ঢাকা, শুক্রবার   ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের বড় অবনতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:২৬, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৪১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গণতন্ত্র সূচকে সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশ ২৫ ধাপ পিছিয়েছে। ১৬৫টি দেশ ও ২টি অঞ্চলের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে বিশ্বের আর কোনো দেশের গণতন্ত্রের সূচক এতটা পেছায়নি।

লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) এর ২০২৪ সালের গণতন্ত্র সূচকে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিজেদের ওয়েবসাইটে ইআইইউ এই সূচক প্রকাশ করে।

ইআইইউ নির্বাচন প্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক স্বাধীনতা এই পাঁচ বিষয়ের ভিত্তিতে সূচকটি তৈরি করে। প্রতিটি বিষয়ের স্কোর ১০। সেই হিসাবে বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ৪.৪৪, যা আগের বছরের তুলনায় ১.৪৪ পয়েন্ট কম।

পাঁচটি ক্যাটাগরির মধ্যে ‘সরকারের কার্যকারিতা’ ও ‘নাগরিক স্বাধীনতা’য় বাংলাদেশ সবচেয়ে কম স্কোর করেছে। ‘সরকারের কার্যকারিতায়’ ২.৫৭ ও ‘নাগরিক স্বাধীনতা’ ৩.৫৩ স্কোর করেছে বাংলাদেশ। তবে ‘নির্বাচন প্রক্রিয়া’ ও ‘বহুত্ববাদে’ সবচেয়ে ভালো করেছে। এর মধ্যে ৬ দশমিক শূন্য ৮ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে ভালো করেছে ‘নির্বাচনপ্রক্রিয়া’ ও ‘বহুত্ববাদ’ ক্যাটাগরিতে। ‘রাজনৈতিক অংশগ্রহণ’ ও ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ উভয় ক্যাটাগরিতে স্কোর পেয়েছে ৫।

আবার এই স্কোরের ভিত্তিতে দেশগুলোর শাসনব্যবস্থাকেও চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে: পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মতো গত বছরও বাংলাদেশ ‘হাইব্রিড শাসনব্যবস্থায়’ থাকলেও এবার তা একেবারে নিচের দিকে নেমে গেছে। যেকোনো সময় কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায় নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা বলতে ইআইইউ এমন ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে প্রায়ই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়। এ শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলের ওপর সরকারের চাপ থাকে। বিচারব্যবস্থা স্বাধীন নয়। সাংবাদিকদের চাপ সৃষ্টি ও হয়রানি করা হয়। দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার, দুর্বল আইনের শাসন, দুর্বল নাগরিক সমাজ এমন শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজন নিয়ে চাপে রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দীর্ঘদিনের শাসক শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তারা শাসনভার গ্রহণ করে। তবে নির্বাচন দেওয়ার আগে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করতে চায় তারা। ফলে নির্বাচন আয়োজন ২০২৫ সালের পরেও চলে যেতে পারে।

সূচকে সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৮১ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে এবং ০ দশমিক ২ ৫ স্কোর নিয়ে তলানিতে রয়েছে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড ও সুইডেন। এই সূচকের ২৮তম অবস্থানে উঠে এলেও ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র সূচকে ভারতের অবস্থান ৪১তম, শ্রীলঙ্কা ৬৭তম এবং পাকিস্তান ১২৪তম স্থানে রয়েছে।

ইআইইউ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ২৫টিতে পূর্ণ গণতন্ত্র ছিল। ৪৬টির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। বাংলাদেশসহ ৩৬টি দেশ ও অঞ্চলে হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান। আর সবচেয়ে বেশি ৬০টিতে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা ছিল।

এমবি//

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি