ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

জঞ্জালের উপাদান দিয়ে অভিনব শিল্পকর্ম

প্রকাশিত : ১২:৪৭, ৩০ মার্চ ২০১৯

শুধু জঞ্জাল থেকে শিল্পসৃষ্টির কাজ করেই সন্তুষ্ট নন পর্তুগালের এক শিল্পী৷ পরিবেশ দূষণ ও প্রাণিজগতের দুর্দশা সম্পর্কেও সচেতনতা সৃষ্টি করতে চান তিনি৷ একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে তিনি অনেক মানুষের মনে প্রভাব সৃষ্টি করতে পেরেছেন৷

পর্তুগিজ শিল্পী আর্তুর বর্দালু বিভিন্ন পশুর আদলে ভাস্কর্য সৃষ্টি করেন৷ তাকে ভাস্কর্যের সঙ্গে স্ট্রিট আর্টের মেলবন্ধন বলা চলে৷ আবর্জনাই তার উপাদান৷ বাস্তব প্রেক্ষাপটে কল্পনির্ভর তার ‘আপসাইক্লিং’ শিল্প৷ আর্তুর নিজে মনে করেন, ‘প্রাণীদের মাধ্যমে আমরা সহজেই মানুষের অভিব্যক্তির কাছাকাছি রূপ পেতে পারি৷ জঞ্জালের কারণে প্রকৃতি নষ্ট হচ্ছে, এই গ্রহ ধ্বংসের পথে চলেছে৷ দূষণ ও জঞ্জালের কারণে যারা এই প্রক্রিয়ার শিকার হচ্ছে, এই সব উপাদান দিয়ে তাদের চিত্র সৃষ্টি করা হচ্ছে৷’

পুরানো পুতুল, গাড়ির টায়ার, মোবাইল ফোন অথবা পাইপ- মানুষ যা কিছু ফেলে দেয়, বর্দালো সে সব শিল্পে পরিণত করেন৷ জঞ্জাল দিয়ে তৈরি তার ৩০টি ভাস্কর্য প্যারিসের এক সংগ্রহশালায় প্রদর্শিত হচ্ছে৷

আর্তুর বর্দালু বলেন, ‘শিল্পকর্মের সাহায্যে আমি সবার জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি৷ শুধু হাতে গোনা শিল্পবোদ্ধা নয়, জনসাধারণের কাছে আনতে চেয়েছি৷ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য এটা করেছি৷ কারণ তারাই তো সবকিছু বদলানোর ক্ষমতা রাখে৷’

২০১৪ সালে নিজের শহর লিসবনে তিনি প্রথম ‘বিগ ট্র্যাশ অ্যানিম্যাল্স’ গড়ে তোলেন৷ রাজপথ বা জঞ্জালের স্তূপে তিনি সৃষ্টির উপাদান খুঁজে পান৷ আবর্জনা দিয়ে ভাস্কর্য সৃষ্টি করে প্রাক্তন এই গ্রাফিটি শিল্পী স্ট্রিট আর্ট জগতে দ্রুত খ্যাতি অর্জন করেছেন৷ রোম, বার্লিন, লন্ডন, তাহিতি অথবা লাস ভেগাস- সব জায়গায় তিনি পরিচিতি পেয়েছেন৷

প্যারিসে প্রদর্শনীর জন্য বর্দালো ঠিক সময়ে দুটি নতুন সৃষ্টির কাজ শেষ করেছেন৷ গ্যালারির খুব কাছেই সে দু’টি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে৷ ফ্রান্সের রাজধানীতে একক প্রদর্শনীর জন্য এর চেয়ে ভালো বিজ্ঞাপন আর হতে পারে না৷ প্রায় ৭০০ বর্গমিটার জুড়ে তার সৃষ্টিকর্ম শোভা পাচ্ছে৷ অনেক দর্শক তা দেখে মুগ্ধ৷ কেউ বলেন, ‘সত্যি চমকপ্রদ! আমি কখনও শিল্পের এমন রূপ দেখিনি৷ খুবই বুদ্ধিমত্তা ও চাতুর্যের সঙ্গে প্লাস্টিক ও জঞ্জাল মিশিয়ে আসল বাস্তবসম্মত প্রাণী সৃষ্টি করা হয়েছে৷ তিনি আমার অন্যতম প্রিয় শিল্পী৷’ আরেকজন বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতি বন্ধ করতে আমরা কী করছি, তিনি মানুষকে সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বাধ্য করছেন৷ যেমন না জেনেই আমরা কীভাবে প্রাণীদের ক্ষতি করছি৷ ফলে আমরা ভাবতে বাধ্য হচ্ছি৷’

‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বর্দালো জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বোঝাপড়ার প্রতি সচেতন করতে চেয়েছেন৷ তার কাছে এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়৷ আর্তুর বলেন, ‘২০ বছর পর আজকের শিশুরা ক্ষমতার দায়িত্ব নেবে৷ আমি যে সব বার্তা পাঠাতে চাইছি, তারা সে সব পেলে হয়ত আমরা আরও ভালো এক পৃথিবীতে থাকতে পারবো৷’

বর্দালো-র ‘বিগ ট্র্যাশ অ্যানিম্যাল্স’ মনে দাগ কাটে বৈকি৷ সেই প্রভাব শুধু প্যারিসে প্রদর্শনীর দর্শকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না৷

সূত্র: ডয়চে ভেলে

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি