ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

গোপন থাকেনি ফুটবলারদের আজব বাতিক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৩, ১৮ জুন ২০১৮ | আপডেট: ২০:০৩, ১৮ জুন ২০১৮

ফুটবলারের অনেক রকম সংস্কার থাকে, যা তারা প্রতি খেলার সময়ই পালন করে থাকেন। কোন ফুটবলার এটা স্বীকার করেন, কোন ফুটবলার নিবতা পালন করেন। ফুটবলাররা বিশ্বাস করেন এটা করলে তার ভাগ্যে ভালো হবে। মঙ্গলময় হবে তার বিশ্বকাপ আসর।তবে খ্যাতিমান খেলোয়াররা এটা গোপনে করলেও তা বারবার করার কারণে ভক্তদের চোখ ফাঁকি দিতে পারে না।

তাই ভক্তদের অনেকেই জেনে গেছেন যে বহু পেশাদার ফুটবলারেরই আছে বিচিত্র সব বাতিক ও কুসংস্কার, যা তারা নিষ্ঠার সাথে প্রতিটি ম্যাচেই পালন করে থাকেন। এসব সংস্কারে আসলেই কোন কাজ হয় কিনা- তা বলা নিশ্চয়ই খুবই মুশকিল। তবে ফুটবলাররা নিশ্চিত যে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে কাজ দেয়।

খেলায় সৌভাগ্য এনে দেবে - এই আশায় পৃথিবীর সেরা ফুটবলাররা কি ধরণের বিচিত্র সব কাজ করেন- তা কিছু দেখে নিন এখানে।

খেলার আগে যা করবেন: একটি রুশ `ক্লাসিক`: গেন্নারো গাত্তুসো ছিলেন ইতালি আর এসি মিলানের এক দুর্দান্ত মিডফিল্ডার। জার্মানিতে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে তার খেলা ইতালির শিরোপা জয়ের পেছনে বড় ভুমিকা রেখেছিল।
খেলার আগে গাত্তুসো করতেন এক বিচিত্র কাজ। তিনি ম্যাচ শুরু হবার আগে রুশ লেখক ফিওদর দস্তয়েভস্কির বই পড়তেন। দস্তয়েভস্কির `ক্রাইম এ্যান্ড পানিশমেন্ট`, দি ব্রাদার্স কারামাজভ` এবং `দি ইডিয়’। তিনি কেন এটা করতেন তা স্পষ্ট নয়, কিন্তু এটা তার জন্য নিয়ম হয়ে গিয়েছিল।
তিনি ফিফাকে বলেছেন, তিনি নিজে খেলার সময় যে সব সংস্কার মেনে চলতেন - বিশ্বকাপে সেগুলো করা কঠিন।
"প্রতিদিন আমি সেই একই সোয়েটার পরে থাকতাম- যা আমি প্রথম দিন পরেছিলাম। আমি দরদর করে ঘামতাম, কিন্তু ওটা আমি গা থেকে খুলতেও পারতাম না। তাই আমার মেজাজ সব সময় খিঁচড়ে থাকতো।"

"আমার মনে ছিল কুসংস্কারের বাসা। যেমন, চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে খেলার আগে আমি দেশে ফিরে যাবার জন্য ব্যাগ গুছিয়েছিলাম। আর এর পর থেকে প্রতিটি খেলার আগেই আমি এ কাজ করতে শুরু করলাম। কিছুতেই নিজেকে থামাতে পারছিলাম না। এটা চলেছিল টুর্নামেন্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত।

সব সময় ডান পা: ব্রাজিলের উজ্জ্বলতম ফুটবল তারকাদের একজন রোনাল্ডো। তিনি বিশ্বকাপ জিতেছেন, গোল্ডেন বল আর বর্ষসেরা খেলোয়াড় সহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন। তার সংস্কার ছিল: মাঠে ঢোকার সময় প্রথম ডান পা ফেলা। অন্য আরো কিছু ফুটবলার এটা মেনে চলেন। তাদের একজন ব্রাজিলিয়ান আরেক তারকা রবার্টো কার্লোস।
এমনকি আরেক রোনাল্ডো- পর্তুগাল ও রেয়াল মাদ্রিদের ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো- তিনিও এক সাক্ষাতকারে স্বীকার করেছেন যে তিনিও এটা মেনে চলেন।

জাদুর ব্যান্ডেজ: চিলির ফুটবলার হুয়ান কার্লোস পেরাল্টা বলেছিলেন, তার সংস্কার হচ্ছে ডান পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে রাখা। এটা এই জন্য নয় যে আমি আহত হয়েছি। কিন্তু প্রথম যেদিন আমি পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলতে নেমেছিলাম- সেদিন জিতেছিলাম। তার পর থেকে আমি এটা করে আসছি।
তার দল কোলো কোলো-র আরেক খেলোয়াড় ইভান জামোরানোও ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলতে নামতেন - তবে পায়ে নয়, ডান হাতে কব্জিতে।

জামোরানো হাতে চোট পাবার কারণে একদিন ব্যান্ডেজ বেঁধে মাঠে নেমেছিলেন, এবং সেদিন তিনি তিনটি গোল করেছিলেন। তার পর থেকেই এটা তার স্থায়ী বাতিকে পরিণত হয়।

মাঠে চিহ্ন দিয়ে রাখা: দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০ সালের বিশ্বকাপ জেতা স্পেন এবং রেয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার ইকার কাসিয়াসও নানা রকমের কুসংস্কার মেনে চলেন। তার নানা রকমের বাতিক এতই বেশি যে মারকা নামে একটি স্প্যানিশ ওয়েবসাইট একবার মন্তব্য করে, কাসিয়াস হচ্ছেন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কুসংস্কারাচ্ছন্ন খেলোয়াড়দের অন্যতম।

"তিনি তার জার্সির হাত কেটে বাদ দেন, মোজা উল্টো করে পরেন, আর প্রতি খেলার আগে তিনি গোল লাইন পর্যন্ত তার এলাকায় বাঁ পা দিয়ে দাগ টেনে চিহ্নিত করে রাখেন।" "তা ছাড়া তার দল যখনই গোল করে, তখন তিনি গোল মুখে ফিরে এসে ছোট একটা লাফ দেন এবং বাঁ হাত দিয়ে গোল পোস্ট স্পর্শ করেন।

পেনাল্টির আগে মাঠেই প্রস্রাব করতেন গয়কোচিয়া: সাবেক আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সেরজিও গয়কোচিয়া হলেন আরেক ফুটবল তারকা - যার টয়লেট `বাতিক` রয়েছে। ইতালিতে ১৯৯০ বিশ্বকাপে যুগোশ্লাভিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে পেনাল্টির আগে তার বাথরুমে যাবার দরকার হয়েছিল, কারণ তিনি প্রচুর পানীয় খেয়েছিলেন।
গয়কোচিয়া বলছিলেন, কিন্তু তার টয়লেটে যাবার সময় সময় ছিল না। তাই তিনি মাঠের মধ্যেই প্রস্রাব করেছিলেন। এর পর আর্জেন্টিনা পেনাল্টিতে ম্যাচটি জিতে গেল। এর পর সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার খেলা ছিল ইতালির বিরুদ্ধে, এবং সে খেলাও পেনাণ্টিতে চলে গেল। তখন গয়কোচিয়া করলেন ঠিক সেটাই - যা তিনি আগের ম্যাচে করেছিলেন। তিনি আবার মাঠের মধ্যে প্রস্রাব করলেন। পেনাল্টিতে আবার আর্জেন্টিনাই জিতেছিল। গয়কোচিয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি এমনভাবে কাজটা করতেন যে কেউ তা বুঝতে পারতো না।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি