ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪

গণনার শেষ পর্যন্ত ধৈয্য ধরুন, গণনাকর্মীদের উদ্দেশে মমতা

প্রকাশিত : ০৯:২৫, ২২ মে ২০১৯ | আপডেট: ০৯:২৮, ২২ মে ২০১৯

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের বুথফেরত সমীক্ষার নামে বিরোধীদের মনোবল ভেঙে দেওয়া এবং মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে বলে আগেই অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার গণনার দিনে বিজেপির ‘এগিয়ে থাকা’র খবর আগে ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোরও চেষ্টা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সে জন্য গণনার টেবিলে কোনও রকম ‘মানসিক দুর্বলতা’ বা ‘শিথিলতা’র সুযোগ না দিয়ে গণনার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিলেন তৃণমূল নেত্রী।

গণনার সময় ইভিএমে কারচুপি হতে পারে এবং ভিভিপ্যাটের সঙ্গে ইভিএমের সামঞ্জস্য না-ও রাখা হতে পারে, এই আশঙ্কা ভোটের শুরু থেকেই বিরোধীদের রয়েছে। তার উপর বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল সামনে আসার পরে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির গণনাকর্মীদের ইভিএম রাত-পাহারার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।

গণনার সময় যত এগিয়ে আসছে, গণনাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আরও বেশি ‘সজাগ’ হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। কোনও কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে থাকছে, গণনার প্রাথমিক পর্বে এমন বুঝতে পারলে ‘ভেঙে না পড়ে’ শেষ ভোট গণনা পর্যন্ত নজর রাখার নির্দেশ জেলায় জেলায় তৃণমূল কর্মীদের পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গণনার সময়ে কোনও রকম গোলমাল যাতে না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলেছেন কর্মীদের।

বুথ ফেরত সমীক্ষায় ঝাড়গ্রাম বিজেপির দখলে যেতে পারে বলে দেখানো হয়েছে। সেই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন ঝাড়গ্রামে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে কীভাবে সেখানে গণনার সময়ে দলীয় এজেন্টরা কাজ করবেন, তার নির্দেশ দিয়েছেন।

জেলা নেতৃত্ব দলের বয়স্ক কর্মীদের কাউন্টিং এজেন্ট করার জন্য মনস্থ করেছেন শুনে পার্থবাবু বিরক্ত হন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

তিনি বলেন, ‘‘বয়স্কদের এ সব জায়গায় রেখে কী হবে! দলের তরুণ ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব দিতে হবে।’’ গণনার সময় চোখ-কান খোলা রেখে সতর্ক থাকার পাশাপাশি কোনও প্ররোচনায় পা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পার্থ।

তার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি নানা গুজব ছড়িয়ে আপনাদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করতে পারে। আপনারা ভুলেও ওই সব কথায় ফাঁদে পা দেবেন না। গণনাকেন্দ্র ছেড়ে মাঝপথে কোথাও চলে যাবেন না।’’

সব রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা বার্তা দিয়েছেন, ‘‘বিরোধীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার লক্ষ্যেই একপেশে বুথ ফেরত সমীক্ষা প্রচার করা হয়েছে। এতে প্রভাবিত না হয়ে স্ট্রং রুমে নজর রাখুন। সতর্ক থাকুন। গণনাকেন্দ্রে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত থেকে কোনও অনিয়ম দেখলেই প্রতিবাদ করুন।’’

ভোট পরবর্তী হিংসা এবং গণনার সময়ে হিংসার আশঙ্কার কথা জানাতে এ দিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দল।

পরে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘কাঁকিনাড়া, ডায়মন্ডহারবার-সহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে। ডায়মন্ড হারবারে ৩০ জন নেতাকে পুলিশ লাগিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে-বাইরেও হিংসা হতে পারে। সবটাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে পরিস্থিতি জানানোর জন্য রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছি।’’

গণনার সময়ে তাঁদের কর্মীদের উপরে হামলা হলে তারা যে চুপ করে থাকবেন না, এমন হুঁশিয়ারিও দেন দিলীপবাবু। তার কথায়, ‘‘যে দেবতা যে ফুলে তুষ্ট, তাকে সেই ফুলেই জবাব দেওয়া হবে।’’

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠি দিয়ে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিরা।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি