ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জনকল্যাণে নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ তারেক রহমানের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪০, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাংলাদশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘ভোটের মাঠে বিএনপি’র প্রতি জন-আস্থা থাকলেও জনগণের কল্যাণে এখন থেকেই সকলকে মাঠে নামতে হবে। দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের এখনই প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।

আজ রোরবার দুপুরে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে লন্ডন থেকে ‘ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি জনগণের রায় নিয়ে আগামীতে ক্ষমতায় এলে ৩১ দফা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে, যা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হিসেবে চলবে। আমরা ধাপে ধাপে এটি আরও উন্নত করবো। যেদিন বাংলাদেশের মাটিতে জনগণের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সেদিনই বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের প্রকৃত বিজয় অর্জিত হবে।’

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘জনগণের আস্থা অর্জনে আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘদিনের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশকে পুনর্গঠন করতে চাই।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন,‘আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর ধরে দেশের জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নের প্রকৃত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’

জনগণের সমর্থন পেলে আগামী নির্বাচনে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল- এ কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ৩১ দফা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে, যা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হিসেবে চলবে।

তিনি বলেন, আমরা ধাপে ধাপে এটি আরও উন্নত করবো। যেদিন বাংলাদেশের মাটিতে জনগণের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সেদিনই বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রকৃত বিজয় অর্জিত হবে।

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনরা শাসনামলে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, খুনি আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা ,উন্নয়ন ও গণতন্ত্র ধ্বংস করে গেছে। নির্বাচনের নামে দেশের জনগণের সঙ্গে তামাশা ও প্রহসন করেছে। বিরোধী দলের প্রতি দমন, পীড়ন নীতি চালানো ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের গুম, খুন করা হয়েছে। জোরপূর্বক ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা মানুষের কথা বলার অধিকারকে হরণ করে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একচ্ছত্র অপশাসন কায়েম করেছিল। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার, খুনি ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে। বাংলার মাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে শেখ হাসিনা।

তারেক রহমান বরেন, এই মুহূর্তে ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে দেশের সাধারণ জনগণ বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে। তাই মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের কাজে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, জনগণের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিশুদের শিক্ষিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, শিল্পায়ন সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নানান বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তবুও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে দলীয় নেত্রী থেমে থাকেননি। সেজন্যই তিনি আপোসহীন নেত্রী।

বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপি অতীতে যেমন মানুষের পাশে ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এছাড়াও, বিএনপি সরকারের আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, নারী শিক্ষার উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের জন্য কলকারখানা স্থাপনসহ তরুণ ও বেকারদের কর্মসংস্থানে নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।

তারেক রহমান অভিযোগের স্বরে বলেন, ‘বিএনপিকে হেয় করতে বিভিন্ন মহল দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবিলা করছি এবং করবো। তবে, জনগণের আস্থা বজায় রাখা আমাদের দায়িত্ব। এ জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। হতে হবে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী। তাহলেই আমরা পরিবর্তন আনতে পারবো।’

দীর্ঘ ১৬ বছর পর নড়াইল জেলা বিএনপি’র দ্বিবার্ষিক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমার এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়।

নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু।
 
জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান, নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাফিজুর রহমান আলেক, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান পলাশ, লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহদুজ্জামান বাটু, কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, নড়াইল পৌর বিএনপির সভাপতি তেলায়েত হোসেন বাবু, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফসিয়ার রহমান।এ সময় নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা খান মোহাম্মদ কবীর হোসেন, আমেরিকার টেক্সাস বিএনপির সেক্রেটারি শেখ জহিরুল ইসলামসহ বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ও কাউন্সিলরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি