গৃহকর্মীর মৃত্যু নিয়ে বনশ্রীতে বিক্ষোভ-ভাংচুর

রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় একটি বাসায় লাইলী আক্তার (২৫) নামে এক গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গৃহকর্তা বলছেন, শুক্রবার সকালে কাজ করতে এসে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে স্বজনদের অভিযোগ, তাকে হত্যার পর আত্মহত্যার কথা বলা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্বজন ও স্থানীয়রা ওই গৃহকর্তার বাসার সামনে বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছেন। এ সময় একটি গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গৃহকর্মীর মৃত্যুর ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহকর্তা ও বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, বনশ্রীর বি ব্লকের চার নম্বর সড়কের ১৪ নম্বর বাড়িতে গৃহকর্তা মঈন উদ্দিনের ফ্ল্যাটে কাজ করতেন লাইলী। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় ওই বাসা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গৃহকর্তা মঈন উদ্দিন তখন সাংবাদিকদের বলেন, লাইলী তার বাসায় থাকতেন না। প্রতিদিন সকালে গিয়ে কাজ করে চলে আসতেন। লাইলী সকালে বাসায় এসে একটি ঘরের ভেতর ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। তাকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার নিথর দেহ পাওয়া যায়।

মৃতের আত্মীয় শাহনাজ বলেন, গৃহকর্তা মঈন উদ্দিন শুক্রবার সকালে লোক পাঠিয়ে লাইলীকে ডেকে নেন। এর কিছু সময় পর ওই বাসায় তার মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। তাদের ধারণা, গৃহকর্তাই লাইলীকে হত্যা করেছেন। তার পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া ছিল বলেও দাবি করেন শাহনাজ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লাইলীর মৃত্যুর খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে তার স্বজন ও স্থানীয়রা মঈন উদ্দিনের বাসার সামনে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বাসার গেট ভাংচুর করে ও ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে তারা একটি গাড়িতে আগুন দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়ে। তবে পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করেনি। সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি থমথমে ছিল।

আরকে/ডব্লিউএন