ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

চিকুনগুনিয়ার ব্যথা সারাতে…

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৩৩, ২২ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ১৩:১৮, ২৮ জুলাই ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত রোগ। সাধারণত এডিস এজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবপিকটাস এই দুই প্রজাতির মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়ায়। এ রোগে আক্রান্তদের জ্বর, প্রচণ্ড মাথা-ব্যাথা, বমি-বমি ভাব, দুর্বলতা, মাংসপেশিতে ব্যথা ও ত্বকে র‌্যাশ দেখা দেয়।

সংক্রমিত মশা সাধারণত ঘন বসতিপূর্ণ জায়গাগুলোতে বংশবিস্তার করে। মশা কামড়ানোর ৪ থেকে ৮ দিনের মধ্যে এ রোগ দেখা দেয় এবং তা ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

রোগ নির্ণয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরেফিন জানান, চিকনগুনিয়া হলে রোগীর শরীরে জ্বর এবং ব্যথা থাকবে। রক্তের সেরোলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ নির্ণয় করা যায়।

 

ব্যথার সঙ্গে চিকুনগুনিয়ার সম্পর্ক

গবেষণায় দেখা গেছে, চিকুনগুনিয়া জ্বরের সঙ্গে যে ব্যথা হয় এর কারণ হচ্ছে এক ধরনের ইনফ্লামেটরি সাইটোকাইনেসের উপস্থিতি। সিঙ্গাপুর ইমিউনোলজি নেটওয়ার্ক (এসআইজিএন) এবং কমিউনিকেবল ডিজিস সেন্টার (সিডিসি) মিলে সিঙ্গাপুরের টিং টং সেং হাসপাতালে গবেষণা করে দেখিয়েছেন, যার যত বেশি ভাইরাস অ্যাটাক করবে তার ততবেশি ব্যথা হবে।

সাধারণত চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীর ব্যথা ২ সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে সেরে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা সারতে এক বছর সময় লাগে।

কেন ব্যথা হয়

ইমিউন সিস্টেমের মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস এজেন্ট তৈরি করে। যা পরবর্তীতে ইনফ্লামেশনের মাধ্যমে মাংসপেশি ও জয়েন্টে ব্যথার সৃষ্টি করে। এর ফলে হাঁটু ভাঁজ করে উঠতে বা বসতে কষ্ট হয়, উচু স্থানে ওঠা-নামা, নামাজ আদায় করতে, হাঁটতে কষ্ট হয়। এলবো বা কনুই ব্যথা হয়।

যেসব স্থানে বেশি ব্যথা হয়


হাঁটু ব্যথা

হাঁটু শরীরের শরীরের ভার বহন করে। রোগীরা সাধারণত হাঁটু ভেঙে উঠা-বসা করতে, সিঁড়ি ভাঙা, নামাজ আদায় করা এমন কি হাঁটতেও ব্যথা অনুভব করেন।

 

গোড়ালি ব্যথা

আক্রান্ত প্রায় সব রোগী গোড়ালি ব্যথায় ভোগেন। ঘুম থেকে উঠার পর ব্যথা বেশি অনুভব হয়। কোনো কোনো রোগী হাঁটতে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা অনুভব করে। অনেকের আবার অ্যাংকেল জয়েন্ট বা গোড়ালি ফুলে যায়।

 

হাতে বিভিন্ন জয়েন্ট

হাতের বিভিন্ন জয়েন্ট এবং আঙুল ব্যথার অভিযোগ শুনে মনে হয় বাতের সমস্যা, কিন্তু অধিকাংশ রোগীর রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় বাতের সমস্যা নেই। হাত মুঠ করলে, ভারী জিনিস উত্তলনে বা দৈনন্দিন কাজ করতে কষ্ট হয়।

 

সারা শরীরে ব্যথা

সারা শরীরে ব্যথার কারণে রোগীর ঘুমানো, উঠা-বসা, হাঁটা সব ক্ষেত্রে কষ্ট হয়। দুর্বলতা অনুভব করায় কাজের আগ্রহ কমে যায়।

 

ব্যথা সারতে কতদিন লাগতে পারে

সাধারণত কারও এক মাস এমনকি এক বছরও লাগতে পারে। পরিমিত খাবার এবং যথেষ্ট পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

 

ব্যথা হলে কী করবেন

প্রথমেই জানা দরকার ব্যথাটা কি চিকুনগুনিয়ার কারণে হয়েছে নাকি অন্য কারণে। একটা কথা মনে রাখা দরকার, অনেক রোগী আছে যার চিকুনগুনিয়ার আগেও জয়েন্টে বা মাংসপেশিতে ব্যথা ছিল। যা নিয়ে তারা প্রতিদিনের কাজ করতে পারতেন কিন্তু চিকুনগুনিয়া হওয়ার পর ব্যথাটা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

করণীয়

#হালকাভাবে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ যা মাংসপেশির নমনীয়তা বাড়াবে এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করবে। এতে ব্যথার পরিমাণ কমে যাবে।

#উঁচু জায়গায় বসে (চেয়ার, টেবিল) এক পা করে হাঁটু সোজা এবং ভাঁজ করতে হবে। কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন।

#দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ না করাই ভালো। সকালে ঘুম থেকে উঠে ১০-১৫ মিনিট হাঁটুন তারপর স্বাভাবিক কাজ করুন।

#ভারী জিনিস উত্তোলন থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত চাপ দিয়ে ব্যয়াম না করাই ভালো। ব্যথাযুক্ত স্থানটি গরম বা ফোলা থাকলে ঠাণ্ডা ছ্যাঁক দিন এবং স্বাভাবিক থাকলে গরম ছ্যাঁক দিন।

#ব্যথার ওষুধ খাবার আগে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ওষুধ খেলে ব্যথা কমে এবং বন্ধ করলে ব্যথা আসে এরকম অবস্থায় অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।


আর//এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি