চামড়ার প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ার শঙ্কা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৪:২০, ২৪ জুন ২০২৩ | আপডেট: ১৪:২১, ২৪ জুন ২০২৩
ট্যানারি শিল্প পরিবেশবান্ধব না হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে চামড়া নিচ্ছে না পশ্চিমা ক্রেতারা। এতে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশি চামড়া। চীন হয়ে উঠেছে চামড়ার প্রধান ক্রেতা। অন্যদিকে, বেড়েছে ডলারের দাম। লবণসহ প্রক্রিয়াকরণ দ্রব্যের দামও চড়া। সব মিলে এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
চামড়া পণ্যে মূল্যসংযোজনের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। কারণ কাঁচামালের প্রায় শতভাগই পাওয়া যায় স্থানীয় উৎস থেকে। আর তাই তৈরি পোশাকের পর দেশের চামড়া শিল্পকেই বেশি সম্ভবনাময় বলা হয়।
কিন্তু দেশের ট্যানারিগুলো পরিবেশবান্ধব না হওয়ায় সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সংগঠন লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ-এলডব্লিউজি’র সনদ না থাকায় বাংলাদেশ থেকে চামড়া নিচ্ছে না পশ্চিমা ক্রেতারা।
বিটিএ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, “বাইরে থেকে আমরা কাঁচামাল আমদানি করে থাকি। সেটা কিন্তু ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।”
এদিকে, প্রতিযোগিতাহীন বাজারে চীনা ক্রেতাদের কাছে তুলনামূলক কম দামে চামড়া বিক্রি করছেন ট্যানারি শিল্পের উদ্যোক্তারা। তাই এবারও কোরবানি পশুর চামড়ার প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
শাহীন আহমেদ বলেন, “১৬ সালের পূর্বে ব্রান্ড বায়ারদের কাছে আমাদের পণ্যটা বিক্রি করতে পারতাম। সেই সময় আমরা প্রতি পিস চামড়া ২ থেকে আড়াই হাজার টাকায় ক্রয় করতাম। এখন গড়ে ১ ডলার ১৬ সেন্টে বিক্রি করছি নন-কপ্ল্যাইন্ড বায়ারদের কাছে। এখন চায়নিজ মার্কেটই আমাদের নির্ভরশীলতার জায়গা।”
ট্যানারি খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাঁচামালের আমদানি খরচ বেড়েছে অন্তত ২৫ শতাংশ। এছাড়া লবণের মূল্যবৃদ্ধি, ত্রুটিপূর্ণ সংরক্ষণ ও দক্ষ জনবলের অভাবের কথাও বলছেন তারা।
বিটিএ চেয়ারম্যান বলেন, “লবণ একটা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রায় ১ কোটি পিস চামড়া এবছর সংগ্রহ হবে, সেখানে অদক্ষ শ্রমিকদের দ্বারা চামড়া ছাড়ানোর কারণে গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে।”
ট্যানারি শিল্পের এমন পরিস্থিতির জন্য উদ্যোক্তারাই দায়ী আছেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্যানারি এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা শিল্পনগরী স্থানান্তর করেছিলাম, সেই সময়ে ওয়ার্ল্ডের বেস্ট প্রাকটিসগুলো সম্পর্কে ধারণা ছিল না ট্যানারি মালিকদের। যে মেশিনগুলো ব্যবহার করতে হবে সেগুলো মালিকরা জানতো না।”
চামড়া খাতের রপ্তানি আয় বাড়াতে সমন্বিত পরিকল্পনা ও তার দ্রুত বাস্তবায়ন চান অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “টাইলস সেক্টরে বড় বড় প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে কিন্তু এখানে সেভাবে আসছেনা। এটা একটা দিক, অপরদিকে এখানে সরকারের ব্যর্থতা প্রচুর।”
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলছে, কোরবানির জন্য এবার ১ কোটি ২৫ লাখেরও বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা ১ কোটি ৪ লাখের মতো। এ হিসাবে কোরবানিকে কেন্দ্র করে এবারও চামড়ার বিপুল যোগান তৈরি হবে।
এএইচ
আরও পড়ুন