চাকরিতে যোগ দেয়া হলো না প্রীতির, বুলেট কেড়ে নিল স্বপ্ন
প্রকাশিত : ১৮:৪৬, ২৫ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ১৮:৫১, ২৫ মার্চ ২০২২
বাবা স্বল্প বেতনে চাকরি করতেন। তাই পরিবারের হাল ধরতেই সামিয়া আফনান প্রীতির এপ্রিলেই একটি চাকরিতে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না। ঘাতকের বুলেট তার স্বপ্ন ভেঙে খান খান করে দিল।
অভাবের সংসারে তার ছোট ভাই ছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী, আর সে নিজেও এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু ঢাকার শাহজাহানপুরে বৃহস্পতিবার রাতে এক আওয়ামী লীগ নেতার মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে চালানো গুলিতে প্রীতির মৃত্যুতে তছনছ হয়ে গেছে সব স্বপ্ন।
সন্তান হারিয়ে পাগল প্রায় বাবা। শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে বাবা জামাল উদ্দিন করছিলেন আহাজারি। তিনি বলেন, বদরুন্নেছা কলেজ থেকে আমার মেয়েটা এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল, কিন্তু ফলাফল খারাপ হয়। আবার দেবে ঠিক করেছিল। কথা ছিল এপ্রিলে ১৫ হাজার টাকা বেতনে একটা কোম্পানিতে চাকরিতে যোগ দেবে। পরিবারের হাল ধরবে। দিন এনে দিন খাই; ভাগ্যের চাকা এভাবেই ভেঙে গেল।
স্ত্রী ছেলে মেয়েকে নিয়ে জামাল উদ্দিনের সংসার চলতো টানা টানিতে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতার সহায়তায় কোনোভাবে সংসার চালাতেন। এখন মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা জামাল উদ্দিন। মেয়ের মৃত্যুতে মামলা করতেও আগ্রহী নন তিনি।
তার মতে, ‘মামলা করে এখন কি হবে? আমার মেয়েতো চলে গেছে। তাকেতো আর ফিরে পাবো না। আমরা গরীব মানুষ। এত ঝামেলা নিতে পারবো না।’
সামিয়া আফনান প্রীতিদের বাসা ঢাকার শাহজাহানপুরের শান্তিবাগে। চার দিন আগে খিলগাঁওয়ের তিলপা পাড়ায় গিয়েছিলেন বান্ধবী সুমাইয়া আক্তারের বাসায়।
বৃহস্পতিবার সুমাইয়ার বাসা থেকে নিজের বাসায় ফেরার জন্য তিলপা পাড়া থেকে রওনা হলেও প্রীতি কিছুক্ষণ পর ফোন করে খিলগাঁও রেলগেইটের কাছে যেতে বলেন সুমাইয়াকে। পরে সেখান থেকে দুই বান্ধবী আবার সুমাইয়ার বাসায় যাওয়ার রিকশা নেন।
রাত ১০টার দিকে শাহজাহানপুরের আমতলী মানামা ভবনের সামনের সড়কে মাইক্রোবাসে থাকা মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে ঘটনাস্থলের কাছে রিকশায় থাকা প্রীতিরও গুলি লাগে।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে টিপু ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এসি
আরও পড়ুন