গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ
প্রকাশিত : ১০:০৬, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
ইসরায়েলি আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজা অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকেই ‘পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অঞ্চলটির অর্থনীতি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে ৩৫০ বছর। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ রয়েছে।
এমনটাই উঠে এসেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নসংক্রান্ত শাখা আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে যুদ্ধ থামলেও এই জনপদের মানুষের জীবন স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে প্রায় ১৫ বছর।
যুদ্ধের আগে থেকেই দুর্বল অবস্থায় থাকা গাজার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি থমকে গেছে আগ্রাসনের কারণে। কেবল ন্যূনতম মানবিক স্বাস্থ্য ও খাদ্য পরিষেবাগুলো চলছে। তাও এর মধ্যে সুপেয় পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকট তীব্রতর এবং এসব পরিষেবা বাইরে থেকেও খুব একটা দেয়া যাচ্ছে না।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যখন যুদ্ধ থামবে, তখন গাজাকে আবার প্রায় নতুন করেই গড়ে তুলতে হবে। গাজার এই পুনর্নির্মাণের জন্য শত শত কোটি ডলার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে এমন তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি।
গাজায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩ হাজারের ছাড়িয়েছে। কোন পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়েছে, কোন পরিবার হারিয়েছে মাথা গোজার ঠাঁই। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে ইসরায়েল দেশটিতে যে পরিমাণ বোমা ফেলছে তাতে গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ।
প্রতিবেদন বলছে, ২শ’রও বেশি সরকারি ভবন, দেড়শ’ বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ও ৬১০টি মসজিদ ও ৩টি গির্জা ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার।
এদিকে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ রয়েছে। পুরো গাজা অঞ্চলে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কিছু কিছু মানুষ ১০ বারের বেশিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৫ বছর লাগবে, আর এ কাজে খরচ হবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
গাজায় অবকাঠামোর যে ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ১ হাজার ৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার। গাজার পানি উৎপাদনের সক্ষমতার প্রায় পুরোটাই ধ্বংস। বেসরকারি সংস্থা অক্সফামের প্রতিবেদন বলছে, এই ভূখণ্ডের পানির কূপের ৮৮ শতাংশ এবং পানি লবণমুক্ত করার সব কটি ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
নষ্ট হয়ে গেছে আবাদের জমিও। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে জানায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বাগানের পর বাগান ধ্বংস হয়েছে। ১১ মাস ধরে গাজায় বোমাবর্ষণ চলছে। ফলে সেখানে খাদ্যাভাব বেড়েই চলেছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এএইচ
আরও পড়ুন