ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘুরে আসুন রংপুর বিভাগ থেকে

সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ

প্রকাশিত : ১৭:৪৩, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২০:১২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

রংপুরে বাড়ছে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ভিড়। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা আসেন। প্রাচীনকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জনপদ রংপুরের রয়েছে গৌরবময় ও বৈচিত্রপূর্ণ ইতিহাস। রংপুরের মধ্যদিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাগট, যমুনা, ধরলা প্রভৃতি নদ-নদী। রংপুর জেলায় ভ্রমণের জন্য উল্লেখযোগ্য স্থান ভিন্নজগৎ, হাতীবান্ধা মাজারশরীফ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, কেরামতিয়া মসজিদ  ও মাজার, চিকলির বিল, টাউনহল, শ্বাশতবাংলা (মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর), রংপুর চিড়িয়াখানা ,মিঠাপুকুর তিনকাতারের মসজিদ, ইটাকুমারী জমিদারবাড়ি, রংপুর কারমাইকেল কলেজ ,দেওয়ান বাড়ির জমিদার বাড়ি, বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র, ঝাড়বিশলা (কবি হায়াত মাহমুদের সমাধি), আনন্দনগর প্রভৃতি।

ভ্রমণ পিপাসুরা যেতে পারেন কুড়িগ্রাম জেলায়। সেখানে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে অন্যতম- চান্দামারী মসজিদ, শাহী মসজিদ, চণ্ডী মন্দির, দোলমঞ্চ মন্দির, ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি, চিলমারী বন্দর, মোগলবাসা ভাটলার সুইচগেট, ধরলা ব্রিজের পাড়- পিকনিক ষ্পট, ঘোগাদহ বাজার। কুড়িগ্রাম জেলার উত্তরে রয়েছে লালমনিরহাট জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা। দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ধুবড়ী জেলা ও দক্ষিণ শালমারা মানকার চর জেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট জেলা ও রংপুর জেলা অবস্থিত।

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ একটি জনপদ। ঐতিহাসিক স্থাপনা, দর্শনীয় স্থান, পর‌্যটন স্পট, পুরনো রাজবাড়ি, নান্দনিক নকশায় নির্মিত মসজিদ-মন্দির, শতবর্ষী গাছ, নদী-নালা, বিল-জলাধারের টলমলে স্বচ্ছ পানি, অনাবিল প্রকৃতি-এসবই টানে পর্যটকদের। যারা একবার গিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ে বারবার ছুটে যেতে মন চাইবে।

শত ব্যস্ততার মাঝে, হাজারও কাজের ফাঁকে মানুষ চায় একটু প্রশান্তি, বিনোদন। মনে ছুটে যায় দূর-দূরান্তে। চোখ মেলে প্রকৃতিকে একটু দেখতে, চোখ জুড়াতে।

অবসরে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা। এদেশে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আদর্শ একটি স্থান হচ্ছে নীলফামারী। এ জেলার পর্যটন এলাকাগুলো সারা বছরই দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে।

নীলফামাররীতে যে কয়েকটি পর্যটন এলাকা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম দর্শনীয় স্থান চিনি মসজিদ, নীল সাগর, কুন্দ পুকুর মাজার, যাদুঘর , হরিশ্চন্দ্রের পাঠ, ভিমের মায়ের চুলা, নীল কুঠি , ধর্মপালের রাজবাড়ী প্রভৃতি।        

গাইবান্ধায় ভ্রমণের অনেক জায়গা রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ,বালাসীঘাট, প্রাচীন মাস্তা মসজিদ, গাইবান্ধা পৌরপার্ক, বর্ধনকুঠি, এসকেএস ইন, ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার, মীরের বাগানের ঐতিহাসিক শাহসুলতান গাজীর মসজিদ এছাড়াও দেখে আসতে পারেন শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বামনডাঙ্গার জমিদার বাড়ি, রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড প্রভৃতি।

ভারত সংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাটে ভ্রমন পিপাসু মানুষের সমাগম দিনে দিনে বাড়ছে। অনেকেই বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত থেকে ভারতের সৌন্দর্য দেখতে লালমনিরহাট যান। এখানে রয়েছে মোঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, ঐতিহাসিক তুষারভান্ডার জমিদার বাড়ী, কাকীনা জমিদার বাড়ি, বুড়িমারী স্থলবন্দর, ৬ নং সেক্টর হেড কোয়ার্টার, তিন বিঘা করিডোর প্রভৃতি। এছাড়াও লালমনিরহাট জুড়ে সবুজের সমারোহ তো রয়েছেই । এ কারণে এখানে পর্যাটকরা সারা বছরই ভিড় জমান।

প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে প্রাচীন জনপদ পঞ্চগড় ও সংলগ্ন এলাকায়। ইতিহাস সমৃদ্ধ এই জনপদটিতে ছড়িয়ে আছে প্রাচীন সভ্যতার বহু মূল্যবান সম্পদ। অবসরে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে। এত সুন্দর জায়গা বাংলাদেশে খুব কমই আছে। একটি শহরকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে উপাদান প্রয়োজন তার সবই পঞ্চগড় জেলায় বিদ্যমান। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পঞ্চগড় হতে পারে এক অসাধারণ জায়গা। পঞ্চগড়ে ঢোকার সাথে সাথে চোখ জুড়িয়ে যাবে ফসলের মাঠ দেখে।

পঞ্চগড় থেকে হেমন্ত ও শীতকালে পর্যক্ষেণ করা যায় কাঞ্চনজংঘার অপরূপ দৃশ্য, রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র রকস মিউজিয়াম, সমতল ভূমিতে চা বাগান, বার আউলিয়ার মাজার শরীফ, মির্জাপুর শাহী মসজিদ, মহারাজার দিঘী , ভিতরগড় দুর্গনগরী, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, ভিতরগড়, মিরগড়, এশিয়ান হাইওয়ে, গোলকধাম মন্দির, তেঁতুলিয়া ডাক-বাংলো, সেখান থেকে দেখে আসুন হিমালয় আর এভারেস্ট।

ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে দিনাজপুর হতে পারে প্রথম পছন্দ। পর‌্যটনসমৃদ্ধ এ জেলায় গেলে আপনি একসঙ্গে দেখতে পারবেন বহু কিছু। ঐতিহাসিক নয়াবাদ মসজিদ, ঐতিহ্যবাহী কান্তজিউ মন্দির, স্বপ্নপুরির মতো নয়াভিরাম বিভিন্ন স্পট, অলৌকিক রামসাগর দিঘী, রাজবাড়ী, রামসাগরসহ আরও কত কী। 

প্রাচীন সাহিত্য ও সংস্কৃতির লীলাভূমি দিনাজপুরের ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এ জেলার প্রতিটি জনপদ যেন ইতিহাসের এক একটি বাঁক। বহু ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী ফরিদপুর। পর‌্যটকরা সেখানে গেলে এসব জানতে পারবেন। সবুজ গাছপালায় ঘেরা ফরিদপুরের সবুজ প্রকৃতি সবাইকে টানে। এই জেলার লিচু ও সুগন্ধী চাল বেশ বিখ্যাত। প্রকৃতির মত এখানকার মানুষগুলোও অতিথি পরায়ন।

পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে রংপুরে

রংপুরে বাড়ছে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ভিড়। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা আসেন। সুপ্রাচীনকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জনপদ রংপুরের রয়েছে গৌরবময় ও বৈচিত্র পূর্ণইতিহাস। রংপুরের মধ্যদিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাগট,যমুনা, ধরলা প্রভৃতি নদ-নদী। রংপুর জেলায় ভ্রমণের জন্য উল্লেখযোগ্য স্থান ভিন্নজগৎ, হাতীবান্ধা মাজারশরীফ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, কেরামতিয়া মসজিদ  ওমাজার, চিকলির বিল, টাউনহল, শ্বাশতবাংলা (মুক্তিযুদ্ধজাদুঘর)  ,রংপুরচিড়িয়াখানা ,মিঠাপুকুর তিনকাতারের মসজিদ, ইটাকুমারী জমিদারবাড়ি, রংপুর কারমাইকেল কলেজ ,দেওয়ানবাড়ির জমিদারবাড়ি, বেগমরোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র, ঝাড়বিশলা (কবিহেয়াতমামুদেরসমাধি) , আনন্দনগর, প্রভৃতি।

হাতীবান্ধা মাজার শরীফ

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন, বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটো রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে প্রচুর মানুষ বেড়াতে আসেন। মাজারশরীফটিতে বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যও বিভিন্ন ধরনের মানত করতে সারাদেশ থেকেমানুষ আসে। সবচেয়ে বেশিভীড় দেখা যায় শুক্রবারে । মাজারে রয়েছে অনেক বড় একটি পুকুর।

তাজহাট জমিদারবাড়ি

তাজহাট জমিদার বাড়িতে রয়েছে বিশাল আকারের চারটি পুকুর। প্রধান প্রাসাদটির ২য় তলায় ওঠা- নামার জন্য গ্যালারির মতো একটি বিরাট সিঁড়ি রয়েছে। জমিদারবাড়ির দ্বিতীয়তলায় উঠানামা করার জন্যে তিনটি অভিগমন পথ রয়েছে । তিনটি অভিগমন পথের মধ্যে মাঝখানটি তুলনামূলকভাবে প্রশস্ত ।অভিগমন পথের ধাপ গুলো সাদা ও ছাই রংয়ের পাথর দ্বারা মোড়ানো । ছাদনির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে বড় বড় লোহার বীম ও লোহার ফালি। কক্ষের দরজাগুলি ও বিশালাকার ।জমিদারবাড়ির মধ্যভাগে প্রবেশপথ ও বর্হিগমন পথ রয়েছে । প্রাসাদের দ্বিতীয় তলায় উঠানামার জন্য লৌহনির্মিত নকশাকরা কাঠেরসিঁড়ি ও রয়েছে, সিঁড়ির রেলিং গুলি ও লোহার নকশা করা – যা দেখতে ফুল গাছের মতো। সিঁড়িটির ভূমি থেকে ভবনের ছাদ পর্যন্ত সাদা-কালো পাথরে মোড়ানো।

কেরামতিয়া মসজিদ মাজার

মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গোলাকার সুউচ্চ গম্বুজ । মসজিদটির প্রতিটি কোণে অষ্টভূজাকৃতি স্তম্ভ রয়েছে, যার শীর্ষদেশে শোভা পাচ্ছে কিউপলা ।মসজিদের দেয়ালে ও মসজিদের ছাদের কিণারায় মারলন অলংকরণ দেখাযায়।

চিকলিরবিল এবং চিকলী পার্ক

রংপুর শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে চিকলিরবিল । বিভিন্নরকমের পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে চিকলিরবিল। চিকলীবিল ঘেষে গড়ে উঠেছে চিকলী পার্ক, সেখানে রয়েছে সব বয়সের মানুষের বিনোদনের ব্যাবস্থা।

টাউনহল

রংপুর টাউনহল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধিচর্চারপ্রাণ কেন্দ্র, বহুসামাজিক, রাজনৈতিক সংস্কৃতিক কর্ম কান্ডের সাক্ষী। শুধু চিত্ত বিনোদন কিংবা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূতিকাগার নয় ; বেদনা ও কষ্টের স্মৃতিধারণ করে আজ ও দাঁড়িয়ে আছে রংপুর টাউন হল । মুক্তিযুদ্ধের সময় এই টাউন হলকে পাকহানাদার বাহিনী `নারীনির্যাতন` কেন্দ্র বানিয়েছিল।

 শাশ্বত বাংলা (মুক্তিযুদ্ধজাদুঘর)

দেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত মূল্যবান নিদর্শন ও স্মারকচিহ্ন সমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য বিভিন্নস্থানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে । তারই ধারাবাহিকতায় রংপুরে ও গড়েতোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর "শাশ্বত বাংলা"। জাদুঘরটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র,  মানচিত্র ,আলোকচিত্র,  সেসময় প্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ,পত্র-পত্রিকা, পুস্তক ও অন্যান্য দস্তাবেজ রয়েছে।

রংপুর চিড়িয়াখানা

রংপুর চিড়িয়াখানায় রয়েছে বিনোদন উদ্যান, বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু ও পশু পাখি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সিংহ  ,রয়েল বেঙ্গল টাইগার ,চিতাবাঘ , জলহস্তী,  ভালুক, বানর, বেবুন, হায়েনা, হরিণ, ময়না ,টিয়া ,ঈগল, শকুন, সারস , বক, ঘড়িয়াল, অজগর সাপ প্রভৃতি । এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বনজ, ফলজ এবং ঔষুধি গাছ ।আরো রয়েছে লেক ও শিশুপার্ক।

মিঠাপুকুর তিনকাতারের মসজিদ

মসজিদটিতে রয়েছে প্রবেশ তোরণ। মসজিদের চারকোণায় রয়েছে চারটি টাওয়ার। এছাড়া মসজিদের উপরে রয়েছে অর্ধগোলাকার তিনটি গম্বুজ। মসজিদে মোট পাঁচটি প্রবেশ পথ রয়েছে ।মসজিদের সামনের দেওয়ালের শিলালিপি থেকে জানা যায়, জনৈক শেখ মোহাম্মদ সাবেরের পুত্র শেখ মোহাম্মদ আছের কর্তৃক ১২২৬ হিজরীতে (১৮১০খ্রি.) মসজিদটি নির্মাণ হয়েছিল।

ইটাকুমারী জমিদারবাড়ি

অতীতঐতিহ্য-ইতিহাস সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপদ রংপুর। ইটাকুমারী জমিদারবাড়িটির অধিকাংশ ভবনই আজধ্বংস হয়ে গেছে। রয়েছে একটি ইঁদারাও দুটি ভবন। সাক্ষি হয়ে অবস্থান করছে বিশালাকার পুকুরদুটি ও।

রংপুর কারমাইকেল কলেজ

প্রায়৯শ’ বিঘা জমি জুড়ে অবস্থিত রংপুর কারমাইকেল কলেজটির মূল ইমারত ভবনটি। এর গম্বুজের অনন্য ব্যবহার,  বিভিন্ন স্থাপত্যিক সৌন্দর্য ও বৈশিষ্টাবলীর চমৎকার সন্নিবেশ-যা স্বভাবতই দর্শক সাধারণের মন কেড়ে নেয়।

দেওয়ান বাড়ির জমিদারবাড়ি

দেওয়ানবাড়ির জমিদারবাড়িতে ছোট্ট একটি ভবন রয়েছে ।প্রবেশ তোরণটি মোঘল আমলের দুর্গের দুয়ারের মতো। প্রবেশ তোরণটির দুপাশে রয়েছে দ্বাররক্ষীদের কক্ষ। জমিদার প্রথাবিলুপ্ত হওয়ার পরবাড়িটি নিলাম হয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে স্কুলও কয়েকটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র

স্মৃতি কেন্দ্রটিতে রয়েছে দশহাজার গ্রন্থ ধারণ করার মতোগ্র ন্ধাগার।গ্র ন্ধাগারে এক সঙ্গে ৫০ জন পাঠ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ।আরো রয়েছে শব্দ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ ২৫০ আসনের মিলনায়তন। সেমিনার কক্ষে রয়েছে একশত আসনের ব্যবস্থা। বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রটি বেগম রোকেয়ার নিজবাড়ির পাশে ৩.১৫ একর ভূমিতে গড়ে তোলা হয়েছে। মূল ভবনটির আয়তন ১,৪৭,০১০বর্গফুট।

ভিন্নজগৎ

ভিন্ন জগতের ভিতরে যেন আরেকটি ভিন্ন জগৎ। এখানে রয়েছে প্লানেটোরিয়াম, রোবট স্ক্রিল জোন,  জল তরঙ্গ,  সিপ্যারাডাইস,  স্পেসজার্নি,  আজবগুহা,  নৌকাভ্রমণ,  শাপলাচত্বর, বীরশ্রেষ্ঠ এবং ভাষা সৈনিকদের ভাস্কর্য,  থ্রিডিমুভি , ওয়াকওয়ে,  ফ্লাই হেলিকপ্টার,  মেরিলেক ড্রাইভ, গোরাউন্ড,  সুইমিং পুল স্পিনিং হেড ও মাছ ধরার সুব্যবস্থা । নৌ ভ্রমণের সুবিধা,  হাতি,  ঘোড়া, ক্যাঙ্গারুসহ বিভিন্ন ধরনের মূর্তি ও রয়েছে।  বিভিন্ন প্রজাতির গাছে গাছে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। থাকতে চাইলে কটেজ রয়েছে ৭টি, আপনি আপনার পছন্দেরটিতে উঠে যেতে পারেন। আরো রয়েছে থ্রিস্টার মডেলের ড্রিম প্যালেস ।ভিন্ন জগতের প্রবেশ মূল্য ২০টাকা এবং সেখানে যে কোনো রাইড৫০টাকার মধ্যেই।

রংপুর যেভাবে যাবেন

সড়ক পথ, রেলপথ এবং আকাশ পথেও যাওয়া যায় রংপুরে। সড়ক পথে যাতায়াতের জন্য ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর এবং মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের বাস রংপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।সড়ক পথে প্রত্যেক দিন প্রায় ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস রংপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও রেলপথে কিন্তু সপ্তাহে ছয়দিন নিদির্ষ্ট সময়ে রংপুর এক্সপ্রেসে যেতে হবে। আর আকাশ পথে যেতে হলে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে ঢাকা থেকেসৈয়দপুর হয়ে রংপুর যেতে পারেন। সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে সৈয়দপুর যাতায়ত করে।

ঘুরে আসুন কুড়িগ্রাম

ভ্রমণ পিপাসুরা যেতে পারেন কুড়িগ্রাম জেলায়। সেখানে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে অন্যতম- চান্দামারী মসজিদ, শাহী মসজিদ, চণ্ডী মন্দির, দোলমঞ্চ মন্দির, ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি, চিলমারী বন্দর, মোগলবাসা ভাটলার সুইচগেট, ধরলা ব্রিজের পাড়- পিকনিক ষ্পট, ঘোগাদহ বাজার। কুড়িগ্রাম জেলার উত্তরে রয়েছে লালমনিরহাট জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা। দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ধুবড়ী জেলা ও দক্ষিণ শালমারা মানকার চর জেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট জেলা ও রংপুর জেলা অবস্থিত।

 

চিলমারী বন্দরঃ

চিলমারী বন্দর বিভিন্ন উৎসবে লাখো মানুষের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠে। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসুরা ছুটে আসে। সব বয়সী মনুষের পছন্দের জায়গা এটি। চিলমারি বন্দর সংলগ্ন ব্রক্ষপুত্র দিয়ে ব্রিটিশ আমলের মতো বড় বড় জাহাজ চলাচল না করলেও নৌপরিবহন ব্যবসাটি এখনোও টিকে আছে।

কিভাবে যাওয়া যায়: কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে ৩৫ কিমি দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত চিলমারী বন্দর। দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর অটো (ইজি বাইক) যোগে সরাসরি যাওয়া যাবে চিলমারীর বন্দরে।

সুইচগেটঃ

বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি থাকলেও ভ্রমনের জন্য বছরের যে কোন সময়ই যাওয়া যায়। বৃষ্টির সময় নদীতে পানি অনেক বেশি হয়ে বন্যার আশংকা দেখা দিলে গেইটটি বন্ধ করে দিয়ে নদীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর দক্ষিনে লম্বা গেইটটিতে সর্বমোট ১৬ টি গেইট রয়েছে।

কিভাবে যাওয়া যায়: কুড়িগ্রামের মোগলবাসার ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই সুইচ গেইট, অটোরিক্সা যোগে খুব সহজেই যেতে পারে্ন গেইটটি দেখতে।

 

চান্দামারী মসজিদঃ

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন চান্দামারী। মসজিদটিতে সুলতানী আমলের শিল্প বৈশিষ্ট্য ও মোগল স্থাপত্যকলার সমন্বয় ঘটেছে। মোঘল আমলের এই মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্ভুজ ও তিনটি মেহরাব। মসজিদটির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ায়। সড়কপথে রাজারহাট উপজেলা থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মসজিদটি অবস্থিত।

ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যেতে পারেন। কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটোরিক্সায় করে যেতে হবে রাজাবাজার হাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, কার্যালয়ের কাছেই রয়েছে মসজিদটি। চান্দামারী মসজিদ ছাড়াও কুড়িগ্রামে আরো অনেক দৃষ্টিনন্দন মসজিদ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম শাহী মসজিদ।

চন্ডি মন্দিরঃ

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নির্মিত মন্দিরটি দেখতে অনেকটা কালীমন্দিরের ন্যায়। ভূমিকম্পে এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখানে নতুন একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। বাহারবন্দ পরগণার সদর দপ্তর এবং জমিদার ছিলেন রাণী সত্যবর্তী। তিনি এখানেই ছিলেন। কালীমন্দির নামে আরেকটি মন্দির ধামশ্রেণীতে সিদ্ধেশ্বরী  রয়েছে।

চন্ডিমন্দিরটি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদর থেকে ৩ কিমি পূর্বদিকে ধামশ্রেণী নামক স্থানে অবস্থিত। ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়, কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর অটোরিক্সায় করে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় যাবেন, তার পাশেই মন্দিরটি রয়েছে।

শাহী মসজিদঃ

মসজিদের সামনেই রয়েছে মনোরম সুন্দর দিঘি। চারপাশে ৩ ফুট উঁচু প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত মসজিদের সামনে রয়েছে ৩টি দরজা ছাড়াও একটি সুদৃশ্য প্রবেশ তোরণ, ২টি মিনার এবং চার কোণায় ৪টি উচুঁ মিনার রয়েছে। মিনারগুলোর পাশে আছে আরো ৮টি ছোট ছোট মিনার । ৩টি বড় আকৃতির গম্বুজ রয়েছে ছাদের মাঝখানে। মসজিদটিতে কোন শিলালিপি না থাকলেও অনুমান করা হয় মোগল স্থাপত্যশৈলিতে নির্মিত মসজিদটি ২০০ বছরের পুরাতন ।

কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা সদর থেকে ১ কিমি উত্তর-পূর্ব দিকে ব্যাপারীপাড়া শাহী মসজিদ অবস্থিত। যাতায়াতের জন্য রিক্সা ও অটোরিক্ষা রয়েছে।  কুড়িগ্রাম জেলায় অনেক দৃষ্টিনন্দন মন্দির রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চন্ডি মন্দির।

ভিতরবন্দ জমিদার বাড়িঃ

জমিদারবাড়িটি কাঠের তৈরি। বাড়ির অর্ধেকটা ব্যবহার করা হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় হিসাবে, আর বাকি অর্ধেকটা এখন আর নেই। ইংরেজ আমলের শুরুর দিকে রাশাহীতে ছিল ভিতরবন্দ গরগণার সদর দপ্তর। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অব্যবহিত পরে এই পরগণার সদর দপ্তর স্থানান্তর করা হয় নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দে।

জমিদারবাড়িটি কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে ১৬ কিমি দূরে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ভিতরবন্দ গ্রামে অবস্থিত। ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়, কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর অটোরিক্সায় করে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সামনে যেতে হবে। তার কাছেই রয়েছে ভিতরবন্দ জমিদার বাড়ি।

সোনাহাট স্থলবন্দরঃ

নদীর তীরবর্তী হওয়ার কারণে ব্রিটিশ আমলে সোনাহাট স্থল বন্দরটি বিখ্যাত বাণিজ্যিক কেন্দ্র  ছিল। এখনো এর গুরুত্ব কমেমি। সোনাহাট স্থল বন্ধরটি ভারতের আসাম এবং পশ্চিম বঙ্গের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত যা ভারতের সেভেন সিষ্টার বলে খ্যাত অঙ্গ রাজ্যের গেটওয়ে হিসেবে কাজ করছে। এ বন্দর দিয়ে ভারত, আসাম ও নেপাল হতে কয়লা, কাঠ, টিম্বার, পাথর, সিমেন্ট, চায়না ক্লে, বল ক্লে, কোয়ার্টজ, রাসায়নিক সার, কসমেটিক সামগ্রী, পশু খাদ্য, বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, চাল, ডাল, গম, বিভিন্ন ধরণের বীজ, তামাক ডাটা প্রভৃতি মালামাল আমদানী করা হয়। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হয় ইলিশ মাছ, মেলামাইনের তৈরী বাসনপত্র এবং ঔষধ সহ কতিপয় মালামাল।

কিভাবে যাওয়া যায়: ভূরুঙ্গামারী উপজেলা হতে সোনাহাট স্থল বন্দরের দুরত্ব ১২কিলোমিটার। এই দুরত্বের মাঝখানে ১৮৮৭ সালে তৈরি ৪৫০মিটার লম্বা একটি লোহার তৈরি রেলওয়ে ব্রিজ অবস্থিত। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের সোনাহাট সীমান্তে এ স্থল বন্দর অবস্থিত।

বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে কুড়িগ্রামে এসে অথবা ঢাকা টু ভুরুঙ্গামারীর ডে ও নাইট কোচে ভুরুঙ্গামারীতে নেমে মাত্র ২০ টাকা অটোরিক্সা ভাড়ায় সোনাহাট স্থল বন্দর যেতে পারেন।

 

বর্ডারহাটঃ

বাংলাদেশের বর্ডারহাট গুলোর মধ্যে রাজিপুর সীমান্তে একটি রয়েছে। পাহাড় এবং নদীর ঠিক মধ্যখানেই এই হাট। সপ্তাহে ২দিন এখানে বাজার বসে। খুব সহজে পাশ সংগ্রহ করে আপনিও যেতে পারেন বর্ডার হাটে।

কিভাবে যাবেন- বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত হতে সহজেই কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়। কুড়িগ্রাম যাওয়ার পর বাস অথবা অটো সিএনজি যোগে  রাজীবপুর হয়ে যেতে পারেন বালিয়ামারী সীমান্ত হাট।

মন ছুটে যায় ঠাকুরগাঁও-এ

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ একটি জনপদ। ঐতিহাসিক স্থাপনা, দর্শনীয় স্থান, পর‌্যটন স্পট, পুরনো রাজবাড়ি, নান্দনিক নকশায় নির্মিত মসজিদ-মন্দির, শতবর্ষী গাছ, নদী-নালা, বিল-জলাধারের টলমলে স্বচ্ছ পানি, অনাবিল প্রকৃতি-এসবই টানে পর্যটকদের। যারা একবার গিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ে বারবার ছুটে যেতে মন চাইবে।

ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জহাটে রয়েছে জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ , বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণ মারি গ্রামে রয়েছে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো  সূর্য্যপূরী আমগাছ, পীরগঞ্জ রয়েছে ফান সিটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক , সনগাঁ মসজিদ,  ফতেহপুর মসজিদ , হরিণমারী শিব মন্দির, গড়খাঁড়ি , পীরগঞ্জ  উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের হাটপাড়ায় রয়েছে রাজভিটা, পীরগঞ্জ পৌরসভায় রয়েছে ভেমটিয়া শিবমন্দির, রানীশংকৈল উপজেলায় রয়েছে রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি, প্রাচীন রাজধানীর চিহ্ন, নেকমরদ মাজার, মহেশপুর মহালবাড়ি ও বিশবাঁশ মাজার ও মসজিদস্থল, গড়গ্রাম দুর্গ, বাংলা গড়  হরিপুর উপজেলায় রয়েছে হরিপুর রাজবাড়ি , গড় ভবানীপুর , গেদুড়া মসজিদ, মেদিনী সাগর মসজিদ, রানীশংকৈল উপজেলায় রয়েছে জগদল রাজবাড়ি, গোরক্ষনাথ মন্দির এবং কূপ, মালদুয়ার দুর্গ , ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রয়েছে সাপটি বুরুজ এবং ভাউলারহাটে রয়েছে শালবাড়ি ইমামবাড়া। ঠাকুরগাঁও শহরে রয়েছে ঢোলরহাট মন্দির , গোবিন্দনগর মন্দির, কোরমখান গড়সহ আরো অনেক কিছু। এগুলো সহজে দর্শকদের নজর কাড়ে। মনে দোলা দেয়। বারবার মন ছুটে যায়।

 

দেশের সবচেয়ে বড় আমগাছ

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী গ্রামের তিন বিঘা জমি জুড়ে দেশের সবচেয়ে বড় আমগাছ। স্থানীয়ভাবে এটি সূর্যপুরী আম গাছ বলে ডাকা হয়। গাছটির প্রায় ১৯ টি বৃহাদাকার শাখা বা ডাল রয়েছে, যার প্রতিটি শাখার দৈর্ঘ্য ৬০ থেকে ৮০ ফুট। গাছের প্রত্যেকটি শাখার উপর অনায়াসে হাটাচলা করা সম্ভব। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর এ গাছ থেকে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মণ আম উৎপাদন হয়, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ১ লাখ টাকা। গাছটির বয়স আনুমানিক বয়স ২০০ বছর হবে।

 

ফানসিটি বিনোদন শিশু পার্ক

শিশুপার্ক এবং বিনোদন কেন্দ্র ফানসিটি এন্ড এ্যামিউজমেন্ট পার্ক পীরগঞ্জ শহরের আর ডি আর এস মোড় সংলগ্ন এবং পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত । সব বয়সী মানুষের বিনোদন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নির্মল আনন্দ উপভোগের কেন্দ্র হিসেবে এর জন্য আলাদা কদর। ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যতম প্রধান এই পিকনিক স্পটে শিশুদের জন্য রাইড এবং সাম্পান নৌকা, ট্রেন, ব্রিজ, দোলনাসহ আরও বিভিন্ন ধরণের বিনোদন ,স্থাপত্য শৈলীতে আকৃষ্ট হয়ে ভিড় জমায় দর্শণার্থীরা । পিকনিকের জন্য রয়েছে লিচু বাগান। রয়েছে গাড়ি পার্কের জন্য নিজস্ব এলাকা। দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিকের ছবি।

 

জগদল রাজবাড়ি

ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে নির্মিত বিরেন্দ্র নাথ চৌধুরীর রাজবাড়িটি বর্তমানে প্রায় ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। রাজবাড়ি থেকে একশ’ মিটার পশ্চিমে নাগর নদীর পাড়ের মন্দিরের সম্পূর্ণধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই নেই। 

 

রামরাই (রাণীসাগর)

বাংলাদেশে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শন যা প্রচারণার অভাবে মানুষের নিকট পৌছায় না। এমনই একটি ইতিহাসের নাম রামরায়। চারিদিকে সবুজের বিশাল সমারোহ ও দিঘীর টলটলে জলরাশি দেখলে যেকোনো প্রকৃতি প্রেমী মুগ্ধ না হয়ে পারেন না। রামরাই (রাণীসাগর) পুকুটির দৈর্ঘ্য উত্তর -দক্ষিণে ৯০০মিটার ও প্রস্থ পূর্ব- পশ্চিমে ৪০০মিটার। পুকুরটি ১৮.৩৪ একর সু-উচ্চ পাড় ও ২৩.৮২ একর জলভাগ সহ মোট ৪২.২০ একর বিশিষ্ট। বরেন্দ্র ভূমিতে প্রাচীন জলাশয়গুলির মধ্যে এর আয়তন ২য় বৃহত্তম।

রাণীসাগর ফাউন্ডেশন সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে পুকুরটির পাড়ে ১২শাতধিক লিচু গাছ সহ অন্যান্য বৃক্ষের চারা রোপন করা হয়েছে। ফল বিক্রি করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উপবৃত্তি দেওয়া হয় ।

 

খুনিয়া দিঘী স্মৃতি সৌধ

১৯৭১সালের বীর শহীদের খুনিয়া দিঘী স্মৃতি সৌধ রানীশংকৈল ঠাকুরগাঁও। খুনিয়া দিঘী মহান মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁও জেলা সর্বোচ্চ বড় আকারের বদ্ধ ভূমি । প্রায় দুশ’ বছর আগে স্থানীয় কোনো জমিদার খনন করেছিলেন ৬ একর আয়তনের খুনিয়া দিঘী। জনশ্রুতি আছে এই এলাকার ব্যবসায়ীরা দিঘির পাশ দিয়ে ব্যবসা করতে রায়গঞ্জে যেতেন। এক ব্যবসাযীকে খুন করে দিঘির পাড়ে ফেলে রেখেছিল। তখন খেকে দিঘির নাম হয় খুনিয়া দিঘি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১০০০জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে এই দিঘীতে ফেলে রাখা হয়। এখানে প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬শে মার্চ রাত ১২টা ১মিনিটে ফুল দেওয়া হয়।

 

রাণীশংকৈল (রাজা টংকনাথের) জমিদার বাড়ি

রানীশংকৈল  উপজেলায় কুলিক নদীর তীরে মালদুয়ার জমিদার রাজা টংকনাথের রাজবাড়িটি অবস্থিত। টংকনাথের পিতা বুদ্ধিনাথ গোয়ালা বংশীয় জমিদারের শ্যামরাই মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন। নিঃসন্তান বৃদ্ধ গোয়ালা জমিদার কাশীবাসে যাওয়ার সময় সব দলিল করে যান যে, তিনি কাশী থেকে ফিরে না এলে শ্যামরাই মন্দিরের সেবায়েত এই জমিদারির মালিক হবেন। তবে অনেকে মনে করেন এই ঘটনা বুদ্ধিনাথের দু’এক পুরুষ পূর্বেরও হতে পারে। রাজবাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন বুদ্ধিনাথ চৌধুরী, সমাপ্ত করেন রাজা টঙ্কনাথ। বৃটিশ সরকারের কাছে টঙ্কনাথ রাজা পদবী পান। রাজবাড়িটি নির্মিত হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে। রাজবাড়ির পশ্চিমদিকে সিংহদরজা। দরজার চূড়ায় দিক নির্দেশক হিসেবে লৌহদন্ডে S.N.E.W চিহ্ন অঙ্কিত রয়েছে।  রাজবাড়ি সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব কোণে কাছারিবাড়ি। পূর্বদিকে দুটি পুকুর। রাজবাড়ি থেকে প্রায় দু`শ মিটার দক্ষিণে কুলিক নদীর তীরে রাস্তার পূর্বপ্রান্তে রামচন্দ্র (জয়কালী) মন্দির। এই মন্দিরটিছিল রাজবাড়ির চেয়ে প্রাচীন।

 

হরিপুর জমিদার বাড়ী

হরিপুর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হরিপুর রাজবাড়িটি  প্রতিষ্ঠা করেন ঘনশ্যাম কুন্ডুর বংশধরেরা।  আনুমানিক ১৪০০ খ্রিস্টাব্দে ঘনশ্যাম কুন্ডু এন্ডি কাপড়ের ব্যবসা করতে হরিপুরে আসেন। তখন এ অঞ্চলের জমিদার ছিলেন মেহেরুন্নেসা নামে এক বিধবা নারী । খাজনা অনাদায়ের কারণে জমিদারির কিছু অংশ নিলাম হয়ে গেলে ঘনশ্যাম কুন্ডু কিনে নেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে রাজবাড়ির কাজ শুরু করেন ঘনশ্যামের পরবর্তী বংশধরদের একজন রাঘবেন্দ্র রায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে রাজবাড়ির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন রাঘবেন্দ্র রায়ের পুত্র জগেন্দ্র নারায়ণ রায়। রাজবাড়ির দ্বিতল ভবনে লতাপাতার নকশা এবং পূর্ব দেয়ালের শীর্ষে রাজর্ষি জগেন্দ্র নারায়ণের চৌদ্দটি আবক্ষ মূর্তি আছে। তাছাড়া ভবনটির পূর্বপাশে শিব মন্দির এবং মন্দিরের সামনে নাট মন্দির রয়েছে। রাজবাড়ির পাঠাগার ও সিংহদরজার অস্তিত্ব এখন নেই।  দিকে রাজবাড়িটি দুই অংশে বিভক্ত হয়ে যায় ১৯০০ সালে।

 

গোরক্ষনাথ মন্দির

নেকমরদ থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে গোরকই বা গোরকুই নামক স্থানে  রয়েছে গোরক্ষনাথ মন্দির ও নাথ আশ্রম। কোনো কোনো ঐতিহাসিক গোরক্ষনাথকে নাথপন্থীদের ধর্মীয় নেতা মীননাথের শিষ্য বলে ধারণা করে থাকেন। গবেষকদের মতে, এই গোরক্ষনাথ হলো নাথপন্থী সম্প্রদায়ের গুরু বা যোগীর উপাধি মাত্র।  ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে গোরক্ষনাথের নাম পাওয়া যায়। নেপালেও বৌদ্ধযোগী হিসেবে গোরক্ষনাথের অস্তিত্বের কথা ইতিহাসে উল্লেখ আছে। গোরক্ষনাথ মন্দির ও আশ্রমটি রাণীশংকৈলের গোরকুইয়ের মৃত নদীর তীরে উঁচু জমির উপর অবস্থিত। মন্দির চত্বরটিতে মোট ৫টি মন্দির ,৩টি শিব মন্দির ,১টি কালিমন্দির ছাড়াও ১টি প্রধান মন্দির আছে ।

নাথমন্দিরের পেছনে অর্থাৎ উত্তর দিকে পাষাণ বাঁধানো চৌবাচ্চার মতো নিচু স্থানের মধ্যস্থলে বড় বড় কালো পাথরের খন্ড দিয়ে ঘেরা এক অলৌকিক ইদাঁরা বা কুয়ো আছে। কুয়োর একেবারে নিচু অংশটুকুও পাথর দিয়ে বাঁধানো। কিন্তু মাঝে একটি ছিদ্র দিয়ে নিচ থেকে কুয়োতে পানি আসে। কুয়োর চারপাশে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে অনেক লোক পূণ্যস্নান করলেও কুয়োর পানি কমে না।  মন্দিরের উত্তর চত্বরে টিনের চাল বিশিষ্ট যে আশ্রম রয়েছে তার দরজায় একটি শিলালিপি বা ফলকটি বর্তমানে দিনাজপুর যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এর সম্পূর্ণ পাঠোদ্ধার করা সম্ভব না হলেও বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক আবু তালিবের মতে, এই শিলালিপিটি বাংলা অক্ষরে উৎকীর্ণ এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত শিলালিপিগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম।

 

রাজভিটা

পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের হাটপাড়া নামক স্থানে টাঙ্গন নদীর বাঁকে যে রাজবাড়ির অস্তিত্ব অনুভব করা যায় তা রাজভিটা নামে বর্তমান মানুষের নিকট পরিচিত। ‍রাজভিটায় দাঁড়িয়ে থাকা রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ মাটির গর্ভে। অনুমান করা হয় এটি শেরশাহের সময়ে নির্মিত হয়েছিল। এখানে শেরশাহ আমলের মুদ্রা পাওয়া যায়। একটি শিলালিপি পাওয়া গেছে যার বর্ণগুলো অপরিচিত এবং শিলালিপিতে একটি উট, একটি ঘোড়া ও একটি শুকরের প্রতিকৃতি আছে। মাটি খুড়লে , নদীর ভাঙনেও নানা আকৃতির প্রচুর ইট ও পাথর বেরিয়ে আসে। রাজভিটা প্রায় ৫০০ মিটার দীর্ঘ এবং ২৫০ মিটার প্রস্থ। রাজভিটা থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে শেরশাহ আমলের পূর্ণিয়া সড়কের নিদর্শন আছে।

 

মহালবাড়ি মসজিদ

মহালবাড়ি মসজিদটি ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলা হতে উত্তরে মীরডাঙ্গী থেকে ৩ কিঃমিঃ পূর্বে মহেশপুর গ্রামে অবস্থিত। মসজিদে পাওয়া শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে এটি প্রতিষ্ঠিত। শিলালিপি সূত্রে জানা যায় মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মিয়া মালিক ইবনে মজুমদার। মহালবাড়ি মসজিদটি ছিল ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট। ছাদ থেকে পানি বের করে দেয়ার জন্য খোদিত শিলার ব্যবহার দেখা যায়। মহালবাড়ি মসজিদের জায়গায় নির্মিত হয় নতুন মসজিদ। নবনির্মিত মসজিদটির ভিত ও মেঝেতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রাচীন মসজিদের পাথর এবং দেয়ালে ইট । প্রাচীন মসজিদের নকশা করা শিলাখন্ড নতুন মসজিদের মিহরাবে আটকানো আছে। নতুন মসজিদের সামনে প্রাচীন মসজিদের তিন তাকের নকশা করা শিলাখন্ডের মিম্বারটি এখনো রয়েছে। মসজিদের পূর্বপাশে আছে ছোট দিঘি। দিঘিটির ঘাট উপর থেকে নিচ পর্যন্ত পাথরে বাঁধানো। মসজিদের ২ মিটার পূর্বে জঙ্গলের মধ্যে দুটি কবরইট দিয়ে বাঁধানো। একটি কবর `বিশ্বাস পীরের` মাজার বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত। সম্ভবত বিশ্বাস শব্দটি ক্রমান্বয়ে বিশওয়াশ থেকে বিশ বাইশ শব্দে বিকৃত হওয়ার ফলে এলাকাটিকে বলা হয় বিশবাইশ মহাল।

 

জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ

মসজিদ অঙ্গনে প্রবেশমুখে তোরণ রয়েছে। নান্দনিক নকশায় নির্মিত মসজিদটি দেখতে খুবই সুন্দর। মসজিদের ৩ গম্বুজের শীর্ষদেশ কাচ পাথরের কাজ করা। মসজিদের ছাদে মিনার আছে ২৮ টি। মিনারকগুলি ৩৫ ফুট উঁচু এবং প্রতিটিতে নকশা করা রয়েছে। মসজিদটির মূল কক্ষের সঙ্গে ছাদসহ বারান্দা, ছাদবিহীন বারান্দা এবং ছাদবিহীন বারান্দাটি পূর্বাংশে মাঝখানে ৪ থামের উপর ছাদ বিশিষ্ট মূল দরজা। মূল দরজার ছাদে ছোট ছোট মিনারের অলংকার রয়েছে। এর জানালা দুটি, দরজা তিনটি, কুলুঙ্গি দুটি। মসজিদটিতে প্রচুর লতাপাতা ও ফুলের সুদৃশ্য নকশা রয়েছে। ঠাকুরগাঁও শহর থেকে পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে শিবগঞ্জহাটের তিন কিলোমিটার পশ্চিমে জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদটি অবস্থিত।

 

শালবাড়ি মসজিদ ইমামবাড়া 

ঠাকুরগাঁও উপজেলার ভাউলারহাটের নিকটে শালবনে অবস্থিত শালবাড়ি মসজিদটি বাংলা ১২১৫ সালে তৈরি হয়েছে। মসজিদটির মূল নকশা এখন আর নেই । শালবাড়ি মসজিদটির অদূরে ইমামবাড়া রয়েছে।  ইমামবাড়ার বাইরের দৈর্ঘ্যে ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং প্রস্থে ১৩ ফুট।

 

সনগাঁ শাহী মসজিদ

ধারণা করা হয় মোঘল সম্রাট শাহ আলমের সময় সনগাঁ শাহী মসজিদ নির্মাণ হয়েছিল। মসজিদে গম্বুজ তিনটি ও দরজা তিনটি । দক্ষিণে পাকা কূপ । পূর্বপাশে প্রাচীন কবরে শুয়ে রয়েছেন `সুধিবাদ পীর` নামক এক পূণ্যাত্মা । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সনগাঁ নামক গ্রামে সনগাঁ মসজিদটি অবস্থিত।

গেদুড়া মসজিদের অবশিষ্ট অংশ

গেদুড়া মসজিদটি হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নে প্রায় আড়াইশ বছর পূর্বে স্থাপিত হয়েছিল। একইস্থানে নতুন মসজিদ তৈরি হয়েছে । এখানে আরবি ও ফারসি ভাষায় লিখিত শিলালিপি পাওয়া যায়। শিলালিপিটি গোলাকার ৫৪ বর্গ ইঞ্চির পরিধি বিশিষ্ট ।

 

হরিণমারী শিব মন্দির

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে উত্তর পশ্চিমদিকে হরিণমারী হাটে অবস্থিত মন্দিরের ছাদ চারচালা পদ্ধতিতে নির্মিত। আনুমানিক মন্দিরটি চারশ বছরের পুরাতন হতে পারে । মন্দিরটির বর্তমান উচ্চতা প্রায় ত্রিশ ফুট এবং আয়তন  ১৪ ×১৪ ফুট। দক্ষিণ দিকে দরজায় পোড়ামাটির ফলকে লতাপাতার নকশার সাথে বিভিন্ন মূর্তির প্রতিকৃতি ছিল। মন্দিরের পূর্বদিকে বড় একটি পুকুর আছে।

আরো দেখে আসতে পারেন মেদিনীসাগর জামে মসজিদ

হরিপুর উপজেলার মেদিনীসাগর গ্রামে অবস্থিত মেদিনীসাগর জামে মসজিদের স্থাপত্যকাল মোঘল আমল । মসজিদের  বাইরের দিকের দৈর্ঘ্য সাড়ে একত্রিশ ফুট এবং প্রস্থ চৌদ্দ ফুট।  মসজিদের ভিতরের দৈর্ঘ্য চবিবশ ফুট এবং প্রস্থ ছয় ফুট। মিহরাব ও মিম্বার আছে। দুটি জানালা, তিনটি দরজা, আটটি কুলুঙ্গি, তিনটি খিলান রয়েছে। এছাড়া মসজিদের পূর্ব ও পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে মোট চারটি থাম । এই মসজিদের সঙ্গে ফতেহ্পুর মসজিদের স্থাপত্য মিল রয়েছে।

নদ-নদী

ঠাকুরগাঁওয়ে অনেকগুলো নদী রয়েছে- সেগুলোর মধ্যে টাঙ্গন নদী, ছোট ঢেপা নদী, কুলিক নদী, পুনর্ভবা নদী, তালমা নদী, পাথরাজ নদী, কাহালাই নদী, তীরনই নদী, নাগর নদী, তিমাই নদী, এবং নোনা নদী অন্যতম। সকাল থেকে দিনভর ঘোরাঘুরির পর পর‌্যটকরা বিকেলে এসব নদীতে ঘুরে বেড়াতে পারেন।

স্বচ্ছ পানির জলাধার

ঠাকুরগাওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় রয়েছে চোশপাড়া বিল, সোপরা বিল, আমান ধামান বিল,  পীরগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে ধাতরা বিল, কাচনা বিল, কর্ণ বাহারা বিল, ধরধরিয়া বিল, জালুই খাল, রাণীশংকৈল উপজেলায় রয়েছে কাশিপুর বিল, পামোল বিল, লেহেম্বা বিল, গড়গড়িয়া বিল, বুড়া বিল, হরিপুর উপজেলায় রয়েছে কানুর পুকুর বিল, নিকারিয়া বিল, দামোল বিল, লৌহচান্দ বিল, যমুনা বিল। এগুলোর পানি এতটাই স্বচ্চ যে গভীরের লতাগুল্ম পর‌্যন্ত দেখা যায়।

কোথায় থাকবেন

ঠাকুরগাওয়ে থাকাতে  চাইলে সরকারী হোটেল ও আবাসনের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন সার্কিট হাউস, ঠাকুরগাঁও-০৫৬১-৫৩৪০০, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঠাকুরগাঁও             (০৫৬১)৫২১৩৬ , পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি,ঠাকুরগাঁও (০৫৬১)৫৩৫৭১ , সড়ক জনপথ বিভাগ, ঠাকুরগাঁও          (০৫৬১)৫২০৭৯।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সড়কপথে ঠাকুরগাঁও যেতে পারেন বেশ কয়েকটি পরিবহণে করে। এজন্য যোগযোগ করতে পারেন হানিফ এন্টারপ্রাইজ ভাড়া : ৫৫০-৬০০/- টাকা ০২-৮১২৪৩৯৯  ০১৬৭৩-৯৫২৩৩৩৫, নাবিল পরিবহন ভাড়া : ৫৫০-৬০০/- টাকা ০২-৮১২৭৯৪৯ , বাবলু এন্টারপ্রাইজ ভাড়া : ৫৫০-৪০০/- টাকা ০২-৮১২০৬৫৩ , ০১৭১৬-৯৩২১২২, কেয়া পরিবহন ভাড়া : ৩৫০-৪০০/- টাকা ০১৭১১-১১৮৪০২ নম্বরে।

নির্মল বিনোদনের খোঁজে নীলফামারী

শত ব্যস্ততার মাঝে, হাজারও কাজের ফাঁকে মানুষ চায় একটু প্রশান্তি, বিনোদন। মনে ছুটে যায় দূর-দূরান্তে। চোখ মেলে প্রকৃতিকে একটু দেখতে, চোখ জুড়াতে।

অবসরে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা। এদেশে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আদর্শ একটি স্থান হচ্ছে নীলফামারী। এ জেলার পর্যটন এলাকাগুলো সারা বছরই দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে।

নীলফামাররীতে যে কয়েকটি পর্যটন এলাকা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম দর্শনীয় স্থান চিনি মসজিদ, নীল সাগর, কুন্দ পুকুর মাজার, যাদুঘর , হরিশ্চন্দ্রের পাঠ, ভিমের মায়ের চুলা, নীল কুঠি , ধর্মপালের রাজবাড়ী প্রভৃতি।        

 

নীলসাগর 

নীল সাগর কোনো সাগর নয়; একটি দিঘির নাম। ১৯৮২ সালে এর নামকরণ করা হয় নীল সাগর। মৎস্য শিকারীদের জন্য আদর্শ জায়গা এই নীল সাগর। মাছ শিকারের জন্য টিকিটের মূল্য এক হাজার টাকা। নির্দিষ্ট সময় ১৪ এপ্রিল থেকে নভেম্বরে অতিথি পাখি আসার আগ পর্যন্ত এ সুযোগ পান তারা।

বারুণী স্নান উৎসব দেখেতে যেতে পারেন নীলফামারীর নীল সাগরে। বৈশাখী পূর্নিমায় দিঘির পাড়ে অনুষ্ঠিত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের ‘বারুণী স্নান উৎসব’।

নীলফামারীর নীল আর  সাগরের সাগর থেকেই নীল সগর নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। নীল সাগর নামের বিশাল দিঘিটি নীলফামারীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান।

দিঘিটির জল ভাগের আয়তন প্রায় ৩৪ একর হলেও মোট আয়তন ৫৪ একর। জলের গভীরতা বেশিব ভাগ সময়ই সাত মিটার থেকে ১২ মিটার থাকে। দিঘিতে দুটি ঘাট রয়েছে । একটি ঘাট পূর্ব পাড়ে এবং অপর ঘাটটি রয়েছে পশ্চিম পাড়ে। ঘাট দুটিই ইটের তৈরি। দিঘির একপাশে হিন্দু সম্প্রদায়ের শিব মন্দির, অপর পাশে মুসিলিম সম্প্রদায়ের মুসলিম দরবেশের আস্তানা ছিল।

দিঘির পাড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। পাড়গুলি সমতল ভুমি থেকে একটু উচু, পাড়ে রয়েছে পর্যটকদের বসার জন্য অনেকগুলি স্থান।

যেভাবে যাবেন

নীলফামারী সদর থেকে বাসযোগে নীলসাগর যাওয়া যায়। নীলফামারীর গড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোবাডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত নীলসাগর দিঘিটি । দিঘির পাড়ে পর্যটকদের থাকার জন্য রুম রয়েছে । রুম ভাড়া ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।

 

যাদুঘর

প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন দেখতে যেতে পারেন নীলফামরী যাদুঘরে।

নীলফামারীতে একটি যাদুঘরও রয়েছে। সারা বছরই হাজারো মানুষের ভিড় করে যাদুঘরে । ব্রিটিশ ও ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন সেখানে যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

যেভাবে যাবেন

নীলফামারী ডিসি অফিসের পুরাতন ভবনে অবস্থিত যাদুঘরটিতে রিক্সা / অটোরিক্ষা যোগে যাওয়া যায়।

 

হরিশ্চন্দ্রের পাঠ

হরিশচন্দ্রের পাঠ বা রাজবাড়ীটি পাথর খণ্ডে পরিপূর্ণ প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের টিলা। চাড়াল কাটা নদীর তীরে প্রায় এক বিঘা জমির ওপর একটি উচু ঢিবি । ঢিবির ওপর পাঁচ খণ্ড বড় কার রংঙের পাথর রয়েছে। স্থানীয়রা বিশ্বাস করে ঢিবিটি মাটিতে ডুবে যায় আবার মাটির ওপরে উঠে আসে। 

যেভাবে যাবেন

হরিশচন্দ্রের পাঠ বা রাজবাড়ীটি নীলফামারীর জলঢাকা থানার খুটামার ইউনিয়নে অবস্থিত। নীলফামারী সদর থেকে সড়ক পথে খুটামারা হয়ে হরিশচন্দ্রের পাঠ বা রাজবাড়ীতে যাওয়া যায়।

 

ভিমের মায়ের চুলা

ভিমের মায়ের চুলা তিন দিকে উচু মাটির প্রাচীর বিষ্টেত স্থাপনা। প্রাচীরের তিনটি স্থান অপেক্ষাকৃত উচু। ভিমের মায়ের চুলার ভিতরের অংশ এবং বাহিরের অংশের তিন দিক পরিখা বেষ্টিত।

যেভাবে যাবেন

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে ভিমের মায়ের চুলা। সড়ক পথে নীলফামারী থেকে কিশোরগঞ্জ উপজেলা হয়ে ভিমের মায়ের চুলা দেখতে যাওয়া যায়।

 

নীল কুঠি

নীল কুঠি শব্দটার আমরা শুনেছি। নীল কুঠি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি, কিন্তু কখনও নীল কুঠি দেখা হয়নি, তাহলে যেতে পারেন নীলফামারীর নীল কুঠিতে। ব্রিটিশ আমলে নীল কুঠিয়ালদের কুঠি হিসেবে ব্যবহৃত নীল কুঠিটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে নীলফামারী অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ।

যেভাবে যাবেন

নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে খুব সহজেই যাওয়া যায় নীল কুঠি দেখতে।

 

ধর্মপালের রাজবাড়ী

ধর্মপালের গড়ের কাছাকাছি একটি মজা জলাশয় রয়েছে, জলাশয়ের পাড় বাধানো ঘাট এবং কয়েক ফুট উচু ঢিবি রয়েছে, এই ঢিবির ভিতরের প্রাচীরে ইট দেখেই ধারনা করা হয় এটি ধর্মপালের রাজবাড়ি। গড় ধর্মপালের কাছাকাছি নদীর তীরে ধর্মপালের রাজ প্রাসাদ ছিল।

যেভাবে যাবেন

নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে অল্প সময়ের মধ্যেই যাওয়া যায়  ধর্মপালের রাজবাড়ী।

 

কুন্দ পুকুর মাজার

এখানে মসজিদ,  হেফজখানা এবং একটি বড় পুকুর রয়েছে। এখানে প্রতিবছরই বার্ষিক ওরশ হয়। ওরশের তারিখ ৫ মাঘ। সারাদেশ থেকেই অসংখ্য দর্শক এখানে আসেন।

যেভাবে যাবেন

কুন্দুপুর মাজারটি জেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে নীলফামরী সদর থেকে কুন্দুপুর ইউনিয়নে কুন্দুপুর মাজার অবস্থিত। নীলফামারী থেকে সড়ক পথে খুব সহজেই কুন্দুপুকুর  মাজারে যাওয়া যায় ।

 

চিনি মসজিদ

শতশত দক্ষ কারিগরের পরিশ্রম আর শিল্পীর একনিষ্ঠ শ্রমের দ্বারাই ১৮৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চিনি মসজিদ। সুন্দর এ সমজিদটির গায়ে রয়েছে শংকর মর্মর পাথর। পাথরের সঙ্গে লাগানো হয়েছিল চীনা মাটির চুকড়ো যার ওজন প্রায় ২৫ টন। মসজিদের ২৭টি মিনারের মধ্যে পাঁচটি মিনার এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে।

যেভাবে যাবেন

নীলফামারী থেকে সজক পথে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেমে রিক্সা যোগে যাওয়া যায় চিনি মসজিদ। সৈয়দপুর থেকে সড়ক পথেও চিনি মসজিদ যাওয়া যায়।

         ঘুরে আসতে পারেন গাইবান্ধার দর্শণীয় স্থানগুলো

গাইবান্ধায় ভ্রমণের অনেক জায়গা রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ,বালাসীঘাট, প্রাচীন মাস্তা মসজিদ, গাইবান্ধা পৌরপার্ক, বর্ধনকুঠি, এসকেএস ইন, ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার, মীরের বাগানের ঐতিহাসিক শাহসুলতান গাজীর মসজিদ এছাড়াও দেখে আসতে পারেন শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বামনডাঙ্গার জমিদার বাড়ি, রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড প্রভৃতি।

বালাসীঘাট

যমুনার কোলঘেসে বাঁধটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। শুধু ছুটির দিনেই নয় প্রত্যেকদিনই এখানে ভ্রমণপিপাসুদের ভিড়। বন্ধুবান্ধর নিয়ে এখানে ঘুড়তে আসেন। আবার অনেকেই সপরিবারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানেই কাটিয়ে দেন।  শুধু উৎসব কিংবা দিবস নয় সারাবছরই ভ্রমনপিপাসু মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। নিজের পছন্দমেতো জায়গা থেকে দাড়িয়ে নদীর বুকে সুর্যাস্তের দৃর্শ উপভোগ করা যায়। শুধু জেলা শহর থেকে নয় সারা বাংলাদেশ থেকেই ভ্রমণপ্রিয় মানুষরা এখানে আসেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মধ্যে যাত্রী ও মালামাল পারাপারের জন্য ফেরি সার্ভিস চালু হয়। পরে ফেরিঘাটটি তিস্তামুখঘাট থেকে বালাসী ঘাটে স্থানান্তর করা হয়।

যেভাবে যাবেন-

প্রথমে বাস অথবা ট্রেনযোগে গাইবান্ধা জেলা শহরে আসতে হবে। গাইবান্ধা জেলা বাসস্ট্যান্ড হতে যাওয়ার উপায়- অটোরিক্সা, রিক্সা ও সিএনজি যোগে যাওয়া যায়। অটোরিক্সা ভাড়া-১৫০ টাকা, রিকসা ভাড়া- ৮০-১০০ টাকা।

গাইবান্ধা পৌরপার্ক-

গাইবান্ধায় রয়েছে পৌরসভার অধীন পার্ক। পার্কের পুকুর পাড়ে রয়েছে সব বয়সের মানুষের জন্যই বিনোদনের ব্যবস্থা, সকাল থেকে সন্ধ্যা দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। বিভিন্ন উৎসরের সময় দর্শনার্থীদের ভিড় সারা বছরের অন্যান্য দিনের চেয়ে আরও অনেকটাই বেড়ে যায়।          

যেভাবে যাবেন-

গাইবান্ধা জেলা বাসস্ট্যান্ড  থেকে রিকসা অথবা অটোরিকসা দিয়ে যেতে পারেন এ পৌরাপার্কে।

বর্ধনকুঠি-

গাইবান্ধার গোবিন্ধগঞ্জে কালের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে বিধ্বস্ত রাজবাড়িটি, রাজবাড়ির ভাঙা অংশ মনে করিয়ে দেয় তার প্রাচীন অবস্থার কথা। ভঙ্গুর দেওয়ালগুলি আপনাকে তার অতীতের কথাই মনে করিয়ে দিবে।

যেভাবে যাবেন-

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ হতে অটো বা সিএনজিতে করে যেতে পারেন রাজবাড়িটিতে।

এসকেএস ইন-

গাইবান্ধা শহরের অদূরে রাঁধাকৃষ্ণপুর  (তিন গাছ তল) এক সুন্দর মনোরম পরিবেশ, নয়নাভিরাম সবুজের ওপর গড়ে উঠেছে এই রিসোর্ট। সুন্দর নাম বিশিষ্ট ছোট ছোট কটেজ, বিশাল অডিটরিয়াম, সুন্দর ঝর্ণা, গাইবান্ধায় প্রথম বারের মতো আধুনিক সুমিংপুল ও আশেপাশের সবুজ সমারোহ।

যেভাবে যাবেন-

 গাইবান্ধা থেকে রিকসা, অটোরিকসা খুব সহজেই যেতে পরেন।

ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার-

গাইবান্ধা কিংবা বাংলাদেশ নয় ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারটি অবাক করেছে সারা বিশ্বকে। ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যালয়। ভবনটির ছাদ ভূমি সমতলে আর বাকি অংশটুকু মাটির নিচে অবস্থিত। ছাদটা যেন বিভিন্ন ধরনের ঘাষের মাঠ। স্থাপত্য শিল্পে এক অনবদ্য সৃষ্টিটি অবাক করেছে বিশ্বকে। ভবনটি দেখতে প্রতিদিনই হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করে। ভবনটির ভিতরের সবকিছুও দৃষ্টিন্দন।

যেভাবে যাবেন –

গাইবান্ধা থেকে রিকসা, অটোরিকসা ও মোটরসাইকেল ভাড়া করে যেতে পারেন ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারে।

 শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-

বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নে ছাইতানতোলা গ্রামে অবস্থিত বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৬ সালে। পরে এটি জাতীয়করণ হয় ১৯৭৩ সালে। বিদ্যালয়টি মোট ২.২৮৫ একর জমির ওপর অবস্থিত। এখানে রয়েছে একটি পাঁচ তলা ভবন, দুটি দ্বিতল ভবন, পাঁচটি অর্ধ দালান। ভবনগুলোতে রয়েছে একটি প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, একটি সহকারী শিক্ষকদের কক্ষ, ২২টি শ্রেণি কক্ষ, একটি সভা কক্ষ,একটি ক্লিনিক কক্ষ, একটি অতিথি কক্ষ, একটি উপকরণ কক্ষ, একটি ভৌগলিক কক্ষ, একটি কম্পিউটার কক্ষ, একটি বিজ্ঞানাগার, একটি ছাত্রাবাস ভোজনালয় প্রভৃতি।

এছাড়া রয়েছে শিশুদের জন্য বিশাল মাঠ, শহীদ মিনার, মসজিদ, পোস্ট অফিস, সরকারি ক্লিনিক, মডেল চিড়িয়াখানা ইত্যাদি।

বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১০৫৩ জন শিক্ষার্থী, ১৫ জন সরকারি ও ৫৮ জন বেসরকারি শিক্ষক রয়েছে। বিদ্যালয় চত্তরে রয়েছে দীপশিখা নামের একটি ছাত্রাবাস। যেখানে ১২০ আবাসিক শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা পরিদর্শনে আসে।

যেভাবে যাবেন-

গাইবান্দা সদর থেকে বাসে বা ট্রেন যোগে যেতে পারেন।

প্রাচীন মাস্তা মসজিদ

স্থাপত্যের এক অপার নিদর্শন মাস্তা মসজিদ। প্রাচীন এই মসজিদটির চার কোণে রয়েছে চারটি স্তম্ভ, একই আকারের তিনটি গম্বুজ  ও আছে, মসজিদটির তিনটি দরজা থাকলেও  কোন জানালা নেই । সব মিলিয়ে মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ ফুট এবং প্রস্ত প্রায় ১৬ ফুট । মসজিদটিতে এখনো এলাকার লোকজন নামাজ আদায় করে। গাইবান্ধার গোপালগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের  মাস্তা গ্রামের প্রাচীন লাল মসজিদটিই `মাস্তা  মসজিদ` নামে পরিচিত ।

যেভাবে যাবেন-

গাইবান্ধা হতে গোবিন্দগঞ্জ সেখান থেকে কামারদহ ইউনিয়নের ফাঁসিতলা বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার. উত্তরে মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে মাস্তা মসজিদ অবস্থিত। যে কোনো যানবাহন ব্যবহার করে মাস্তা মসজিদে যেতে পারেন। সবচেয়ে সহজে যেতে চাইলে সিএনজিতে যেতে পারেন।

বামনডাঙ্গার জমিদার বাড়ি-

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র গ্রামের জমিদার বাড়ির ঐতিহাসিক নিদর্শন। উত্তর জনপদের বামনডাঙ্গার এ অঞ্চলে এই জমিদারদের গোড়াপত্তন কবে হয়েছিল বা কে করেছেন সে সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। তবে কথিত আছে যে, পঞ্চদশ শতকের কোন এক সময়ে সম্রাট আকবরের আমলে পরাজিত ও রাজ্যচ্যুত গৌড় বংশীয় ব্রাহ্মণ কৃষ্ণকান্ত রায় পালিয়ে এখানে আসেন এবং বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে তার আমলেই বামনডাঙ্গার এই জমিদারদের নামডাক ছড়িয়ে পড়ে। তাদের সময়ে এই এলাকার প্রজাদের মধ্যে সর্বত্র সুখ-শান্তি এবং আনন্দ বিরাজমান ছিল। এ ছাড়া জমিদাররা সুশীল এবং ভদ্র। এ কারণেই ওই এলাকার নাম হয়েছিল সর্বানন্দ।

যেভাবে যাবেন-

গাইবান্ধা থেকে ট্রেন বা বাসে যেতে পারেন।

ভ্রমন পিপাসুদের হাট লালমনিরহাট

 

ভারত সংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাটে ভ্রমন পিপাসু মানুষের সমাগম দিনে দিনে বাড়ছে। অনেকেই বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত থেকে ভারতের সৌন্দর্য দেখতে লালমনিরহাট যান। এখানে রয়েছে মোঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, ঐতিহাসিক তুষারভান্ডার জমিদার বাড়ী, কাকীনা জমিদার বাড়ি, বুড়িমারী স্থলবন্দর, ৬ নং সেক্টর হেড কোয়ার্টার, তিন বিঘা করিডোর প্রভৃতি। এছাড়াও লালমনিরহাট জুড়ে সবুজের সমারোহ তো রয়েছেই । এ কারণে এখানে পর্যাটকরা সারা বছরই ভিড় জমান।

 

তিন বিঘা করিডোর দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা। ১৯৮৫ সালে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার ইউনিয়ন হিসেবে পরিগনিত হয়। ১৯৮৯ সালে ইউনিয়নটির শুভ উদ্বোধন হয়। এক সময় সেখানে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশীরা এক ঘণ্টা পরপর সুযোগ পেত। বর্তমানে সেই সমস্যা আর নেই। তাছাড়া বর্তমানে তিন বিঘা করিডোর এলাকাটি পরিণীত হয়েছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বয়সের মানুষকেই এখানে দেখা যায়। সারা বংলাদেশ থেকেই ভ্রমন পিপাসু মানুষরা ভিড় করে করিডোর এলাকায়। সেখানে যাতায়াতের জন্য লালমনিহাট সদর থেকে বাস সর্ভিস থাকায় সহজেই যে কেউ যেতে পারে তিন বিঘা করিডোরে।

 

নিদাড়িয়া মসজিদ

ফটো-নিদাড়িয়া মসজিদ

১১৭৬ সালে মোঘল সুবেদার মনছুর খাঁ মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি দান করেন। জনশ্রুত আছে মনছুর খাঁর দাড়ী না থাকায় মসজিদটি নিদাড়িয়া মসজিদ নামে পরিচিতি পায়। মসজিদটি দেখার জন্য সারাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সেখানে যান। এখানে যাতায়াতের জন্য সিএনজি, অটোরিক্সা এবং বাস সার্ভিস রয়েছে।

 

তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী

ফটো-তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষারভান্ডার ইউনিয়নে তুষভান্ডার জমিদার বাড়ীটি অবস্থিত। তৎকালে রাজবাড়ীতে তুষ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যজ্ঞানুষ্ঠান হতো। সংগ্রহিত তুষের স্তুপ থেকেই বাড়ীটি তুষভান্ডার নামে পরিচিতি পায়। লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ থেকে বাস যোগে সহজেই যাওয়া যায় জমিদার বড়িটিতে। বাড়ীটি দেখার জন্য সারাদেশ থেকে লোকজনের সমাগম ঘটে।

 

কাকিনা জমিদার বাড়ী

ফটো-কাকিনা জমিদার বাড়ী

কাকিনা জমিদার ছিলেন বৃহত্তর রংপুর জেলার অন্যতম জমিদার। কাকিনা জমিদারী কাকিনা রাজবাড়ী নামে পরিচিত ছিল। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জজেলায় গড়ে ওঠা জমিদার বাড়ীটি আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে জমিদারের ‘হাওয়াখানা’। জমিদার বাড়ীতে সড়ক এবং রেল পথেও যাতায়াত করা যায়। সড়ক পথে যেতে হলে লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী স্থল বন্দর যাওয়ার সময় কাকিনা বাসস্ট্যান্ডের পাশেই রয়েছে জমিদার বাড়ির ভগ্নাবশেষ। রেলপথে যেতে হলে আপনাকে লালমনিরহাট জেলার কাকিনা রেল স্টেশনে নেমে ২ কিলোমিটার দুরত্বে কাকিনা বাসস্ট্যান্ডে যেত হবে। বাস স্ট্যান্ডের পাশেই রয়েছে জমিদার বাড়ীটি।

 

বুড়িমারী স্থলবন্দর

ফটো-বুড়িমারী স্থলবন্দর

বুড়িমারী স্থল বন্দর বাংলাদেশের শেষ প্রান্তে অবস্থিত লালমনিরহাট জেলার অন্যতম স্থল বন্দর । দেশের শেষ প্রান্তের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই সেখানে যান। সড়ক পথ এবং রেল পথেও বন্দরটিতে যাওয়া যায়।

 

নং সেক্টর বুড়িমারী

ছবি-৬ নং সেক্টর হেড কোয়ার্টার বুড়িমারী

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সেক্টর হেড কোয়ার্টারগুলোর মধ্যে অন্যতম ৬ নং সেক্টর হেড কোয়ার্টার। সেক্টর হেড কোয়ার্টাটি তৎকালীন বুড়িমারী হাসর উদ্দিন দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়। সেক্টর ভবনের নিকটে নির্মান করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ। ঐতিহাসিক জায়াগাটি দেখতে দেশপ্রেমীরা সেখানে যান । সেখানে যাতায়াতের জন্য বাস সার্ভিস রয়েছে।

                       দেখে আসুন পঞ্চগড়ের সৌন্দর্য

প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে প্রাচীন জনপদ পঞ্চগড় ও সংলগ্ন এলাকায়। ইতিহাস সমৃদ্ধ এই জনপদটিতে ছড়িয়ে আছে প্রাচীন সভ্যতার বহু মূল্যবান সম্পদ। অবসরে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে। এত সুন্দর জায়গা বাংলাদেশে খুব কমই আছে। একটি শহরকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে উপাদান প্রয়োজন তার সবই পঞ্চগড় জেলায় বিদ্যমান। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পঞ্চগড় হতে পারে এক অসাধারণ জায়গা। পঞ্চগড়ে ঢোকার সাথে সাথে চোখ জুড়িয়ে যাবে ফসলের মাঠ দেখে।

পঞ্চগড় থেকে হেমন্ত ও শীতকালে পর্যক্ষেণ করা যায় কাঞ্চনজংঘার অপরূপ দৃশ্য, রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র রকস মিউজিয়াম, সমতল ভূমিতে চা বাগান, বার আউলিয়ার মাজার শরীফ, মির্জাপুর শাহী মসজিদ, মহারাজার দিঘী , ভিতরগড় দুর্গনগরী, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, ভিতরগড়, মিরগড়, এশিয়ান হাইওয়ে, গোলকধাম মন্দির, তেঁতুলিয়া ডাক-বাংলো, সেখান থেকে দেখে আসুন হিমালয় আর এভারেস্ট।

ঢাকা থেকে হানিফ কিংবা নাবিল পরিবহনে যেতে পারেন পঞ্চগড়। ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। রয়েছে গ্রীন লাইন, আগমনী, টি-আর ট্র্যাভেলসের এসিবাস। ভাড়া পড়বে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এই বাসগুলো যায় রংপুর পর্যন্ত। রংপুর থেকে পঞ্চগড়ে যেতে হবে আলাদা পরিবহনে ।

বিভিন্ন স্থানে বেড়ানোর জন্য পঞ্চগড় শহড়ের কেন্দ্রীয় বাসস্টেশন অথবা শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে কার, মাইক্রো ভাড়া করতে পারেন। সারা দিনের জন্য রিজার্ভ কারের ভাড়া পড়বে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা।

কোথায় থাকবেন

পঞ্চগড় সার্কিট হাউজ, ডিসি কটেজ, পঞ্চগড়, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। রয়েছে চিনিকল রেস্ট হাউজ, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, বাংলাবান্ধা ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্ণার, দেবীগঞ্জ কৃষি ফার্ম গেস্ট হাউজ, বোদা ডাকবাংলো, রেশম প্রকল্প রেস্ট হাউজ ইত্যাদি।

বার আউলিয়া মাজার শরীফ

বার আউলিয়া মাজার শরীফ পঞ্চগড় উপজেলা সদর হতে ৯ কি.মি. উত্তর-পূর্বে মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ ভূমিতে অবস্থিত। বার জন ওলী খাজা বাবার নির্দেশে চট্টগ্রামসহ পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে আস্তানা গড়ে তুলে ইসলাম প্রচার শুরু করেন, পরে স্থল পথে রওনা হয়ে ইসলাম প্রচার করতে করতে উত্তরবঙ্গের শেষ প্রান্ত এসে পৌঁছান এবং পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়ায় আস্তানা গড়ে তুলে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। আটোয়ারীর মাটিকে পুণ্য ভূমিতে পরিণত করে সময়ের বিবর্তনে ওলীদের এখানেই সমাহিত করা হয়। গড়ে ওঠে বার আউলিয়া মাজার শরীফ।

ঢাকা থেকে বাসযোগে আটোয়ারী উপজেলা বাসষ্ট্যান্ড। আটোয়ারী থেকে বাসযোগে মির্জাপুর ৬ কিলোমিটার। মির্জাপুর হতে রিক্সা/ভ্যানযোগে ৩ কিলোমিটার দুরত্বে বার আউলিয়া মাজার শরীফ।

মির্জাপুর শাহী মসজিদ

আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে মির্জাপুর শাহী মসজিদটি অবস্থিত।

ফলকের ভাষা ও লিপি অনুযায়ী ধারণা করা হয় মোঘল সম্রা্ট শাহ আলমের রাজত্বকালে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। মসজিদটির দেওয়ালে খোদাই করা রয়েছে টেরাকোটা ফুল এবং লতাপাতার নক্সা ।

মসজিদের সন্মুখভাগে আয়তাকার টেরাকোটার নক্সাসমুহের একটির সাথে অপরটির মিল নেই, প্রত্যেকটি পৃথক পৃথক। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট, প্রস্থ ২৫ ফুট এবং এক সারিতে ০৩ (তিন) টি গম্বুজ আছে।

মসজিদের নির্মাণ শৈলীর নিপুনতা ও দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে।

ঢাকা থেকে বাসযোগে আটোয়ারী উপজেলা বাসষ্ট্যান্ড। আটোয়ারী থেকে বাসযোগে মির্জাপুরের দুরত্ব ৬ কিলোমিটার। মির্জাপুর হতে রিক্সা/ভ্যানযোগে ১কিলোমিটার দুরত্বে মির্জাপুর শাহী মসজিদ।

 

মহারাজার দিঘী

মহারাজার দিঘী পঞ্চগড় শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত। পাড়সহ এর আয়তন প্রায় ৮০০ × ৪০০ গজ। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস পানির গভীরতা প্রায় ৪০ শ ফুট। দিঘীতে রয়েছে মোট ১০টি ঘাট। বিশাল দিঘীর চারপাশে রয়েছে অনেক গাছগাছালির সবুজের কারুকার্য, স্নিগ্ধ সমীরণ, সৌম্য শান্ত পরিবেশ যা এখনো সবার কাছে বিরল মনে হয়।

পঞ্চগড় শহর থেকে বাস/রিক্সা/ভ্যানযেগে যেতে পারেন দুরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার ।

 

রকস্ মিউজিয়াম

পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ চত্ত্বরে অবস্থিত রকস্ মিউজিয়ামটি । মিউজিয়ামে পঞ্চগড় জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক ও লোকজ সংগ্রহ রয়েছে প্রায় সহস্রাধিক।

পঞ্চগড় জেলার সরকারি মহিলা কলেজে রয়েছে দেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘর। পাথরের জাদুঘরটি ‘রকস মিউজিয়াম’ নামেই পরিচিত। বিচিত্রকে স্বচক্ষে দেখায় যাদের আগ্রহ তারা ইচ্ছে করলে ঘুরে আসতে পারে এই পাথুরে জাদুঘর।

রকস মিউজিয়ামটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নতুন এবং পুরনো পাথর। প্রতিটি পাথরের পাশেই আলাদা আলাদা করে লেখা আছে পাথরটি কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, কারা সংগ্রহ করেছেন তার বর্ণনা। মিউজিয়ামটিতে নুড়ি পাথর, পাললিক শিলা, আগ্নেয় শিলা, সিলিকা নুড়ি ও সিলিকা বালি, হলুদ ও গাঢ় হলুদ বালি, খনিজবারি, কাঁচবালি, লাইমস্টোন, পলি ও কুমোর মাটি, কঠিন শিলাসহ আরও অনেক ধরনের প্রত্নসম্পদ রয়েছে। আরও রয়েছে প্রায় হাজার বছর আগের ডিঙ্গি নৌকা।

ঢাকার শ্যামলিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পঞ্চগড় যাওয়ার গাড়ি পাওয়া যায় ভাড়া লাগবে প্রায় ৫০০ টাকা এবং পঞ্চগড় পৌছতে সময় লাগবে ১২ ঘন্টা। পঞ্চগড়ে বাস থেকে নামার পড় রিক্সায় যেতে পারেন পাথরের জাদুঘর, রিক্সা ভাড়া লাগবে ২টাকা, পাথরের জাদুঘর অথবা রক্সমিউজিয়াম বললে অনেকে চিনতে পারবেনা তাই বলবেন সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজের দুটি ফটক আছে, দূরের ফটক দিয়ে ঢুকলেই পেয়ে যাবেন পাথরের জাদুঘর।

পঞ্চগড়ে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে, একটু খোঁজ করলেই পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের হোটেল।

পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রিক্সাযোগে রকস্ মিউজিয়ামটি অবস্থিত যাওয়া যায়।

 

ভিতরগড় দুর্গনগরী

পঞ্চগড় উপজেলা সদর দপ্তর হতে প্রায় ১৫ (পনের) কিলোমিটার দূরত্বে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত প্রাচীন যুগের একটি বিরাত কীর্তি। গড় ও নগরীর অবস্থান প্রায় ১২ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে। ভিতরগড় দুর্গে একটি বড় দিঘী ও কয়েকটি ছোট ছোট দীঘি আছে এবং এর ভিতরে মন্দির, প্রসাদ ও ইমারতের এবং বাইরে পরিখা ও প্রাচীর এখনো দেখা যায়।

পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হতে তেঁতুলিয়াগামী বাসযোগে বোর্ড অফিস, বোর্ড অফিস থেকে রিক্সা/ভ্যান যোগে ভিতরগড় দুর্গনগরীর দূরত্ব ০৫ কিলোমিটার।

 

বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট

বাংলাদেশের উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া হিমালয়ের কোলঘেঁষে অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্বোত্তরের স্থান বাংলাবান্ধা জিরো (০) পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এটি বাংলাদেশের একমাত্র স্থলবন্দর যার মাধ্যমে তিনটি দেশের সাথে সুদৃঢ় যোগাযোগ গড়ে উঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী পরিবহনে পঞ্চগড়, পঞ্চগড় থেকে শহর থেকে ৫৫ কি.মি দূরে বাংলাবান্ধা। পঞ্চগড় শহর থেকে লোকাল বাস, প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস যোগে বাংলাবান্ধা যাওয়া যায়।

 

ভিতরগড়

পঞ্চগড় শহর থেকে ১০ মাইল উত্তরে বাংলাদেশ- ভারত সীমান্ত বরাবর অবস্থিত এই গড়। আয়তনের দিক থেকে ভিতরগড় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গড়। প্রায় ১২ বর্গমাইল স্থান জুড়ে ভিতরগড়ের অবস্থান।

ভিতরগড় দূর্গ নির্মাণের সঠিক কাল নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ভিতরগড় আর ভিতরগড় দূর্গ একই সময়ে নির্মিত হয়নি। দূর্গের প্রাথমিক কাঠামোটি পৃথীরাজ কর্তৃক আনুমানিক ৬ষ্ঠ শতকের দিকেই নির্মিত হয় বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা হতে ১৫ কি.মি দূরে ১ নং অমরখানা ইউনিয়নে এই ভিতরগড়ের অবস্থান। এই ভিতর গড় ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন। রিক্সা/ভ্যান যোগে যাওয়া যায় ভিতর গড়।

 

মিরগড়

যে ৫টি গড় নিয়ে ‘পঞ্চগড়’ এর নামকরণ করা হয়েছে তার মধ্যে মিরগড় অন্যতম। এই গড়টির অধিকাংশ অংশই এখন ভারতের মধ্যে চলে গেছে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা হতে ৫ কি. মি. দক্ষিণে ধাক্কামারা ইউনিয়নে অবস্থিত ভিতর গড়। পঞ্চগড় সদর উপজেলা হতে রি্ক্সা/ ভ্যান যোগে যাওয়া যায় এই গড়ে।

 

গোলকধাম মন্দির

পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাংগা ইউনিয়নের শালডাংগা গ্রামে অবস্থিত গোলকধাম মন্দির। মন্দিরটি নির্মিত হয় ১৮৪৬ সালে। পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা সদর হতে প্রায় ১২ কি. মি. উত্তর পশ্চিমে গোলকধাম মন্দিরটি অবস্থিত।

মন্দিরটি অষ্টাদশ শতকের স্থাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শণ। গ্রীক পদ্ধতির অনুরূপ এর স্থাপত্য কৌশল ।

পঞ্চগড় জেলা থকে বাস যোগে দেবীগঞ্জ উপজেলা। অতপর রিক্সা/ ভ্যান যোগে শালডাংগা ইউনিয়নের শালডাংগা গ্রামে যাওয়া যায়। দেবীগঞ্জ উপজেলা সদর

 

তেঁতুলিয়া ডাক-বাংলো

পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের ঐতিহাসিক ডাক বাংলোর নির্মাণ কৌশল অনেকটা ভিক্টোরিয়ান ধাচের। জানা যায়, এটি নির্মাণ করেছিলেন কুচবিহারের রাজা । তেঁতুলিয়া ডাক-বাংলোর পাশাপাশি নির্মিত রয়েছে পিকনিক কর্ণার। উঁচুতে ডাক-বাংলো এবং পিকনিক কর্নার মহানন্দা নদীর তীর ঘেঁষা ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন সুউচ্চ গড়ের উপর সাধারণ ভূমি হতে প্রায় ১৫ হতে ২০ মিটার অবস্থিত। সেখান থেকে উপভোগ করা যায় হেমন্ত ও শীতকালে কাঞ্চন জংঘার সৌন্দর্য ।

পঞ্চগড় থেকে বাসযোগে তেঁতুলিয়া অতপর রিক্সা অথবা ভ্যান যোগে তেঁতুলিয়া ডাক-বাংলোর দুরত্ব প্রায় ৫৫ কি.মি.।

 

সমতল ভূমির চা বাগানঃ

সাম্প্রতিকালে পঞ্চগড় জেলা সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলায় শুরু করা হয়েছে সমতল ভূমিতে চা চাষাবাদ। বাংলাদেশে সমতল ভূমিতে এটাই প্রথম চা চাষাবাদ।

চা চাষে এগিয়ে এসেছে বিশেষভাবে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট, ডাহুক টি এস্টেট, স্যালিলেন টি এস্টেট, তেঁতুলিয়া টি কোম্পানি প্রভৃতি ।

 

দেখে আসুন হিমালয় আর এভারেস্ট

পঞ্চগড় জেলার উত্তর দিকে শীত মৌসুমে মেঘমুক্ত এবং কুয়াশাবিহীন দিনে তাকালে চোখে পড়ে হিমালয় গিরিমালার নয়নাভিরাম দৃশ্য। তবে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের পাশ ঘেঁষে প্রবাহিত মহানন্দা নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়ালে সূর্যের বর্ণিল আলোকচ্ছ্বটায় উদ্ভাসিত এভারেস্ট শৃঙ্গ দেখা যায় ।

ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের দূরত্ব ৪৫৭ কিলোমিটার। আর পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। তেঁতুলিয়া থেকে বাংলাবান্ধা ১৭ কিলোমিটার। দেশের যে কোনো স্থান থেকে সড়ক, রেল ও বিমানে করে পঞ্চগড় যাওয়া যায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সরাসরি এখানে আসতে পারেন।

তেঁতুলিয়া বেড়াতে যেতে হলে আপনাকে পঞ্চগড় শহরে থাকার প্রস্তুতি নিয়েই যেতে হবে। তবে পূর্বানুমতি নিয়ে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে রাত্রিযাপন করতে পারেন। এজন্য আগে ভাগেই আপনাকে সিট বুক করতে হবে। এছাড়া জেলা পরিষদের একটি বাংলো রয়েছে। সেখানে থাকতেও আগাম বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। তবে শীত মৌসুমে এগুলোতে সিট পাওয়া দুষ্কর। রাতযাপনের জন্য পঞ্চগড় জেলা শহরে বেশকিছু ভালো আবাসিক হোটেল ও রেস্ট হাউস রয়েছে। এসি, নন-এসি এ দু’ধরনের রুম পাওয়া যায়। ভাড়াও তুলনামূলক কম।

রাজধানী থেকে পঞ্চগড়ের সরাসরি বাস পাবেন। হানিফ, শ্যামলীসহ বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস পঞ্চগড় যায়। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ায় বাস চলাচল করে সারাদিন। ভাড়া পড়বে ৬০ থেকে ১০০ টাকা। এছাড়াও ঢাকা থেকে তেঁতুলিয়ায় সরাসরি চলাচল করে হানিফ ও বাবুল পরিবহনের বাস। তেঁতুলিয়ায় নেমে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, চা বাগান বা আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরির জন্য স্কুটার ভাড়া করাই ভালো। তবে মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়েও ঘুরতে পারেন।

পঞ্চগড়ে অনেক হোটেল আছে, ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। এসি কক্ষ পেয়ে যাবেন এক হাজার টাকার মধ্যে ।

   স্বপ্নপুরীর দেশ দিনাজপুরে একদিন 

ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে দিনাজপুর হতে পারে প্রথম পছন্দ। পর‌্যটনসমৃদ্ধ এ জেলায় গেলে আপনি একসঙ্গে দেখতে পারবেন বহু কিছু। ঐতিহাসিক নয়াবাদ মসজিদ, ঐতিহ্যবাহী কান্তজিউ মন্দির, স্বপ্নপুরির মতো নয়াভিরাম বিভিন্ন স্পট, অলৌকিক রামসাগর দিঘী, রাজবাড়ী, রামসাগরসহ আরও কত কী। 

প্রাচীন সাহিত্য ও সংস্কৃতির লীলাভূমি দিনাজপুরের ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এ জেলার প্রতিটি জনপদ যেন ইতিহাসের এক একটি বাঁক। বহু ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী ফরিদপুর। পর‌্যটকরা সেখানে গেলে এসব জানতে পারবেন। সবুজ গাছপালায় ঘেরা ফরিদপুরের সবুজ প্রকৃতি সবাইকে টানে। এই জেলার লিচু ও সুগন্ধী চাল বেশ বিখ্যাত। প্রকৃতির মত এখানকার মানুষগুলোও অতিথি পরায়ন।

কান্তজিউ মন্দির

কান্তনগর এলাকার কান্তজিউ মন্দিরটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইট দিয়ে তৈরি। এ মন্দিরে রয়েছে বাংলাদেশের সর্বোৎকৃষ্ট টেরাকোটা শিল্পের নির্দশন। পৌরানিক কাহিনীসমূহ পোড়ামাটির অলঙ্করণে দেয়ালের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ১৭২২ সালে দিনাজপুরের মহারাজ প্রাণনাথ এ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে মহারাজের দত্তক ছেলে মহারাজ রামনাথ মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। মন্দিরের শিখর থেকে আদি নয়টি শিখর ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মহারাজা গিরিজানাথ বাহাদুর ধ্বংস হয়ে যাওয়া নয়টি চূড়া বাদে মন্দিরটির ব্যাপক পুনর্গঠন করেন। পিরামিড আকৃতির মন্দিরটি তিনটি ধাপে উপরে উঠে গেছে এবং তিন ধাপের কোণগুলির উপরে মোট নয়টি অলংকৃত শিখর বা রত্ন রয়েছে। যেকোনো দিক থেকেই পূজারিরা ভেতরের পবিত্র স্থানে রাখা দেবমূর্তিকে দেখতে মন্দিরের চারদিকে খোলা খিলান পথ রয়েছে।পাথরের ভিত্তির উপর দাঁড়ানো মন্দিরটির উচ্চতা ৫০ ফুটেরও বেশি। নিচতলার প্রার্থনা কক্ষের চারদিকে মন্দিরে মোট চারটি আয়তাকার বারান্দা রয়েছে। নিচতলার চার প্রকোষ্ঠের বাইরে মোট ২১টি খিলান দরজা আছে, আর দ্বিতীয় তলায় এ খিলান দরজার সংখ্যা ২৭টি,  তৃতীয় তলার মাত্র তিনটি প্রবেশ দরজা এবং তিনটি জানালা রয়েছে। যা উপরে উঠে গেছে। এঁকেবেঁকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় উঠে গেছে ২‘-৩‘‘ প্রশস্ত সংর্কীণ সিঁড়ি।

দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং কাহারোল উপজেলা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে সুন্দরপুর ইউনিয়নে মন্দিরের পাশেই ঢেঁপা নদীর তীরে কান্তজিউ মন্দিরটি অবস্থিত।

স্বপ্নপুরী

স্বপ্নপুরীর প্রবেশমুখে স্থাপিত প্রস্তর নির্মিত সাদা ডানাবিশিষ্ট দুটি সুবিশাল পরী পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। সপ্নপুরীতে রয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পশু-পাখির ভাষ্কর্য, কৃত্রিম পাহাড়, কৃত্রিম ঝর্ণা এবং ইট-সিমেন্টে নির্মিত বাংলাদেশের এক সুবিশাল মানচিত্র। রয়েছে কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, জীবন্ত পশুপাখীদের চিড়িয়াখানা, শিশুদের জন্য পার্ক, দোলনা, বায়োস্কোপসহ আরো রয়েছে সারিসারি সবুজ দেবদারু গাছের মনোলোভা সৌন্দর্য আর বিস্তীর্ণ ঝিলের তীরে ফুটন্ত গোলাপ বাগানের মাঝখানে স্থাপিত অপরূপ সুন্দর “নিশিপদ্ম”। আরও রয়েছে বিশাল দিঘিতে স্পিডবোট ও ময়ূরপঙ্খীডানাও। দুই ঘোড়া চালিত টমটম, স্বচ্ছ পানির ফোয়ারার কয়েকটি ফুল বাগান। স্বপ্নপুরী হচ্ছে পরিপূর্ণ একটি বিনোদনকেন্দ্র। একবার স্বপ্নপুরীতে গেলে সত্যিই আপনি স্বপ্নের মাঝে হারিয়ে যাবেন।

স্বপ্নপূরীর প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি বিশ টাকা। তবে পার্কিং ফি এর বাইরে। স্বপ্নপুরীর বাংলো ভাড়া নীলপরী তিনশ’ টাকা (প্রতি ডবল রুম), রজনীগন্ধা চারশ’ টাকা (প্রতি ডবল রুম), নিশি পদ্ম পনের‘ টাকা (তিন রুমসহ বাংলো), চাঁদনী পাচশত টাকা (প্রতি ডবল রুম), সন্ধ্যা তারা আকাশ থেকে তেরশ টাকা (প্রতি ডবল নন এসি ও এসি রুম)। ঢাকা থেকেও স্বপ্নপুরীর মোটেল বা বাংলো বুকিং করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন হোটেলের সফিনা, ১৫২ হাজী ওসমান গনি রোড, আলুবাজার ঢাকা। ফোন : ৯৫৫৪৬৩০-৯৫৬২১৩০।

দিনাজপুর শহর থেকে ৫২ কিমি দক্ষিণে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে স্বপ্নপুরী অবস্থিত। বাসযোগে যাওয়া যেতে পারে অথবা রেলযোগে ফুলবাড়ী রেল স্টেশনে নেমে অটোরিক্সায় যাওয়া যায়। ফুলবাড়ি উপজেলা শহর থেকে স্বপ্নপুরীর দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। দিনাজপুর থেকে ফুলবাড়ি আফতাবগঞ্জহাট হয়ে সম্পূর্ণ পাকা রাস্তা দিয়ে এখানে পৌঁছানো যায়।

রাজবাড়ী

১৬০৮ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত রাজবাড়ীটি ছিল বৃহৎ দিনাজপুর জেলার ঐশ্বর্য্যের প্রতীক। ধীরে ধীরে রাজবাড়ী গড়ে ওঠেছিল তিলোত্তমা হিসেবে। এটি বর্তমানে বিলুপ্ত জমিদারী কীর্তির ধ্বংসাবশেষ মাত্র। রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থাপনাসমূহ হলো-আয়নামহল, রাণী মহল, কুমার মহল, আটচালা ঘর, লক্ষ্মী ঘর, আতুর ঘর, রাণী পুকুর, চাঁপা তলার দিঘী, ঠাকুর বাড়ী, কালীয়া জিউ মন্দির।

দিনাজপুর শহরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁওগামী মহাসড়কের চিরিরবন্দর সংযোগ সড়কের মোড় থেকে অটোরিকশা যোগে দিনাজপুর রাজবাড়ী যাওয়া যায়।

রাম সাগর দিঘী

কৃষকদের সেচ সুবিধা, প্রজাদের পানির কষ্ট দূরীকরণ এবং দূর্ভিক্ষপীড়িত প্রজাদের কাজের বিনিময়ে খাদ্যের সংস্থান হিসেবেই রাজা রামনাথের আমলে এ দিঘী খনন করা হয়। তার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। পাড়ভূমিসহ দিঘির মোট আয়তন ৪,৩৭,৪৯২ বর্গমিটার। জলভাগের দৈর্ঘ্য ১০৩১ মিটার, প্রস্থ ৩৬৪ মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ৯ মিটার। সর্বোচ্চ পাড়ের উচ্চতা প্রায় ১৩.৫০মিটার। দিঘিটি খনন করতে তৎকালীন প্রায় ৩০,০০০টাকা এবং ১৫লাখ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছিল।

দিনাজপুর শহরের কেন্দ্র থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দিনাজপুরের মহারাজদের অন্যতম কীর্তি রামসাগর দিঘী। দিনাজপুর সদর থেকে অটোরিক্সা যোগে রামসাগর দিঘি যায়া যায়।

নয়াবাদ মসজিদ

মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১.১৫ বিঘা জমির উপর। মসজিদের প্রবেশদ্বারের ওপর ফারসি ভাষায় রচিত লিপি থেকে জানা যায় ১২০০ বাংলা সনে (১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। আয়তাকার মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট । তিনটি অর্ধগোলাকৃতির গম্বুজের মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়। গম্বুজদ্বয় বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত। মসজিদের চারকোণায় রয়েছে চারটি টাওয়ার। টাওয়ারগুলি অষ্টভুজাকৃতির। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১২.৪৫ মিটার এবং প্রস্থ ৫.৫ মিটার। মসজিদে প্রবেশের জন্য পৃর্বদিকে রয়েছে তিনটি খিলান। মাঝের খিলানের উচ্চতা ১.৯৫ মিটার, প্রস্থ ১.১৫ মিটার। মসজিদের ভিতরে পশ্চিম দিকে রয়েছে তিনটি মেহরাব। মাঝখানের মেহরাব দুটি অপেক্ষাকৃত বড়। মসজিদের সমস্ত দেয়াল জুড়ে রয়েছে আয়তাকার বহু পোড়ামাটির ফলক। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক মসজিদটি সংস্কার করে সামনে একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেছে।

নয়াবাদ মসজিদটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ গ্রামে । নয়াবাদ গ্রামটি জেলা সদর থেকে ২০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে ঢেপা নদীর পশ্চিম তীরে এর অবস্থিত।

লিচু

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা দিনাজপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের সেরা লিচু উৎপন্ন হয় দিনাজপুরে। এ জেলায় মাদ্রাজী, বোম্বাই, বেদানা ও চায়না-৩ ও অরো অনেক জাতের লিচু উৎপন্ন হয়। জেলায় বেশি লিচু উৎপাদন হয় -কসবা, সৈয়দপুর, মাসিমপুর,  মাহমুদপুর, নশিপুর, জযদেবপুরে। বিরল এলাকার- মাধববাটি, রসুর শাহ পুর ,রানী পুকুর , মংগলপুর, মাটিআন দিঘী, আজিমপুর, লক্ষীপুর, জগতপুর , রাজুরিয়ায় রয়েছে কয়েকশ’ লিচু বাগান।

লিচুর হাট দেখতে চাইলে যেতে পারেন দিনাজপুর সদরের- কালিতলা ,মাসিমপুর, পুলহাট । বিরলের- মাধববাটি, চিরির বন্দরের- মাদারগঞ্জ হাট  এবং বীরগঞ্জের বীরগঞ্জহাট। এসব বাজার থেকেই সারাদেশে লিচু বিপনন হয়ে থাকে।

নদী

দিনাপুর গেলে আপনি নৌ ভ্রমণের স্বাদও নিতে পারবেন। দিনাজপুরের করতোয়া, আত্রাই, কাঁকড়া, ঢেপা,  পূনর্ভবা , গর্ভেশ্বরী, ছোট যমুনা,  ইছামতি, ভূল্লী, পাথরঘাটা ভেলামতিতে রয়েছে নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা। ভ্রমণপিয়াসুরা দিনভর বেড়ানো শেষে বিকালে নৌভ্রমণে গিয়ে ক্লান্তি দূর করে থাকে।

বিল

দিনাজপুরে রয়েছে আমইর বিল, চেংগন বিল, বাজনিয়া বিল, ঝেড়ঝেরিয়া বিল, হাস বিল, কাঞ্চন বিল, লাল বিল, পয়সা বিলসহ বেশ কয়েকটি জলাশয়। যেখানে পানকৌরি এসে ভিড় করে। মাছরাঙ্গার মাথা পানিতে চুবিয়ে গোসলের নয়াভিরাম দৃশ্য দেখা যায় এসব বিলে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে দিনাজপুর যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী বাসগুলো সাধারণত ছাড়ে গাবতলী, কল্যাণপুর ও উত্তরা থেকে। নাবিল পরিবহনের এসি বাসে ভাড়া ৯০০ টাকা। হানিফ এন্টারপ্রাইজে যেতে চাইলে ফোন করতে পারেন ৮০১৩৭১৪, ৮০১৫৩৬৮, এসআর ট্রাভেলসের তথ্য জানতে ফোন করুন ৮০১৩৭৯৩, ৮০১৯৩১২এই নম্বরগুলিতে। আর ট্রেনে চরে যেতে চাইলে কমলাপুর থেকে একতা এক্সপ্রেস ও দ্রুতজান এক্সপ্রেসে যেতে পারেন। ট্রেন দুটি যথাক্রমে সকাল ১০ টায় এবং সন্ধ্যা ৭.৪০ দিনাজপুারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি