ডাস্টবিনে ২২ নবজাতকের লাশ
চিকিৎসকসহ ২ জনকে বরখাস্তের সুপারিশ
প্রকাশিত : ০৯:৩৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১২:২৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ময়লার স্তূস্পে ২২টি অপরিণত শিশুর (ফিটাস) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ জাহান বেগম এবং ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ জোৎসা আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাত ১২টায় হাসপাতাল পরিচালক ডা. বাকির হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ৩১ অপরিণত শিশুর (ফিটাস) ভ্রুণ উদ্ধারের ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন।
যেহেতু চিকিৎসক ও নার্সদের (সেবিকা) বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার (সাময়িক বরখাস্ত) এখতিয়ার হাসপাতাল প্রশাসনের নেই। তাই বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অধিদফতরে সুপারিশ পাঠানো হচ্ছে। যেখানে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা উল্লেখ থাকবে।
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসব মরদেহ দেখতে পান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। হাসপাতালের এক ওয়ার্ড মাস্টার জানিয়েছেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ব্যবহারিক কাজে এসব মরদেহ সংরক্ষণ করার কথা। উদ্ধার করা নবজাতকের মরদেহের সংখ্যা ২২টির অধিক হতে পারে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জানিয়েছেন, মরদেহগুলো কোথা থেকে এসেছে তার হদিস জানেন না তারা। তবে মরদেহের সংখ্যা ২২টির অধিক হতে পারে। এ বিষয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এসএম বাকির হোসেন বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ব্যবহারিক কাজে এসব মরদেহ সংরক্ষণ করার কথা ছিল। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল মোদাচ্ছের আলী কবির জানান, রাতে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা হাসপাতালের পশ্চিম পাশে কেন্দ্রীয় পানির ট্যাংকের পাশে থাকা ডাস্টবিনের ময়লা অপসারণ করছিলেন। এ সময় তারা ময়লার ভেতরে বালতি ভরা অপরিণত শিশুর মরদেহগুলো দেখতে পান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তারা।
মোদাচ্ছের কবির বলেন, অনেক মায়েদের ইনকমপ্লিট বাচ্চা জন্মায়। যা অনেক সময় পরিবারের লোকেরা নিয়ে যায়। আবার অনেকে ফেলে যায়। রেখে যাওয়া বাচ্চাগুলো দিয়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস নেয়া হয়। পরে তা কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মাটি চাপা দেয়া হয়। কিন্তু বাচ্চাগুলোর মরদেহ মাটি চাপা না দিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হলো কেন? সে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই স্থানেই মরদেহগুলো মাটি চাপা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড মাস্টার মোদাচ্ছের কবির। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের সদস্যরা।
তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
টিআর/
আরও পড়ুন