চিভ হতে পারে পেঁয়াজের বিকল্প
প্রকাশিত : ২০:৪৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২১:২২, ১৫ নভেম্বর ২০১৯
পেঁয়াজ ছাড়া যেন রান্না হয় না। মশলার অন্যতম এই উপকরণটির রফতানি যখন ভারত থেকে বন্ধ হয়ে গেল তখন এর দাম বেড়ে গেলে কয়েক গুণ। এরপর শুধু বাড়তেই থাকলো। বর্তমানে এক সময়ের ৩০ টাকা কেজির পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। এমন অবস্থায় পেঁয়াজের বিকল্প খুঁজছিলেন কৃষিবিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে ‘চিভ’ নামে এক মশলার কথা বলছেন। যা পেঁয়াজের অভাব দূর করবে বলে তারা মনে করেন। তাদের ভাষ্য চিভ সারা বছর চাষ করা যায়। একবার রোপন করলে সারা বছর ফল যাওয়া যায়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) এ নিয়ে গবেষণা চলছে। বারির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নূর আলম চৌধুরী বলেন, ‘চিভের স্বাদ পেঁয়াজ রসুনের মতো। এটি পৃথিবীর অনেক দেশে সাধারণত স্যুপ, সালাদ ও চাইনিজ ডিসে ব্যবহৃত হয়। এর পাতা লিলিয়ান আকৃতির ফ্ল্যাট, কিনারা মসৃণ ও এর ভালভ লম্বা আকৃতির। চিভ হজমে সাহায্য ও রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণাগুণও বিদ্যমান রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চিভে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১, বি-২, নায়াসিন, ক্যারোটিন ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান। চিভ সাধারণত দেশের পাহাড়ি এলাকা সিলেট ও চট্টগ্রামে চাষ হয়ে থাকে। এছাড়াও দেশের যেসব এলাকায় পেঁয়াজ উৎপাদন হয় যেমন পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা, বগুড়া ও লালমনিরহাট এসব এলাকায়ও চীভ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।’
ড. চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালে আমরা বারি চিভ-১ অবমুক্ত করি। এখন চাষ সম্প্রসারণের পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশে বছরে ১৭ লাখ মেট্রিকটনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। আমাদের আরও ৫ লাখ মেট্রিকটন ঘাটতি রয়েছে। এখন চিভ আমাদের সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
‘চিভ গাছ রোপনের ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু হয়। এর পাতা, কাণ্ড ও কাঁচা ফুল মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একবার পাতা-কাণ্ড কেটে নিলে আবার গজায়। বাড়ির আঙিনায় বা টবেও চাষ করা যায়। চীন, সাইবেরিয়া ও মঙ্গোলিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই মশলার চাষ হয়’ বললেন ড. আলম।
এসি