ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

চিনি ছাড়াই স্বাস্থ্যসম্মত মিষ্টি খাবার!

রোকসানা আইভি

প্রকাশিত : ২০:২৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ২০:৪৯, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

গাজরের বিভিন্ন রেসিপি

গাজরের বিভিন্ন রেসিপি

Ekushey Television Ltd.

বর্তমানে বাজারে গাজর এমনটিতেই বেশ সহজলভ্য একটি সবজি। পুষ্টিগুণের বিচারে এটা বেশ স্বাস্থ্যসম্মতও বটে। গাজরের হালুয়ার স্বাদই আলাদা। যে একবার খাবে তার মুখে লেগে থাকবে। তাছাড়া গাজরে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ সহ নানা উপকারী পুষ্টিগুণ, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

আজকে আমরা তৈরী করবো গাজরের হালুয়া, সন্দেশ, বরফিসহ স্বাস্থ্যসম্মত বিভিন্ন পদ। একদিকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন গাজর আবার সেটা চিনিমুক্ত খেজুরের গুড় দিয়ে বানানো মজাদার খাবার। বাচ্চাদের স্কুলের জন্যও যা হতে পারে চমৎকার টিফিন। 

আমারা বাজারে হালুয়া, সন্দেশসহ যে সব মিষ্টি জাতীয় খাবার পাওয়া যায়, তাতে চিনিসহ অন্যান্য ক্ষতিকর উপকরণ থাকে সে সম্বন্ধে আমরা ধারণাও করতে পারিনা।  

প্রসঙ্গত, চিনি, শর্করা, সুগার- যে নামেই ডাকুন, গত কয়েক দশকে বিজ্ঞানী আর ডাক্তারদের গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি জনস্বাস্থ্যের এক নম্বর শত্রু। এখন উন্নত দেশের স্কুল আর হাসপাতালগুলোও তাদের খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ না দিলে দেখা দিবে ক্যান্সারসহ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

আমরা জানি, যারা বেশি মিষ্টি খায় তাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা রকম বিষক্রিয়া। এছাড়াও সব ধরনের বিপাকজনিত রোগ, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের আধিক্য, ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস, মেদস্থূলতা ও বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার সঙ্গে চিনির সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়েছেন তারা। এসব কারণেই বিশ্বজুড়ে এখন চিনির আরেক নাম ‘হোয়াইট পয়জন’। 

অন্যদিকে, বাইরের দোকানের মিষ্টি আরও ক্ষতিকর। তবে যারা মিষ্টি জাতীয় খাবার পছন্দ করেন তারা চিনি ছাড়াও স্বাস্থ্য সম্মত মিষ্টি তৈরী করে খেতে পারেন। তাদের জন্য আজ থাকছে গাজরের হালুয়া। 

শীতের সবজি হিসেবে গাজর বেশ জনপ্রিয়। গাজর দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও সুস্বাদু। নিজ গুণেই গুণান্বিত গাজরের রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। গাজর খেলে কি কি উপকার পাওয়া যাবে তাও জেনে নিন। 

১.গাজরে রয়েছে ভিটামিন-এ, যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং রাত কানা রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।

২.ত্বক সুন্দর রাখতে আমরা কত কিছু ব্যবহার করি। কিন্তু প্রতিদিন যদি একটি করে গাজর খাই, তাহলে এর মাধ্যমে পাওয়া এন্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে সুন্দর টানটান ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

৩.গাজরে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড, যা হৃৎপিন্ডকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে সেই সাথে হৃৎপিন্ডের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৪.প্রতিদিন গাজর খেলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। কারণ এতে রয়েছে ফ্যালক্যারিনল ও ফ্যালক্যারিনডায়ল নামক রাসায়নিক পদার্থ, যা অ্যান্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে।

৫.গাজরে রয়েছে কিছু পরিমাণ আয়রন ও ক্যালসিয়াম নামক মিনারেলস, যা দাঁতকে মজবুত রাখে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন সি ও লাইকোপেন, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গাজর দিয়ে হালুয়া যেভাবে বানাবেন

উপকরণ
গাজর পরিমাণ মতো অথবা ১ কেজি
ঘি পরিমাণ মতো
গরুর তরল দুধ ১ কেজি
নারিকেল কোরা ১ কাপ
চিনির পরিবর্তে খেজুরের গুড়
তেজপাতা ২/৩টা
এলাচি ৩/৪টা
দারচিনী ২/৩
পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম, চীনা বাদাম পরিমাণ মতো

প্রণালী
প্রথমে গাজর ভালোভাবে ধুয়ে নিন। তারপর ধোয়া গাজরগুলো ভালো করে সিদ্ধ করে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর নন স্টিক প্যানে সামান্য ঘি দিয়ে ব্লেন্ড করা গাজরগুলো মসলা দিয়ে ৭/৮ মিনিট ভাজুন। তারপর তাতে দুধ ও গুড় দিয়ে ১৫/২০ মিনিটের মতো নাড়তে থাকুন।

দুধ শুকিয়ে গাজর নরম হয়ে এলে নারিকেল কোরা, বাদাম দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে আরও কিছুক্ষণ হালকা আঁচে রান্না করুন। এবার নিজেদের মতো করে বানিয়ে নিন হালুয়া, সন্দেশ বা বরফি। অর্থাৎ স্বাদ ভিন্ন করতে এখানে আপনারা বাদাম, নারিকেল নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, স্বাদ বাড়াতে গিয়ে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এরকম কোনওকিছু ব্যবহার করা যাবে না। 

লেখক- পুষ্টিবিদ ও রান্না বিশেষজ্ঞ। 

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি