার না, বরং পরবর্তী সরকারকেও এগুলো ফেস (মোকাবিলা) করে যেতে হবে।
এমবি//
আরও পড়ুন