জমি কেনার সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন: অ্যাডভোকেট বাবর চৌধুরী
প্রকাশিত : ১৫:৫৯, ২৫ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৮:১৯, ২৫ অক্টোবর ২০১৮
অ্যাডভোকেট বাবর চৌধুরী
কষ্টের টাকায় আর জীবনের সব সঞ্চয় ব্যয় করে এক টুকরো জমি কেনা। সেটিতেও যদি প্রতারণার শিকার হতে হয় তবে কেমন লাগবে? আমাদের চারপাশে এমন ঘটনা ঘটছে অহরহ। হয়তো আমাদের স্বজনদের মধ্যেই কেউ এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। একটু সচেতন না হলে জমি কেনার সময় যে কেউ আপনাকে ঠকাবে।
জমি কেনার আগে দলিল ঠিক আছে কি-না সেটি নির্ণয় করা প্রাথমিক কাজ। যে জমিটি কিনছেন সেটির মালিকানা সঠিক আছে কি-না বুঝবেন কিভাবে? এ বিষয়ে একুশে টিভি অনলাইনের পাঠকদের আইনী পরামর্শ দিয়েছেন অ্যাডভোকেট বাবর চৌধুরী। তিনি শ্রম আইনজীবী ও ভূমি বিশেষজ্ঞ হিসেবে ঢাকা বার, চট্টগ্রাম বার, ঢাকা মেট্রোপলিটন বার, ঢাকা ট্যাক্স বার, চট্টগ্রাম ট্যাক্স বার, ঢাকা লেবার কোর্ট বারে কাজ করছেন। তার সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইন প্রতিবেদক অালী অাদনান।
প্রশ্ন : রাষ্ট্রের একজন নাগরিক যখন জমি কেনবে তখন কোন বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে?
অ্যাডভোকেট বাবর চৌধুরী: ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি কেনার ক্ষেত্রে জমির ধরণের উপর ভিত্তি করে এর মালিকানা যথার্থতা বাছাই করতে হবে। বাংলাদেশে সাধারণত দুই ধরণের জমি দেখা যায়। একটি হচ্ছে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে রায়তীসত্ত্ব। অন্যটি হচ্ছে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া লিজ। এখানে লিজ বলতে রাজউক বা গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ লিজ দেয় এমন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড লিজ দেয় এমন। যেমন ডিওএইচএসে যেসব জমি এরকম লীজে আছে সেগুলো এক ধরনের প্রপার্টি। আবার যেগুলো সরকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিয়েছে সেগুলো আরেক ধরনের প্রপার্টি।
যেসব জমি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আছে সেসব জমিতে দেখতে হবে সিএস থেকে ধারাবাহিক মালিকানা ঠিক আছে কিনা। সিএস থেকে এসে আরএস কোথাও কোথাও বিএস এবং যদি মিউটিশিয়ান হয়ে থাকে তাহলে মিউটিশিয়ান পর্যন্ত মিলিয়ে দেখতে হবে মালিকানার ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কিনা।
দেখতে হবে সর্বশেষ যে দলিল সেই দলিলের সঙ্গে মিউটিশিয়ান ঠিক আছে কিনা? ইতোপূর্বে নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে কিনা? যদি মালিকানার ধারাবাহিকতা থাকে, মিউটিশিয়ান ঠিক থাকে, বিএস খতিয়ান থাকে ও খাজনা পরিশোধের ডকুমেন্ট থাকে তাহলে দেখতে হবে বিক্রেতা প্রকৃত ওয়ারিশ কিনা? এসব বিষয় ঠিক থাকলে সেই জমি ক্রয় করা যায়।
প্রশ্ন : আপনি ওয়ারিশ বলতে কী বুঝাচ্ছেন?
অ্যাডভোকেট বাবর চৌধুরী: ধরুন, একজন লোকের চারজন সন্তান। জমি বিক্রয়ের সময় সেখান থেকে দু`জন রেজিস্ট্রি দিল। বাকিরা রেজিস্ট্রি দিল না। তাহলে কিন্তু এটা বৈধ ক্রয় বিক্রয় হবে না। অনেক সময় দেখা যায়, ওয়ারিশদের কেউ কেউ রেজিস্ট্রি দিলেও অন্যরা জানেও না তার জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যখন জানে তখন কিন্তু সে আইনের আশ্রয় নিতে পারে। তাই, ক্রেতার উচিত নিষ্কন্টক জমি ক্রয়ের আগে প্রয়োজনে ওই এলাকায় খোঁজ খবর নেওয়া এবং প্রকৃত ওয়ারীশদের সবার কাছ থেকে রেজিস্ট্রি নেওয়া।
অা অা/ এআর
আরো পড়ুন : জাল দলিল চেনার উপায় কী: অ্যাডভোকেট বাবর চৌধুরী