ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জাবিতে `ক্যাম্পাসের সড়ক নিরাপত্তা` বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত

জাবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত : ২২:৪৭, ২১ নভেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

নিরাপদ ও বাসযোগ্য ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) 'ক্যাম্পাসের সড়ক নিরাপত্তা' বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে  বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন মহুয়া মঞ্চে সচেতন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দের আয়োজনে এ উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়৷ 

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮ বক্সাভের শিক্ষার্থী সুয়াইব হাসানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুম হাসান বলেন, জন মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে তারা কি চায় সে অনুসারে কাজ করতে হবে৷ যাদের জন্য কাজ করা হচ্ছে সেটা যেনো তাদের কাছে বোধগম্য একই সাথে কার্যকরী হয়৷ আর মাস্টারপ্ল্যান হলে সেখানে ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানাররাও কাজ করবে বা সেখানে ট্রান্সপোর্ট রিলেটেড সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি৷ 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল মান্নান বলেন বর্তমান রাস্তাগুলো পুরোনো স্থাপনাগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে করা৷ অথচ এখন সর্বত্র নতুন নতুন ভবন হচ্ছে আর সেখানে মানুষজন'ও বাড়ছে৷ আর ট্রাফিক ভলিউমও বাড়ছে৷ তবে সে তুলনায় রাস্তার প্রশস্ততা সেই আগের মতোই আছে৷ আর এসকল সমস্যা থেকে উতরানোর জন্য পরিকল্পিত ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান দরকার৷ 

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুসা ভুঁইয়া বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাগুলোর হায়ার্রাকি ঠিক নেই, অথচ রাস্তার হায়ারার্কি অনেক জরুরি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানিংয়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট৷ ক্যাম্পাসে ফুটপাত বা মানুষের হাটার চলার জায়গা নেই৷ এই যে অটোরিকশা বন্ধ করে শাটল বাস সিস্টেম পরিচালনা কার্যকর কোনো সলিউশন না৷ কেও অসুস্থ্য হলে তাকে মেডিকেলে নেয়ার জন্য কি তখন শাটল বাসের অপেক্ষা করবে? তাই হুটহাট সিদ্ধান্তের আগে কার্যকর সলিউশন খোঁজা দরকার৷ এখন তাৎক্ষনিক সলিউশন হতে পারতো পায়ে চালিত রিকশা৷ আর ক্যাম্পাসে পায়ে চালিত রিকশা ব্যাবস্থাপনাও সম্ভব, এর জন্য আমরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বনানী বা বসুন্ধরা সোসাইটিকে উদাহরন হিসেবে নিতে পারি৷ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা কিছু হলেই আন্দোলন করি কিন্তু এই যে মাস্টারপ্ল্যান করা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলো কিন্তু তা কেনো হচ্ছে না সেটা আমরা খোঁজ নিয়ে দেখি না৷ জাহাঙ্গীরনগরে দেশসেরা পরিকল্পনাবিদরা আছেন তাদেরকে আমরা ক্যাম্পাসের মাস্টারপ্ল্যানের কাজে সুষ্ঠুভাবে সম্পৃক্ত করতে পারছি না কিন্তু তারা দেশে বিদেশে প্ল্যান করেন৷ আমরা চাই নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনায় আমূল পরিবর্তনে অগ্রগন্য ভূমিকা পালন করতে পারবে৷  

বিশ্ববিদ্যালয়ে পথচারীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি মন্তব্য করে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আক্তার মাহমুদ বলেন, জাহাঙ্গীরনগরের মতো ইউনিক ক্যাম্পাসে মাস্টারপ্ল্যান থাকবে না সেটা অগ্রহনযোগ্য৷ এখানে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার যে বাজেট এসেছে সেখানে যে কম্পোনেন্টগুলো আছে সেটার বেশীরভাগই ভবন বা দালানকোঠা কেন্দ্রীক৷ এই ক্যাম্পাসের জন্য একটা পরিপূর্ণ মাস্টার প্ল্যান এখন সময়ের দাবি৷ ক্যাম্পাসে যারা থাকে তারা কি চায় সেটা ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানিংয়ে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি৷ এখানে পায়ে চলা মানুষ বেশী থাকবে তাই সে অনুযায়ী পেডেস্ট্রিয়ান এনভায়রনমেন্টটা নিশ্চিত করা জরুরি৷ এ জন্য পথচারীদের গুরুত্ব দিয়ে ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান করতে হবে৷ সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তার হায়ারার্কি নিশ্চিত করতে হবে৷ সকলের জন্য যে পরিকল্পনা মঙ্গলকর হবে আমাদের সেটাই ধারণ করা উচিৎ৷  

'সমাজে চলতে গেলে বৃহত্তর স্বার্থে যেটা ভালো হয় সেটা করা উচিৎ' মন্তব্য করে সমাপনী বক্তব্যে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান বলেন আমাদের একজন শিক্ষার্থী দু'দিন আগে অটোরিকশা ধাক্কায় নিহত হয়েছেন৷ তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অটোরিকশা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ তবে অটোরিকশা বন্ধ করার পর অন্তত ১০০ টা পায়ে চালিত রিকশা চালু করা উচিৎ ছিল৷ আর এটা চালু না করলে অটোরিকশা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে যাবে৷ আমরা চাইলে কন্ট্রোলড ড্রাইবার দিয়ে, গতি নিয়ন্ত্রিত স্পেশালাইজড ভ্যান বা গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারি ১-২ মাসের মধ্যে৷ এছাড়া ক্যাম্পাসের আর্টারি রোডে একটা মান সম্মত ফুটপাত দরকার৷ 

শিক্ষকদের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যাবহারকে নিরুৎসাহিত করে তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের একটা বড় দায় আছে আমরা চাইলে শিক্ষকরা ব্যক্তিগত গাড়ি কম ব্যবহার করতে পারি৷ আর একান্তই ব্যাবহার দরকার হলে একটা কমিউনিটি পার্কিং রাখা জরুরি৷ আমরা দাবি জানাবো ক্যাম্পাসে যেসকল ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে সেগুলোর গতি ঘন্টায় ২০ কি.মি এর বেশি হবে না৷ এখানে যদি শিক্ষকদের ডোর টু ডোর সার্ভিস বন্ধ করে দিলে হয়তো অনেকেই বলবেন এটা আমাদের সমাজে চলতে গেলে বৃহত্তর স্বার্থে যেটা ভালো হয় সেটা করা উচিৎ৷ 

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি