গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রস্তাব, গণশুনানিতে যা হল
প্রকাশিত : ২১:১১, ১১ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ১৩:১৪, ১৩ মার্চ ২০১৯
বাংলাদেশে গত দশ বছরে গ্যাসের দামা বাড়ানো হয়েছে বহুগুণ। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী গৃহস্থালি পর্যায়ে দুই বার্নার চুলার জন্য গ্যাসের দাম ৮০০ থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করার কথা বলা হচ্ছে। আর এক বার্নারের দাম ৭৫০ থেকে বেড়ে ১০০০ টাকা। শিল্প ও সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দামও বাড়ানো হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কি কারণে আবার গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় সরকার?
তিনি বলছেন, গ্যাসে বড় অংকের একটা ভর্তুকি দেয় সরকার। সেই ভর্তুকিটা আমরা ধীরে ধীরে কমিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এই যে বাড়াচ্ছি তার জন্য যে আমাদের লাভ হবে তাতো না।
তিনি আরও বলছেন, আরেকটা বিষয় হল, আমাদের যে গ্যাসের অবস্থা সেটা পূরণ করার জন্য আমরা কস্টলি গ্যাস এলএনজি নিয়ে আসছি। এই এলএনজি আনার জন্য বাড়তি একটি কস্ট এর মধ্যে ইনভলভ হয়ে যাচ্ছে। মোস্টলি শিল্প ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে হবে। হাউজহোল্ডে খুবই কম। আমরা বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির সাথে কয়েকবার বসেছি। তারা খুব পজিটিভ। তারা বলছে, আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চাই।
একই অর্থবছরের মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর এটি দ্বিতীয় উদ্যোগ।
এখন সঞ্চালন কোম্পানি ও বিতরণ কোম্পানি দুই পক্ষই তাদের কাজের মূল্য হার বাড়াতে প্রস্তাব দিয়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের জ্বালানী উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলছেন একবার মূল্যবৃদ্ধির ১২ মাসের মধ্যে নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব আইন অনুযায়ী অবৈধ।
তিনি বলছেন, প্রত্যেকের কাজের যে মূল্য হার গত বছরের অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখে নির্ধারিত হয়ে গেছে। এই কয়মাসের ব্যবধানে আবার তারা তাদের কাজের মূল্য হার বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। আজকে আসছে সঞ্চালন কোম্পানি। এরপর কাল আসবে বিতরণ কোম্পানি তিতাস। তাদের সবাই ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য যে, এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ আইনে এক বছরের মধ্যে দুইবার মূল্য হার বা সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধি করা যাবে না।
তিনি বলছেন, গত বছর অক্টোবর মাসে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিলো। তবে শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে তা কার্যকর হয়নি।
সেই বাড়তি দাম সরকার দিয়ে দিচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে ঠিক নির্বাচনের আগে গ্যাসের দাম বাড়ানো উচিত হবে কিনা সেকথা মাথায় রেখে এটি করা হয়েছিলো।
গ্যাসের সংকটের কারণে অনেক পরিবার এলপিজি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে গত দশ বছর আগেও দুই বার্নার গ্যাসের চুলার জন্য ভোক্তাকে ৩০০ টাকার মতো দিতে হতো।
এখন সেটি ৮০০ টাকা। জ্বালানী অধিকার নিয়ে কাজ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলছেন, জনগণের কথা মাথায় রেখে কোন পরিকল্পনা করে না সরকার।
তিনি বলছেন, আমাদের ক্রমাগত এলএনজি আমদানির দিকে নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। এলএনজির যে দাম, আমদানির যে ব্যয় সেটাকে সমন্বয় করতে চাচ্ছে জনগণের পকেট থেকে।
তিনি বলছেন, জনগণের কথা মাথায় থাকলে পলিসিটা জনগণের স্বার্থে তৈরি হওয়ার কথা। এখানে জনগণের স্বার্থ, বিনিয়োগের স্বার্থ, অর্থনীতির বিকাশ এসব কিছুর বিপরীত যায়গায় তারা অবস্থান করছেন। মুষ্টিমেয় কোম্পানি ও কতিপয় গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করছেন।
সূত্র-বিবিসি
আরকে//
আরও পড়ুন