চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি তবুও অস্থির ডিমের বাজার (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১০:৪৯, ১৪ আগস্ট ২০২৩
দেশে বছরে ডিমের উৎপাদন ২ হাজার ৩৩ কোটি। চাহিদার তুলনায় যা প্রায় ৫শ’ কোটি বেশি। তবুও অস্থির ডিমের বাজার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের থাবা, কাঁচামাল ও ফিডের মূল্যবৃদ্ধি এবং চাহিদার পরিসংখ্যানে ত্রুটি থাকায় এই অস্থিরতা। এছাড়া কৃষি বিপণন আইনের দুর্বলতা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতাকেও দায়ী করা হচ্ছে।
জুলাই মাসে খামারী পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ছিল ১০ টাকা ২৭ পয়সা। পোল্ট্রি ফিডের দাম নতুন করে বাড়েনি। তাই ডিমের উৎপাদন খরচও একই রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
কিন্তু তারপরও হঠাৎ অস্থির ডিমের বাজার। অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে দাম। বিপাকে ভোক্তারা।
ভোক্তারা জানান, ডিম আর আলু খেয়ে সাধারণ মানুষ বেঁচে থাকে। এখন দামের যে অবস্থা তাতে জনজীবন অতিষ্ট।
উৎপাদন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কমিশন, পরিবহন খরচ, ডিম নষ্টে ক্ষতি, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাদে পাইকারি পর্যায়ে একটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১১ টাকা ৩২ পয়সা হতে পারে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি ডিমে ১ টাকার মতো যুক্ত হতে পারে। এ হিসাবে একটি ডিমের দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১২ টাকা ৮৩ পয়সা।
বিপিসিসিআই সভাপতি শামসুল আরেফীন সিদ্দিক বলেন, “অতিরিক্ত মুনাফা করাটা ভালো নয়। এর চেয়ে লম্বা সময় ধরে যদি ৫০ পয়সা লাভ করা যায় তা অনেক ভালো। একটা লেভেলের পর প্রফিট না করা উচিত। ১৩ বা সাড়ে ১৩ টাকায় ভোক্তারা পেতে পারে, সেটা ১৫ টাকা হওয়ার কথা নয়।”
চাহিদার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকার কথা বলছেনও উৎপাদকরা। জানান, এতে প্রভাব পড়ে সরবরাহে। বিপণন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পরামর্শ তাদের।
সিনিয়র বিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ফজলে রহীম খান বলেন, “বিপনন ঠিক মতো করতে গেলে সাপ্লাই চেইনটাকে শক্তিশালী করতে হবে। যখন উৎপাদন বেশি তখন এটা প্রসেসিং করে স্টোরেজ করে রাখতে হবে, যখন সাপ্লাই কমে যাবে তখন সেটা ছেড়ে দিতে হবে বাজারে।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ডিমের দামের বিষয়টি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দেখে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, দাম নির্ধারণে সরাসরি এখতিায়ার না থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তারা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, “এক ধরনের প্রবৃদ্ধি আছে যে একটা সুযোগ নেওয়া। সেটা হলো যতটুকু না মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তার থেকে বেশি হিড়িক তৈরি করা। হিড়িকটা যাতে তৈরি না হয় সেজন্য সবার ভূমিকা এখানে থাকা উচিত। আমরা উৎপাদন খরচটা বলেছি কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কি করবে সেটা তাদের ব্যাপার।”
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ডিমের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদন হয় ২ হাজার ৩৩৮ কোটি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের উৎপাদন হয়েছিল ১ হাজার ১৭ কোটি ডিম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কঠোর তদারকি নিশ্চিতের পাশাপাশি সমন্বয়হীনতা দূর করা গেলে ডিমের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানো কঠিন হবে না।
এএইচ
আরও পড়ুন