জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি ঢাকার বায়ু (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:২৭, ১৩ জানুয়ারি ২০২২
বছরের নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশের বায়ুমান থাকে সবচেয়ে দূষিত। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার বায়ুমান এ সময়ে যে স্তরে পৌঁছে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ। শুধু দেশের নয়, শীতের উত্তরে হাওয়ায় অন্য দেশের দূষণেরও প্রভাব পড়ে।
শীতের বাতাস আর শুষ্ক আবহাওয়ায় বায়ু দূষণের মাত্রা ঠেকে চরমে। রাজধানী ঢাকা পুরো শীতকাল জুড়েই ধূলায় ধূসর হয়ে ওঠে। চলতিপথে মানুষজন ধুলো থেকে বাঁচতে ঢেকে রাখে নাক-মুখ, বাঁধে গামছাও।
শুধু মানুষ নয়, শীতের এই সময় শহরের বৃক্ষরাজিও মুড়ে থাকে ধূলার চাদরে। আবরণ এতটাই পুরু যে পাতার সবুজ রং দেখাই যায় না।
বায়ুসহ অন্যান্য দূষণ পরিমাপে, নাসা ও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি নিয়ে নিরলস কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম।
জুন, জুলাই, আগস্ট ছাড়া বছরের বাকি মাসগুলোর বায়ুমান এককথায় অস্বাস্থ্যকর। শীতে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স পৌঁছায় ৫০০-তে; যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘ভেরি হাই পলিউশন এক্সপোজার হচ্ছে যার ফলে আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যাটা খুব মারাত্মক আকারে ধারণ করেছে। গত ১০ বছরের ট্রেন্টে দেখা যাচ্ছে পলিউশন কমার কোন লক্ষ্যণ নেই। দিন দিন বেড়েই চলছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাস্তা খনন করে যে মাটি বা বালু অথবা কন্সট্রাকশনের মালামাল রাখা হয় সেগুলোর উপর দিয়ে যানবাহন বা মানুষের চলাচল। সবকিছু মিলে সেগুলো পুনরায় ধূলা-বালিতে পরিণত হয়। বাতাসে সে ধূলাবালি ছড়িয়ে গিয়ে শহরকে দূষিত করে ফেলে।’
দেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বেশি দূষণ ছড়ানোর তালিকায় ইটভাটা। রাজধানীর চারপাশে প্রায় হাজার খানেক ভাটা রয়েছে। এরপরেই রয়েছে রাইস মিল, পুরোনো টায়ার ও সিসা পোড়ানো, ব্যাটারি রিসাইকেলসহ আরও কত কিছু।
বাইরে থেকে উত্তরের বাতাসে ভেসে আসে দূষিত বায়ু। যা দেশের মোট দূষণের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।
ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশি দুটি বড় রাষ্ট্র রয়েছে। তাদের যে পলিউশনটা আছে তার একটা অংশ বাংলাদেশের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে যায় উত্তরের বাতাসটা। যার ফলে নিজস্ব পলিউশন তো আছেই আবার অন্য জায়গার পলিউশনও আমরা পাচ্ছি।’
ড. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শহরে যে পরিমাণ মানুষ ও যানবাহন, কোনটাই কিন্তু ক্যারিং ক্যাপাসিটির মধ্যে নেই। যতটুকু শহর আছে সেই তুলনায় গ্রিন কভার খুবই কম।’
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে শুধু সরকারি পদক্ষেপ নয়, দরকার ব্যক্তি উদ্যোগও।
এএইচ/