ঢাকা, শুক্রবার   ২১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতার চাঞ্চল্যকর চ্যাট ফাঁস, হত্যার ষড়যন্ত্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৫, ২০ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

স্থানীয় বিএনপির এক নেতাকে হত্যার হুমকি দেওয়া ‘গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ’ নামক ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের চ্যাটের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে। এতে বিএনপি নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের চিত্র উন্মোচিত হওয়ায় গফরগাঁওজুড়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে। 

ওই স্ক্রিনশটগুলোতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা গফরগাঁওয়ের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি প্রয়াত ফজলুর রহমান সুলতানের ছেলে, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে দেখা যায়। 

বিএনপির ওই নেতাকে হত্যার পর বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুপ্ত হামলা চালিয়ে আরো ৭-৮টি খুন করার নীলনকশার কথা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় গফরগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

সূত্র জানায় ‘গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ’ গফরগাঁওয়ের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ও তার অনুসারীদের একটি টপ সিক্রেট ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীরা এই ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপের সদস্যরা সবাই গত ৫ আগস্টের পর গফরগাঁও থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। কিন্তু ওই মেসেঞ্জার গ্রুপে সরব রয়েছেন। 

স্ক্রিনশটে দেখা যায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান সানিল ও পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান সজিবের কথোপকথন। তারা সেখানে লেখেন, ‘বিএনপির জনপ্রিয় নেতা মুশফিককে খেয়ে দিতে হবে। এর দায়ভার চাপাতে হবে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমানের চাচা এ বি সিদ্দিকুর রহমানের ওপর। এভাবে রহমান পরিবারকে শেষ করে দিতে হবে। রহমান পরিবার শেষ হলেই গফরগাঁওয়ে বিএনপির রাজনীতি ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।’

চ্যাটিংয়ে আরো বলা হয়, ‘সবাই তো পলাতক, কারা দায়িত্ব পালন করবে? মুশফিক যখন গণসংযোগ, মিটিং-মিছিল করবে, তখন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা এই দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

চ্যাটিংয়ে দুই নেতার এমন পরিকল্পনা ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা হিসেবে জানানো হয়, ‘মোটরসাইকেল থেকে মুশফিককে শ্যুট করা হবে। মুশফিক নিহত হলে বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তখন গুপ্ত হামলা চালিয়ে আরো ৭-৮ জনকে খুন করতে হবে।’ 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট ফাঁস হওয়ায় গফরগাঁও উত্তাল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই সদরসহ উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী-সর্মথকরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পৌর বিএনপি নেতা সেলিম আহম্মেদ গফরগাঁও থানায় একটি জিডি করেছেন। 

পাগলা থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম আনসার উদ্দিন বলেন, ‘পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে আমরা উদ্বিগ্ন। আগেও বেশ কয়েকবার এই ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে।’ 

উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আগেও এ ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অমিই প্রধান প্রতিপক্ষ, এই বলে আমাকে বিভিন্ন মহল থেকে সতর্ক করা হতো। এগুলো মোকাবেলা করেই গফরগাঁওয়ের রাজনীতি করতে হয়। আমার পূর্বপুরুষরা তাই করেছেন।’ 

এ ব্যাপারে গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে। তা ছাড়া জিডির সূত্র ধরে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি