ঢাকা, শুক্রবার   ০৮ নভেম্বর ২০২৪

চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা, অবরুদ্ধ অসহায় পরিবার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৯:০৭, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ১৯:০৯, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইট-ত্রিপল দিয়ে চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় এক এতিম অসহায় পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। 

লক্ষ্মীপুরে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের পদ্মপুকুর পাড় বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, প্রায় ৩৫ বছর ধরে তারা সাড়ে ৪ ফুটের একটি পথ ব্যবহার করে আসছেন।  এক বছর আগে প্রবাস ফেরত হারুনুর রশিদ ও তার ভাই আমির হোসেন বাচ্চু ওই পথটি বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে সবাইকে মামলা-হামলার হুমকি দেয় তারা।

জানা গেছে, পদ্মপুকুরপাড় বাড়ির মৃত মোখলেছুর রহমানের ৬ ছেলে। পর্যায়ক্রমে সকলেই পৃথক বসতঘর নির্মাণ করেন। তারাসহ ওই বাড়ির অন্যান্য পরিবারগুলোর জন্য পূর্বপুরুষের সময়কাল থেকে একটি পথ ছিল। এটি যৌথ পথ হিসেবে সবাই ব্যবহার করতো। মোখলেছুর রহমানের দ্বিতীয় ছেলে নাছির উদ্দিন মারা যান। নাছিরের সংসারে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সম্প্রতি তার ছেলে রবিন বিদেশ যায়। রবিন ও তার মা দুরবস্থার মধ্য দিয়ে কোনভাবে বাড়িতে বসতের জন্য একটি পাকাভবন নির্মাণ করেন। ওই ভবনটি নির্মাণ নিয়ে রবিনের চাচা হারুন ও বাচ্চু বাধা দেয়। অসহায়  রবিন এই অবস্থায় কোনওরকমে ভবনটি নির্মাণ কাজ করেন। 

এরমধ্যেই জমি পাওনা দাবি করে হারুন ও বাচ্চু প্রতিহিংসাবসত তাদের সদর দরজার সামনের পথে ইট ও ত্রিপল দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। 

এনিয়ে রবিন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালত সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। সহকারী কমিশনার ঘটনাটি তদন্তের জন্য দত্তপাড়া ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করেন। পরে তার দেওয়া প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। এতে মৃত নাছির উদ্দিনের পরিবার নিরুপায় হয়ে সাংবাদিকদের স্বরণাপন্ন হয়। গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থল গিয়ে দেখতে পায় পথটি সম্পুর্ণ পৃথক রয়েছে। পরিবারটির ঘর থেকে বের হওয়ার পথটি হারুন ও বাচ্চু জোরপূর্বক বন্ধ করে দিয়েছে।

ভূক্তভোগী রবিনের বোন ফারজানা আক্তার বলেন, "পথ বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। বাসা থেকে বের হওয়ার কোন পথ নেই। পেছনের দরজা ব্যবহার করে অন্যের জমি দিয়ে কোনভাবে চলাচল করতে হচ্ছে। পথটি সবার জন্য উম্মুক্ত ছিল। হারুন ও বাচ্চু চাচা জোরপূর্বক পথটি বন্ধ করে দিয়েছে। পথটি উম্মুক্ত করে আমাদের চলাচল স্বাভাবিক করতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।"

অভিযুক্ত হারুনুর রশিদ ও আমির হোসেন বাচ্চু জানান, তারা পথের ওপর জমি পাওনা রয়েছে। এজন্যই তারা পথ বন্ধ করে দিয়েছে। 

তবে মৃত নাছির উদ্দিনের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন, ছোট ভাই শহীদ উদ্দিন ও সালাহউদ্দিন মানিক জানায়, সাড়ে ৪ ফুটের পথটি প্রায় ৩০ বছর ধরে বাড়ির সবাই ব্যবহার করে আসছে। সবার সম্মতিক্রমেই পথটি রাখা হয়। কিন্তু বাচ্চু ও হারুন পথটি বন্ধ করে দিয়ে অমানবিককাণ্ড ঘটিয়েছেন। 

বাড়ি থেকে সবার বের হওয়ার পথ রয়েছে। এখন শুধু রবিনরাই পথ পাচ্ছে না। তারা অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। 

ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ারা আক্তার বলেন, "উপজেলা ভূমি অফিস থেকে আমার কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে- চলাচলের পথটি রেকর্ডভূক্ত কি না। আমি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছি। সেখানে তালিকাভূক্ত পথ নেই। ‘তবে বাড়ির মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পথটি ব্যবহার করেছে। এটি সমঝোতার বিষয়। পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমঝোতা করে পথটি উম্মুক্ত করা সম্ভব।"    

এমএম//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি