জন্ডিস থেকে বাঁচতে যে সব ফল খেতে হবে
প্রকাশিত : ১০:৪২, ১১ নভেম্বর ২০১৮
জন্ডিস হলে না জানি কত কথা ভেবে ফেলে রোগী থেকে রোগীর পরিবার৷ এবার তাদের নির্দিষ্ট কিছু ধারণাকে পাল্টে দিতে কয়েকটি অজানা তথ্য আজ জানাবো৷ প্রথমত জন্ডিস কোনও রোগ নয়, রোগের লক্ষণ মাত্র৷ জন্ডিসে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়৷ আর এর ফলে ত্বক, চোখের সাদা অংশ এবং অন্যান্য মিউকাস ঝিল্লি হলুদ হয়ে যায়৷ মানব দেহে রক্তের লোহিত কণিকাগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই একটা সময়ে ভেঙে গিয়ে বিলিরুবিন তৈরি করে৷ যা পরবর্তী সময়ে লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পিত্তরসের সঙ্গে মিশে পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে৷ এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কোনও কারণে ব্যাহত হলে জন্ডিস দেখা দেয়৷
এক্ষেত্রে আরও একটা কথা বলে রাখা ভালো লিভারের রোগই জন্ডিসের প্রধান কারণ। বাংলাদেশসহ প্রায় সারা বিশ্বেই জন্ডিসের প্রধান কারণ হেপাটাইটিসের ভাইরাস৷ তবে এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে চিন্তার কোনও কারণ নেই৷ এর উপশম পেতে আপনার হাতেই রয়েছে সেই উপায়৷ ফলই বাতলে দেবে জন্ডিসের নিরাময় পদ্ধতি৷ প্রধানত জন্ডিসের লক্ষণ এবং উপসর্গ বলতে, চোখ এবং প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, জ্বর জ্বর অনুভূতি কিংবা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা, বমি ভাব, চুলকানি ইত্যাদি৷
বিভিন্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, জন্ডিস হলে কি কি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা আবশ্যক৷ এক্ষেত্রে তারা জানিয়েছেন, রোগীকে প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস করে পানি খেতে হবে৷ চা খেতে চাইলে হার্বাল টি রোগীর জন্য চলতে পারে৷ তৈরি করে রাখা চা একেবারেই রোগীর চলবে না৷ তালিকা থেকে দুগ্ধজাত খাবার বাদ রাখাই এই সময় শ্রেয়৷ এর পাশাপাশি এনজাইম সমৃদ্ধ ফল খাওয়াও বিশেষ প্রয়োজন৷ যেমন পেঁপে, আম ইত্যাদি ধরনের ফল৷ প্রতিদিন অন্তত দু’বাটি সবজি এবং দু’বাটি ফল খাওয়া প্রয়োজন৷ হাই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন ওটমিল, আমন্ড ইত্যাদিও খাওয়ানো যেতে পারে রোগীকে৷
এছাড়া খাদ্য তালিকায় আরও যা যা থাকলেও কোনও অসুবিধা নেই সেগুলো হল, পানি, অর্থাৎ পরিমিত পানি পান করা৷ অন্তত চার লিটার পানি পান করতেই হবে৷ যার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে যাবে৷ শুধু তাই নয় লিভারের কর্মকাণ্ডও ঠিক থাকবে৷ আর এই সবের কারণে রোগীর অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে৷ এরপরই আসতে পারে কফি৷
তবে এক্ষেত্রে কফি বা কোকো এড়িয়ে চলাটাই বেশি ভালো৷ সঙ্গে দুধ বা দুধের তৈরি যে কোনও খাবার এড়িয়ে চলাটাও দরকার৷ এমনকি এই সময় হার্বাল দুধও খাবেন না রোগী৷
দ্রুত খাবার হজম করাতে পারবে এই রকম উৎসেচক সমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখুন। যেমন মধু, কমলালেবু, আনারস, পেঁপে, আম ইত্যাদি৷ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ফল, সবজি ইত্যাদি তো খাবেনই। তাছাড়াও বাদাম, শস্য দানা যেমন ওটমিল, আমন্ড, ব্রাউন রাইস ইত্যাদিও খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজন৷ অতিরিক্ত আয়রন লিভারের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই এই সময় রোগীর সব খাওয়ারই মেপে খাওয়া প্রয়োজন৷ মাছ মাংসের ক্ষেত্রে রোগী ছোট মাছ বা মুরগির মাংস খেতে পারবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ তবে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এড়িয়ে চলতে হবে। রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া ফলের রস বিশেষত আখের রস একেবারেই খাওয়া যাবে না৷
শুধু যে রোগের সময় এত নিয়ম মেনে চলতে হবে তা নয়৷ জন্ডিস সেরে যাওয়ার পরও মেনে চলতে হয় হাজারো নিয়ম৷ অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা থেকে শুরু করে প্রতিদিন চার লিটার পানি খাওয়া সবই পড়ে এর মধ্যে৷ জন্ডিসের পর ল্যাকটোজ জাতীয় খাদ্য কম খাওয়া উচিৎ৷ সঙ্গে লবণও যতটা সম্ভব কম খাওয়া প্রয়োজন৷ তবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় লেবু রাখা যেতেই পারে৷
সূত্র: কলকাতা ২৪x৭
একে//